ঢাকা ১১:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘কাঁদো বাঙ্গালী কাঁদো’

শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক থেকে
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:২১:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪ ২০৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি


‘কাঁদো বাঙ্গালী কাঁদো’: (আগষ্ট ২০১৮)।। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যেই ইমাম সমাহিত করেছিলেন আশীর দশকের মধ্যভাগে তিনি একবার দৈনিক বাংলার বানীতে এসেছিলেন। সম্পাদক শেখ ফজলুল করিম সেলিম আমাকে ডেকে বলেন তার একটি ইন্টারভিউ নিতে। নিয়েছিলাম, এবং তা বাংলারবানীতে ছাপা হয়েছিলো। সম্ভবত: হেডিং ছিলো, ‘তিনি আমাদেরই লোক’। রাশেদুল হক পাশা’র হাত দিয়ে সেটি হয়তো একটি বিশেষ সংখ্যায় ছাপা হয়। সেই লেখাটি আমি খুঁজছি। আগষ্ট মাস এলেই খুঁজি। কারণ বঙ্গবন্ধু’র মৃতদেহের্ এমন পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা এবং কবর দেয়ার ঘটনার তথ্য এখনো আমার অন্যত্র কোথাও চোখে পড়েনি।

জাতির জনক তখনো অবহেলিত। ওই ইন্টারভিউ গুরুত্বহীনভাবে ছাপা হয়েছে। সেটাও হয়তো সম্ভবঃ ছিলো বাংলারবানী বলে। তখনো বাংলারবানীতে ‘সিঁড়িতে পড়ে থাকা বঙ্গবন্ধু’র লাশের বিখ্যাত ছবিটি ছাপা হয়নি। এই ছবি ছাপার গল্পটি বলি: মানিকভাই মানে নাজিমুদ্দিন মানিক তখন বাংলারবানীর বার্তা সম্পাদক, আমরা শিফট-ইন-চার্জ। নিউজের ব্যাপারে আমাদের যথেষ্ট গুরুত্ব ছিলো। কিন্তু বঙ্গবন্ধু’র ওই ছবির বিষয়ে কোন পাত্তাই ছিলোনা। বিষয়টি ছিলো গোপনীয়। আগে জানাজানি হয়ে গেলো নাও ছাপা হতে পারতো? আমরা কানাঘুঁষা শুনলাম বেশ বড় কোন ঘটনা ঘটবে বা এমন কিছু পত্রিকায় আসবে যা যুগান্তকারী। দুই একদিন এভাবে চললো। সম্ভবত: শফিকুল আজিজ মুকুল এবং বাকশালের ফকির রাজ্জাক বিষয়টি জানতেন। কারণ এরা সকলেই তখন শেখ হাসিনার খুব কাছের মানুষ ছিলেন। ছবিটি শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন তা বুঝতে কারো অসুবিধা হবার কথা নয়? এমনিতে আমরা গভীর রাত পর্যন্ত অফিসে থাকতাম। সেদিন আমাদেরকে রাত ১১টার দিকে মানিকভাই বললো, তোমরা বাড়ী যাও। আগে যেতে পেরে আমরা খুশি হলাম। পরদিন পুরো পাতা জুড়ে সেই বিখ্যাত ছবি ছাপা হয়, হেডিং ছিলো, ‘কাঁদো বাঙ্গালী কাঁদো’। সেদিন বাংলারবানী অনেক বেশিগুন বিক্রী হয়েছিলো।

ঐসময় বঙ্গবন্ধু’র ঐ ছবি ছাপা কিছুটা রিস্ক ছিলো। শেখ সেলিম সেই ঝুঁকি নিয়েছিলেন। এরশাদের আমলে তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। বাংলারবানী বন্ধ হয়েছিলো। সেটি অবশ্য বেশ পরে, কিন্তু ওই ছবি তার গ্রেফতারের একটি অন্যতম কারণ হতে পারে। ‘কাঁদো বাঙ্গালী কাঁদো’ এই উক্তি অত:পর বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তখন আরো একটি উক্তি সামনে এসে যায়, তা হলো: ‘জীবিত মুজিবের চেয়ে মৃত মুজিব অনেক বেশি শক্তিশালী’। আশীর দশকে বাংলারবানী নি:সন্দেহে বঙ্গবন্ধুর পুন্:রুত্থানে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেছে। এখন ‘কাঁদো বাঙ্গালী কাঁদো’ বা ‘জীবিত মুজিবের চেয়ে মৃত মুজিব অনেক বেশি শক্তিশালী’ শ্লোগান সবাই হরহামেশা বলেন, কিন্তু তখন ‘শেখ মুজিব’ নিষিদ্ধ ছিলেন। তার কথা বলার জন্যে কিছুটা সাহসের প্রয়োজন ছিলো। উনিশশ’ একাশী সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন মুজিব অনুসারীদের সেই সাহস যুগিয়েছিলো। শেখ হাসিনার আগমনের দিনটি’র কথা আমার মনে পড়ে। আমরা অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান স্যারের বাড়ি ‘সংশয়’ এর সামনে দাঁড়িয়ে তাঁকে দেখেছিলাম। তখন ঝিরঝির বৃষ্টি হচ্ছিলো। সেই বৃষ্টির মধ্যে রাস্তার দুই পাশে লক্ষ জনতা জানান দেয়, ‘বঙ্গবন্ধু মরে নাই’?

বঙ্গবন্ধু যেদিন ফিরে আসেন সেদিনও আমার সৌভাগ্য হয়েছিলো শাহবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে দূর থেকে খোলা জীপে বঙ্গবন্ধুকে দেখার। না, বঙ্গবন্ধুকে একেবারে সামনে থেকে দেখার সৌভাগ্য কখনোই হয়নি। তবে শেখ কামালকে বহুবার দেখেছি। কারণ আমরা তখন ঢাকা ভার্সিটি’র ছাত্র। শেখ কামালও তাই। টিএসসি-তে তিনি আড্ডা মারতেন। আমরাও আড্ডা মারতাম। তিনি ছাত্রছাত্রীদের সেই জটলায় এসে বসতেন। সবার সাথে বসে চীনাবাদাম খেতেন। তার সাথে আমার কখনো কথা হয়নি। আমি ভাবতাম, ‘প্রেসিডেন্টের পোলা আইসা আমাদের মত সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে বসছে’? তাকে কখনো আর পাঁচটা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীর চাইতে বেশি কিছু মনে হয়নি। আর সুলতানাকে আমরা প্রত্যেকদিন দেখতাম জগন্নাথ হল থেকে কার্জন হলে যাবার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে দৌড়াচ্ছে।

এরই মাঝে এসে পরে ১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫ সাল। দু’দিন আগে খন্দকার মুস্তাক টিফিনকারী করে হাঁসের মাংশ এনে বঙ্গবন্ধুকে খাইয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু’র বাবা মারা যাওয়ার পর মুশতাক যত কেঁদেছিলেন, সম্ভবত: বঙ্গবন্ধুও ততটা কাঁদেননি? অন্ততঃ টিভিতে দেখে আমাদের তখন তাই মনে হয়েছে। এই মোস্তাকই জেলের তালা খুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তাই জাতীয় চার নেতা জেলখানায় খুন হন। মনে রাখা দরকার, কাদের সিদ্দিকীকে আমরা এখন যতই গালি দেইনা কেন, একমাত্র সেদিন তিনিই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বাকি সবাই বঙ্গবন্ধু’র লাশের সাথে আপোষ করেছেন। এও জানিয়ে রাখি, খন্দকার মুশতাকের বাড়িতে কিন্তু একটি ঢিলও পড়েনি? আমি দীর্ঘ কুঁড়ি বছর যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সেক্রেটারী ছিলাম। ৩১শে ডিসেম্বর ২০১৭-তে ইস্তফা দিয়েছি। মাঝে মাঝে ভাবি, আমি কি করেছি বঙ্গবন্ধু’র জন্যে? বঙ্গবন্ধু আমাদের একটি দেশ এবং একটি পাসপোর্ট দিয়েছেন বলেই আমরা আজ বিদেশে বসে তার পক্ষে-বিপক্ষে লম্বা লম্বা ডায়লগ দিতে পারছি। মানুষের সামান্য কৃতজ্ঞতাবোধও তো থাকে? আমার সৌভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধু’র হত্যার পর ঘটনাচক্রে আমিও কলকাতা যাই। লতিফ সিদ্দিকী, খালেদ খুররম বা ইসমাত কাদির গামা, দীপঙ্কর তালুকদার, নরসিংদীর এমপি মোসলেউদ্দিন, বা যশোরের এমপি রওশন আলী, সুনীল গুহ, হরে কৃষ্ণ দেবনাথ বা অন্যদের সান্নিধ্যে আসি। বাঙ্গুরে শেখ সেলিম তো ছিলেনই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

‘কাঁদো বাঙ্গালী কাঁদো’

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:২১:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪


‘কাঁদো বাঙ্গালী কাঁদো’: (আগষ্ট ২০১৮)।। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যেই ইমাম সমাহিত করেছিলেন আশীর দশকের মধ্যভাগে তিনি একবার দৈনিক বাংলার বানীতে এসেছিলেন। সম্পাদক শেখ ফজলুল করিম সেলিম আমাকে ডেকে বলেন তার একটি ইন্টারভিউ নিতে। নিয়েছিলাম, এবং তা বাংলারবানীতে ছাপা হয়েছিলো। সম্ভবত: হেডিং ছিলো, ‘তিনি আমাদেরই লোক’। রাশেদুল হক পাশা’র হাত দিয়ে সেটি হয়তো একটি বিশেষ সংখ্যায় ছাপা হয়। সেই লেখাটি আমি খুঁজছি। আগষ্ট মাস এলেই খুঁজি। কারণ বঙ্গবন্ধু’র মৃতদেহের্ এমন পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা এবং কবর দেয়ার ঘটনার তথ্য এখনো আমার অন্যত্র কোথাও চোখে পড়েনি।

জাতির জনক তখনো অবহেলিত। ওই ইন্টারভিউ গুরুত্বহীনভাবে ছাপা হয়েছে। সেটাও হয়তো সম্ভবঃ ছিলো বাংলারবানী বলে। তখনো বাংলারবানীতে ‘সিঁড়িতে পড়ে থাকা বঙ্গবন্ধু’র লাশের বিখ্যাত ছবিটি ছাপা হয়নি। এই ছবি ছাপার গল্পটি বলি: মানিকভাই মানে নাজিমুদ্দিন মানিক তখন বাংলারবানীর বার্তা সম্পাদক, আমরা শিফট-ইন-চার্জ। নিউজের ব্যাপারে আমাদের যথেষ্ট গুরুত্ব ছিলো। কিন্তু বঙ্গবন্ধু’র ওই ছবির বিষয়ে কোন পাত্তাই ছিলোনা। বিষয়টি ছিলো গোপনীয়। আগে জানাজানি হয়ে গেলো নাও ছাপা হতে পারতো? আমরা কানাঘুঁষা শুনলাম বেশ বড় কোন ঘটনা ঘটবে বা এমন কিছু পত্রিকায় আসবে যা যুগান্তকারী। দুই একদিন এভাবে চললো। সম্ভবত: শফিকুল আজিজ মুকুল এবং বাকশালের ফকির রাজ্জাক বিষয়টি জানতেন। কারণ এরা সকলেই তখন শেখ হাসিনার খুব কাছের মানুষ ছিলেন। ছবিটি শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন তা বুঝতে কারো অসুবিধা হবার কথা নয়? এমনিতে আমরা গভীর রাত পর্যন্ত অফিসে থাকতাম। সেদিন আমাদেরকে রাত ১১টার দিকে মানিকভাই বললো, তোমরা বাড়ী যাও। আগে যেতে পেরে আমরা খুশি হলাম। পরদিন পুরো পাতা জুড়ে সেই বিখ্যাত ছবি ছাপা হয়, হেডিং ছিলো, ‘কাঁদো বাঙ্গালী কাঁদো’। সেদিন বাংলারবানী অনেক বেশিগুন বিক্রী হয়েছিলো।

ঐসময় বঙ্গবন্ধু’র ঐ ছবি ছাপা কিছুটা রিস্ক ছিলো। শেখ সেলিম সেই ঝুঁকি নিয়েছিলেন। এরশাদের আমলে তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। বাংলারবানী বন্ধ হয়েছিলো। সেটি অবশ্য বেশ পরে, কিন্তু ওই ছবি তার গ্রেফতারের একটি অন্যতম কারণ হতে পারে। ‘কাঁদো বাঙ্গালী কাঁদো’ এই উক্তি অত:পর বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তখন আরো একটি উক্তি সামনে এসে যায়, তা হলো: ‘জীবিত মুজিবের চেয়ে মৃত মুজিব অনেক বেশি শক্তিশালী’। আশীর দশকে বাংলারবানী নি:সন্দেহে বঙ্গবন্ধুর পুন্:রুত্থানে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেছে। এখন ‘কাঁদো বাঙ্গালী কাঁদো’ বা ‘জীবিত মুজিবের চেয়ে মৃত মুজিব অনেক বেশি শক্তিশালী’ শ্লোগান সবাই হরহামেশা বলেন, কিন্তু তখন ‘শেখ মুজিব’ নিষিদ্ধ ছিলেন। তার কথা বলার জন্যে কিছুটা সাহসের প্রয়োজন ছিলো। উনিশশ’ একাশী সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন মুজিব অনুসারীদের সেই সাহস যুগিয়েছিলো। শেখ হাসিনার আগমনের দিনটি’র কথা আমার মনে পড়ে। আমরা অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান স্যারের বাড়ি ‘সংশয়’ এর সামনে দাঁড়িয়ে তাঁকে দেখেছিলাম। তখন ঝিরঝির বৃষ্টি হচ্ছিলো। সেই বৃষ্টির মধ্যে রাস্তার দুই পাশে লক্ষ জনতা জানান দেয়, ‘বঙ্গবন্ধু মরে নাই’?

বঙ্গবন্ধু যেদিন ফিরে আসেন সেদিনও আমার সৌভাগ্য হয়েছিলো শাহবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে দূর থেকে খোলা জীপে বঙ্গবন্ধুকে দেখার। না, বঙ্গবন্ধুকে একেবারে সামনে থেকে দেখার সৌভাগ্য কখনোই হয়নি। তবে শেখ কামালকে বহুবার দেখেছি। কারণ আমরা তখন ঢাকা ভার্সিটি’র ছাত্র। শেখ কামালও তাই। টিএসসি-তে তিনি আড্ডা মারতেন। আমরাও আড্ডা মারতাম। তিনি ছাত্রছাত্রীদের সেই জটলায় এসে বসতেন। সবার সাথে বসে চীনাবাদাম খেতেন। তার সাথে আমার কখনো কথা হয়নি। আমি ভাবতাম, ‘প্রেসিডেন্টের পোলা আইসা আমাদের মত সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে বসছে’? তাকে কখনো আর পাঁচটা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীর চাইতে বেশি কিছু মনে হয়নি। আর সুলতানাকে আমরা প্রত্যেকদিন দেখতাম জগন্নাথ হল থেকে কার্জন হলে যাবার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে দৌড়াচ্ছে।

এরই মাঝে এসে পরে ১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫ সাল। দু’দিন আগে খন্দকার মুস্তাক টিফিনকারী করে হাঁসের মাংশ এনে বঙ্গবন্ধুকে খাইয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু’র বাবা মারা যাওয়ার পর মুশতাক যত কেঁদেছিলেন, সম্ভবত: বঙ্গবন্ধুও ততটা কাঁদেননি? অন্ততঃ টিভিতে দেখে আমাদের তখন তাই মনে হয়েছে। এই মোস্তাকই জেলের তালা খুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তাই জাতীয় চার নেতা জেলখানায় খুন হন। মনে রাখা দরকার, কাদের সিদ্দিকীকে আমরা এখন যতই গালি দেইনা কেন, একমাত্র সেদিন তিনিই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বাকি সবাই বঙ্গবন্ধু’র লাশের সাথে আপোষ করেছেন। এও জানিয়ে রাখি, খন্দকার মুশতাকের বাড়িতে কিন্তু একটি ঢিলও পড়েনি? আমি দীর্ঘ কুঁড়ি বছর যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সেক্রেটারী ছিলাম। ৩১শে ডিসেম্বর ২০১৭-তে ইস্তফা দিয়েছি। মাঝে মাঝে ভাবি, আমি কি করেছি বঙ্গবন্ধু’র জন্যে? বঙ্গবন্ধু আমাদের একটি দেশ এবং একটি পাসপোর্ট দিয়েছেন বলেই আমরা আজ বিদেশে বসে তার পক্ষে-বিপক্ষে লম্বা লম্বা ডায়লগ দিতে পারছি। মানুষের সামান্য কৃতজ্ঞতাবোধও তো থাকে? আমার সৌভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধু’র হত্যার পর ঘটনাচক্রে আমিও কলকাতা যাই। লতিফ সিদ্দিকী, খালেদ খুররম বা ইসমাত কাদির গামা, দীপঙ্কর তালুকদার, নরসিংদীর এমপি মোসলেউদ্দিন, বা যশোরের এমপি রওশন আলী, সুনীল গুহ, হরে কৃষ্ণ দেবনাথ বা অন্যদের সান্নিধ্যে আসি। বাঙ্গুরে শেখ সেলিম তো ছিলেনই।