ঢাকা ০৫:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিকলে বেঁধে মাদ্রাসা ছাত্রকে পেটালেন শিক্ষক

প্রেমানন্দ ঘরামী, গৌরনদী (বরিশাল)
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০৮:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রায় ২০ ঘন্টা পায়ের সাথে কোমরে শিকল দিয়ে বেঁধে তরিকুল ইসলাম (১১) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ঘটনাটি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের লক্ষনকাঠি গ্রামের হাজী আব্দুল হাই-কুলসুম হাফেজিয়া মাদ্রাসার। আহত তরিকুল উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের বাহেরঘাট এলাকার মৃত আউয়াল হাওলাদারের ছেলে।

ওই মাদ্রাসার নাজেরা শাখার ছাত্র তরিকুল হাওলাদার জানায়, শনিবার বিকেল তিনটার দিকে ক্লাসে পড়ানোর সময় অন্য এক ছাত্রের সাথে কথা বলার অভিযোগে আমাকে আধা ঘন্টার মত দাড় করিয়ে রাখেন শিক্ষক (ছোট হুজুর) জিহাদুল ইসলাম। এসময় আমার প্রসাবের চাপ শুরু হলে টয়লেটে যাওয়ার কথা বলি। কিন্তু হুজুর আমাকে টয়লেটে যেতে না দিয়ে তার কাছে যেতে বলেন। পেটানোর ভয়ে তার কাছে না যাওয়ায় দুইজন ছাত্রকে দিয়ে ধরে নিয়ে আমাকে পেটানো হয়। এরপর হুজুরে আমাকে কান ধরে দাড়িয়ে থাকতে বলেন। আমি তার কথামত কান ধরে দাড়িয়ে না থাকায় অন্য ছাত্রদের দিয়ে কান টান দেওয়ায় এবং কানধরে ওঠবস করায়। পরে ছাত্রের হাত থেকে ছুটে মাদ্রাসার বাইরে চলে যাই। এসময় আমাকে ধরে এনে শিকল দিয়ে বেঁধে পেটানো হয়। শনিবার বিকেল তিনটায় পায়ের সাথে কোমরে শিকল পরানো হয়। সারারাত শিকলবন্ধী করে রাখার পর নির্যাতন সইতে না পেরে রোববার সকাল এগারটার দিকে শিকল ভেঙ্গে বাড়িতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হই।

ভুক্তভোগি ছাত্রের ভাই মাসুম হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইকে নির্যাতনের বিষয়টি মাদ্রাসার পরিচালক দাদন মিয়া ও বড় হুজুর ইলিয়াস হোসাইনকে বলেছি। তারা কোন বিচার না করায় অভিযুক্ত শিক্ষক সহ তাদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা এঘটনার বিচার চাই।

তবে ছাত্র তরিকুলকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করলেও শিকলবন্ধী করে রাখার কথা স্বীকার করেন অভিযুক্ত শিক্ষক জিহাদুল ইসলাম ও মাদ্রাসার বড় হুজুর ইলিয়াস হোসাইন।

এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসার পরিচালক দাদন মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

গৌরনদী মডেল থানার নবাগত ওসি মোঃ ইউনুস মিয়া এবিষয়ে বলেন, অভিযোগের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

শিকলে বেঁধে মাদ্রাসা ছাত্রকে পেটালেন শিক্ষক

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০৮:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রায় ২০ ঘন্টা পায়ের সাথে কোমরে শিকল দিয়ে বেঁধে তরিকুল ইসলাম (১১) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ঘটনাটি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের লক্ষনকাঠি গ্রামের হাজী আব্দুল হাই-কুলসুম হাফেজিয়া মাদ্রাসার। আহত তরিকুল উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের বাহেরঘাট এলাকার মৃত আউয়াল হাওলাদারের ছেলে।

ওই মাদ্রাসার নাজেরা শাখার ছাত্র তরিকুল হাওলাদার জানায়, শনিবার বিকেল তিনটার দিকে ক্লাসে পড়ানোর সময় অন্য এক ছাত্রের সাথে কথা বলার অভিযোগে আমাকে আধা ঘন্টার মত দাড় করিয়ে রাখেন শিক্ষক (ছোট হুজুর) জিহাদুল ইসলাম। এসময় আমার প্রসাবের চাপ শুরু হলে টয়লেটে যাওয়ার কথা বলি। কিন্তু হুজুর আমাকে টয়লেটে যেতে না দিয়ে তার কাছে যেতে বলেন। পেটানোর ভয়ে তার কাছে না যাওয়ায় দুইজন ছাত্রকে দিয়ে ধরে নিয়ে আমাকে পেটানো হয়। এরপর হুজুরে আমাকে কান ধরে দাড়িয়ে থাকতে বলেন। আমি তার কথামত কান ধরে দাড়িয়ে না থাকায় অন্য ছাত্রদের দিয়ে কান টান দেওয়ায় এবং কানধরে ওঠবস করায়। পরে ছাত্রের হাত থেকে ছুটে মাদ্রাসার বাইরে চলে যাই। এসময় আমাকে ধরে এনে শিকল দিয়ে বেঁধে পেটানো হয়। শনিবার বিকেল তিনটায় পায়ের সাথে কোমরে শিকল পরানো হয়। সারারাত শিকলবন্ধী করে রাখার পর নির্যাতন সইতে না পেরে রোববার সকাল এগারটার দিকে শিকল ভেঙ্গে বাড়িতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হই।

ভুক্তভোগি ছাত্রের ভাই মাসুম হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইকে নির্যাতনের বিষয়টি মাদ্রাসার পরিচালক দাদন মিয়া ও বড় হুজুর ইলিয়াস হোসাইনকে বলেছি। তারা কোন বিচার না করায় অভিযুক্ত শিক্ষক সহ তাদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা এঘটনার বিচার চাই।

তবে ছাত্র তরিকুলকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করলেও শিকলবন্ধী করে রাখার কথা স্বীকার করেন অভিযুক্ত শিক্ষক জিহাদুল ইসলাম ও মাদ্রাসার বড় হুজুর ইলিয়াস হোসাইন।

এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসার পরিচালক দাদন মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

গৌরনদী মডেল থানার নবাগত ওসি মোঃ ইউনুস মিয়া এবিষয়ে বলেন, অভিযোগের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।