ঢাকা ১২:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছানি অপারেশনে গাফিলতি, বিপদ ঢেকে আনছেন!

বাংলা টাইমস ডেস্ক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৭৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাধারণত যে অপারেশনের নাম শুনলে মানুষ সবচেয়ে কম ভয় পান। তা হল চোখের ছানি অপারেশন । ভয় নেই ভেবে অপারেশনে গাফিলতিও করেন অনেকে । তাতেই বিপত্তি। সমস্যাটা জটিল হয় তখন, যখন অপারেশন না করা হয়।

আমাদের চোখে ক্যামেরার ফিল্ম বা সেন্সরের অনুরূপ রেটিনা নামক একটি নিউরোনাল স্তর রয়েছে । এর সামনে রয়েছে লেন্স( ক্যামেরার লেন্সের মতো) যা আলোক রশ্মিকে রেটিনার উপর ফোকাস করতে কাজ করে । সাধারণত এই লেন্স স্বচ্ছ হয় । কিছু পরিস্থিতিতে লেন্সের স্বচ্ছতা হারিয়ে যায়( সাধারণত বয়সের কারণে)। এর ফলে রেটিনায় রশ্মির হ্রাস পেতে থাকে। এই অবস্থাটি ছানি হিসাবে পরিচিত ।

ছানি সহজেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সংশোধন করা যেতে পারে। চিকিৎসক অস্বচ্ছ লেন্স বের করে একটি পরিষ্কার কৃত্রিম লেন্স দিয়ে প্রতিস্থাপন করে দেন। অতীতে অস্ত্রোপচারের কৌশল জটিল ছিল। তখন তেমন সফলও হতো না অপারেশন।বর্তমানে নতুন ফেকো মেশিনের আবির্ভাবের সাথে সাথে অস্ত্রোপচারের সময়ও এগিয়ে আনা হয়েছে । অনেক মানুষ তাদের চোখে অস্ত্রোপচার করতে দেরি করেন।

পরিপক্ব ছানি থেকে রোগীর দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা শুরু হয় । কাজ করতে নানা অসুবিধার সঙ্গে আরও জটিলতাও প্রকাশ পায় । ছানির পরিপক্বতা লেন্সের ব্যাগ বা ক্যাপসুলকে খুব পাতলা করে তোলে, অস্ত্রোপচারের প্রক্রিয়াটিকে অহেতুক জটিল করে । কিছু ক্ষেত্রে, আদর্শ ব্যাগে লেন্স স্থাপন করাও অসম্ভব হতে পারে । এর ফলে অস্ত্রোপচার পরবর্তী রোগীদের মোটা চশমা পরতে হয়।

একটি পরিপক্ব ছানির জন্য অস্ত্রোপচারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হয়, কারণ আরও ম্যানিপুলেশন বা ফেকো- শক্তি প্রয়োজন হয় । এতে কর্নিয়ার ক্ষতি হতে পারে, বা ছানি রেটিনার ওপর পড়তে পারে । এই সমস্তগুলো পরবর্তীতে দৃষ্টি ফিরে পেতে অসুবিধা সৃষ্টি করে। এজন্য একাধিক অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে ।

কখনো কখনো পরিপক্ব লেন্সটি এতো ফুলে যায় যে এটি ফেটে যায় । এর ফলে চোখের চাপ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং তীব্র ব্যথা হয় । এমনকী, এটি অন্ধত্বের কারণও হতে পারে ।

পরিপক্ব ছানি আমাদের পিছনে লুকিয়ে থাকা রেটিনার অবস্থা জানতে বাধা দেয় । অনেক রোগীর অতিরিক্ত রেটিনাল প্যাথলজি থাকতে পারে যা ছানির কারণে দীর্ঘকাল ধরে শনাক্ত করা যায় না ।

এসব তথ্য মাথায় রেখে, ছানি অস্ত্রোপচারের সাম্প্রতিক নির্দেশিকালো এমনভাবে সংশোধন করা হয়েছে যাতে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ছানি অপারেশন করা হয় । বর্তমানে নতুন আধুনিক আর্টিফিকাল লেন্স রয়েছে যা রোগীর নিজস্ব লেন্স দ্বারা প্রদত্ত দৃষ্টি অনুকরণ করে । সুতরাং দেখতে অসুবিধা হলে, প্রাথমিক লক্ষণেই ছানি অস্ত্রোপচার করা অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত । মনে রাখবেন, চোখই হল মনের আয়না ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ছানি অপারেশনে গাফিলতি, বিপদ ঢেকে আনছেন!

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪

সাধারণত যে অপারেশনের নাম শুনলে মানুষ সবচেয়ে কম ভয় পান। তা হল চোখের ছানি অপারেশন । ভয় নেই ভেবে অপারেশনে গাফিলতিও করেন অনেকে । তাতেই বিপত্তি। সমস্যাটা জটিল হয় তখন, যখন অপারেশন না করা হয়।

আমাদের চোখে ক্যামেরার ফিল্ম বা সেন্সরের অনুরূপ রেটিনা নামক একটি নিউরোনাল স্তর রয়েছে । এর সামনে রয়েছে লেন্স( ক্যামেরার লেন্সের মতো) যা আলোক রশ্মিকে রেটিনার উপর ফোকাস করতে কাজ করে । সাধারণত এই লেন্স স্বচ্ছ হয় । কিছু পরিস্থিতিতে লেন্সের স্বচ্ছতা হারিয়ে যায়( সাধারণত বয়সের কারণে)। এর ফলে রেটিনায় রশ্মির হ্রাস পেতে থাকে। এই অবস্থাটি ছানি হিসাবে পরিচিত ।

ছানি সহজেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সংশোধন করা যেতে পারে। চিকিৎসক অস্বচ্ছ লেন্স বের করে একটি পরিষ্কার কৃত্রিম লেন্স দিয়ে প্রতিস্থাপন করে দেন। অতীতে অস্ত্রোপচারের কৌশল জটিল ছিল। তখন তেমন সফলও হতো না অপারেশন।বর্তমানে নতুন ফেকো মেশিনের আবির্ভাবের সাথে সাথে অস্ত্রোপচারের সময়ও এগিয়ে আনা হয়েছে । অনেক মানুষ তাদের চোখে অস্ত্রোপচার করতে দেরি করেন।

পরিপক্ব ছানি থেকে রোগীর দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা শুরু হয় । কাজ করতে নানা অসুবিধার সঙ্গে আরও জটিলতাও প্রকাশ পায় । ছানির পরিপক্বতা লেন্সের ব্যাগ বা ক্যাপসুলকে খুব পাতলা করে তোলে, অস্ত্রোপচারের প্রক্রিয়াটিকে অহেতুক জটিল করে । কিছু ক্ষেত্রে, আদর্শ ব্যাগে লেন্স স্থাপন করাও অসম্ভব হতে পারে । এর ফলে অস্ত্রোপচার পরবর্তী রোগীদের মোটা চশমা পরতে হয়।

একটি পরিপক্ব ছানির জন্য অস্ত্রোপচারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হয়, কারণ আরও ম্যানিপুলেশন বা ফেকো- শক্তি প্রয়োজন হয় । এতে কর্নিয়ার ক্ষতি হতে পারে, বা ছানি রেটিনার ওপর পড়তে পারে । এই সমস্তগুলো পরবর্তীতে দৃষ্টি ফিরে পেতে অসুবিধা সৃষ্টি করে। এজন্য একাধিক অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে ।

কখনো কখনো পরিপক্ব লেন্সটি এতো ফুলে যায় যে এটি ফেটে যায় । এর ফলে চোখের চাপ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং তীব্র ব্যথা হয় । এমনকী, এটি অন্ধত্বের কারণও হতে পারে ।

পরিপক্ব ছানি আমাদের পিছনে লুকিয়ে থাকা রেটিনার অবস্থা জানতে বাধা দেয় । অনেক রোগীর অতিরিক্ত রেটিনাল প্যাথলজি থাকতে পারে যা ছানির কারণে দীর্ঘকাল ধরে শনাক্ত করা যায় না ।

এসব তথ্য মাথায় রেখে, ছানি অস্ত্রোপচারের সাম্প্রতিক নির্দেশিকালো এমনভাবে সংশোধন করা হয়েছে যাতে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ছানি অপারেশন করা হয় । বর্তমানে নতুন আধুনিক আর্টিফিকাল লেন্স রয়েছে যা রোগীর নিজস্ব লেন্স দ্বারা প্রদত্ত দৃষ্টি অনুকরণ করে । সুতরাং দেখতে অসুবিধা হলে, প্রাথমিক লক্ষণেই ছানি অস্ত্রোপচার করা অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত । মনে রাখবেন, চোখই হল মনের আয়না ।