ঢাকা ০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘মব জাস্টিস’ নিয়ে অবস্থান তুলে ধরলেন নাহিদ, সারজিস ও হাসনাত

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:৩২:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

‘মব জাস্টিস’ বা উশৃঙ্খল জনতার হাতে বিচারের বিপক্ষে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’জনকে হত্যার ঘটনায় বিচার নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, নির্যাতনকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে উত্তেজিত মবকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। তবে শিক্ষার্থীদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। মব জাস্টিস গ্রহণযোগ্য নয় এবং কোনো সমাধানও আনবে না।

তিন সমন্বয়ক বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া আলাদা স্ট্যাটাসে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে তোফাজ্জল হোসেন নামের একজন ব্যক্তিতে মারধর করে হত্যা করা হয়। অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে বুধবার মারধর করা হয়। ওই দিন রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

দু’জনের মৃত্যুর ঘটনায় মব জাস্টিস নিয়ে সমালোচনা চলছে। এরমধ্যে তিন সমন্বয়ক ফেসবুকে তাদের স্বীকৃত পেজে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

নাহিদ ইসলাম

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

অতীতে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনার বিচারের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ এই অভ্যুত্থান ও বিগত বছরগুলোতে যারা ছাত্র-ছাত্রীদের নিপীড়ন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতি দ্রুত মামলা করতে হবে। ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ (তথ্যানুসন্ধান) কমিশন করে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশাসনের উদ্যোগে নির্যাতনকারীদের তালিকা প্রণয়ন করতে হবে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সারজিস আলম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন হোক, চোর হোক অথবা দাগি আসামি হোক, কাউকে এভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলার অধিকার বা সাহস কোনো একজন ব্যক্তি কীভাবে পান? মব জাস্টিসের নামে নরপশুর ন্যায় নির্মমতা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উদাহরণ তৈরি হওয়া প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, কে কোথায় পড়ে, কী করে সেটা মুখ্য নয়। অন্যায় সব সময় অন্যায়। একটা জলজ্যান্ত মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে যাদের বুক একবারের জন্যও কাঁপে না, তাদের মধ্যে মনুষ্যত্ব থাকতে পারে না।

হাসনাত আবদুল্লাহ

সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন, মব জাস্টিস কোনো বিচার নয়। এটি শুধু আরও সহিংসতা ও অন্যায়ের কারণ হয়। আমরা ন্যায়বিচার চাই, সহিংসতা নয়।

আরেক স্ট্যাটাসে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক দুটি ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ‘মবলিঞ্চিং’ কোনো অবস্থাতেই কোনো সমাধান হতে পারে না, তাতে সে যেই হোক না কেন। এটা একটা সুস্পষ্ট অপরাধ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

‘মব জাস্টিস’ নিয়ে অবস্থান তুলে ধরলেন নাহিদ, সারজিস ও হাসনাত

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:৩২:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

‘মব জাস্টিস’ বা উশৃঙ্খল জনতার হাতে বিচারের বিপক্ষে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’জনকে হত্যার ঘটনায় বিচার নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, নির্যাতনকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে উত্তেজিত মবকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। তবে শিক্ষার্থীদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। মব জাস্টিস গ্রহণযোগ্য নয় এবং কোনো সমাধানও আনবে না।

তিন সমন্বয়ক বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া আলাদা স্ট্যাটাসে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে তোফাজ্জল হোসেন নামের একজন ব্যক্তিতে মারধর করে হত্যা করা হয়। অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে বুধবার মারধর করা হয়। ওই দিন রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

দু’জনের মৃত্যুর ঘটনায় মব জাস্টিস নিয়ে সমালোচনা চলছে। এরমধ্যে তিন সমন্বয়ক ফেসবুকে তাদের স্বীকৃত পেজে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

নাহিদ ইসলাম

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

অতীতে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনার বিচারের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ এই অভ্যুত্থান ও বিগত বছরগুলোতে যারা ছাত্র-ছাত্রীদের নিপীড়ন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতি দ্রুত মামলা করতে হবে। ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ (তথ্যানুসন্ধান) কমিশন করে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশাসনের উদ্যোগে নির্যাতনকারীদের তালিকা প্রণয়ন করতে হবে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সারজিস আলম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন হোক, চোর হোক অথবা দাগি আসামি হোক, কাউকে এভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলার অধিকার বা সাহস কোনো একজন ব্যক্তি কীভাবে পান? মব জাস্টিসের নামে নরপশুর ন্যায় নির্মমতা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উদাহরণ তৈরি হওয়া প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, কে কোথায় পড়ে, কী করে সেটা মুখ্য নয়। অন্যায় সব সময় অন্যায়। একটা জলজ্যান্ত মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে যাদের বুক একবারের জন্যও কাঁপে না, তাদের মধ্যে মনুষ্যত্ব থাকতে পারে না।

হাসনাত আবদুল্লাহ

সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন, মব জাস্টিস কোনো বিচার নয়। এটি শুধু আরও সহিংসতা ও অন্যায়ের কারণ হয়। আমরা ন্যায়বিচার চাই, সহিংসতা নয়।

আরেক স্ট্যাটাসে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক দুটি ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ‘মবলিঞ্চিং’ কোনো অবস্থাতেই কোনো সমাধান হতে পারে না, তাতে সে যেই হোক না কেন। এটা একটা সুস্পষ্ট অপরাধ।