৫ কোটি টাকার টেন্ডার হাতছাড়া, বিএনপিনেতার হাতে লাঞ্ছিত হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:৩৭:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪ ৫ বার পড়া হয়েছে
৫ কোটি টাকার টেন্ডার না পাওয়ায় বিএনপি নেতা কর্তৃক শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশীদ।
বৃহস্পতিবার সকালে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শরফুদ্দৌলা ছোটলু। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগাঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের মামা। তিনি ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন।
অপরদিকে, লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন।
অবশ্য, যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলামকে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন- ঘটনা যেভাবে শোনা যাচ্ছে, অতোটা না। একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। বিষয়টি মীমাংসা করে নিয়েছেন।
যশোর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২১ এবং ২৮ অক্টোবর যশোর জেনারেল হাসপাতালে ‘এমএসআর’ পণ্য ক্রয় বিষয়ক (পাঁচ কোটি টাকা) টেন্ডার অনুষ্ঠিত হয়। ওই টেন্ডারে যশোরসহ আশপাশের জেলার বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। যশোর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শরফুদ্দৌলা ছোটলুও টেন্ডার ড্রপ করেছিলেন। কিন্তু সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে টেন্ডার পান প্যারাগন হারমাইন ও জাজ কর্পোরেশন নামে দুটো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে তা ঢাকায় অনুমোদনের জন্য পাঠায় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, টেন্ডার না পাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে শরফুদ্দৌলা ছোটলু আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি ৭/৮জনকে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশীদের রুমে যান। সেখানে গিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে তারা তত্ত্বাবধায়ককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং তার জামার কলার টেনে চেয়ার থেকে উঠিয়ে বাইরে বের করে দেয়ার চেষ্টা করেন।
চিৎকার চেঁচামেচি শুনে হাসপাতালে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী তত্ত্বাবধায়কের রুমে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় শরফুদ্দৌলা ছোটলু ও তার লোকজন তত্ত্বাবধায়ককে হুমকি দিয়ে রুম ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদকে বেশ কয়েকবার ফোনকল করা হয়। কিন্তু তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে, তিনি স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিককে তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে টেন্ডার অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়। এখানে কারচুপির কোনও সুযোগ নেই। তারপরও টেন্ডার না পেয়ে ছোটলু সাহেব ও তার লোকজন আমাকে লাঞ্ছিত করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ককে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপিনেতা শরফুদ্দৌলা ছোটলু ফোনকল রিসিভ করে বলেন, টেন্ডার নিয়ে আমার সাথে কোনও ঝামেলা নেই। আমি তখন ঘটনাস্থলে ছিলাম। হাবিবুল্লাহ নামে যুবদলের এক কর্মীর সাথে তার ঝামেলা হয়েছিল। আমি বরং তাকে ঠেকিয়ে দেয়েছি।