আওয়ামী ফ্যাসিস্টমুক্ত দেড়শ’ দিনে বাংলাদেশ
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৪৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫ ৮১ বার পড়া হয়েছে
মহাকালের আবর্তে বিলীন ইংরেজি ২০২৪ সাল। শুরু হয়েছে ইংরেজি নববর্ষ ২০২৫। আর সেইসঙ্গে
১৫০তম দিনে পড়লো ফ্যাসিস্ট শাসকমুক্ত প্রিয় বাংলাদেশ । ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার মসনদ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয় শেখ হাসিনা। সেই হিসেবে হাসিনা সরকারের পতনের ১৫০তম দিন ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত অংশ গ্রহণমূলক নির্বাচনে (সাধারণ নির্বাচন) আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের মাধ্যমে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয় বার সরকার গঠন করে। তবে, ওই সরকারের ৫ বছরের মেয়াদে নির্বাচিত ফ্যাসিজমের বীজ রোপিত হলেও অঙ্কুরিত হয়নি।
পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের মধ্যদিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (সম্প্রতি পতিত স্বৈরাচার) নেতৃত্বে টানা দ্বিতীয় বারের মতো আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ফ্যাসিজমের রোপিত বীজ অঙ্কুরিত হয়। এ অঙ্কুর ধীরে-ধীরে বড় হতে থাকে এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাতের ভোটে নির্বাচিত তথাকথিত গণতান্ত্রিক সরকারের ৫ বছরের মেয়াদে ডালপালা গজিয়ে এ দেশে ফ্যাসিজম পাকাপোক্ত হয়ে ওঠে।
ওই সরকারের পুরোমেয়াদেই আইনের শাসনের পরিবর্তে দেশে কায়েম হয় আওয়ামী লীগের দলীয় শাসন। পরে, ২০২৪ সালের ৭ জানুযারি ডামি নির্বাচনের মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করলে, সবকিছুতেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনার চিরস্থায়ী ক্ষমতার লোভ, দেশের মানুষ বিশেষ করে ছাত্রসমাজ ভালোভাবে নিতে পারেনি। বিশ্বের ক্ষমতাধর এবং একইসঙ্গে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বিশ্বাসী দেশগুলোও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ছাড়া সরকার গঠন করায় আওয়ামী লীগের প্রতি বিরূপ হয়ে ওঠে। এর ফলে শেখ হাসিনার মসনদ আস্তে-আস্তে কাঁপতে থাকে।
২০২৪ সালের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী (পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী) আন্দোলনে শেখ হাসিনার গদি বন-বন করে ঘুরতে থাকে। ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের (গণঅভুত্থান) মধ্যদিয়ে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার গদি উল্টে পড়লে, তিনি নিকটাত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যূত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার প্রেক্ষাপটে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, জনগণের মত প্রকাশের সুযোগ রাখলে যত খারাপ শাসকই হোক না কেনো, অন্তত তাদের দেশ ছেড়ে পালাতে হয় না। সিরিয়ার বাশার আল আসাদ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ইউন সুক ইয়োল সাম্প্রতিককালে ক্ষমতা ছেড়েছেন। সিরিয়ার বাশার আল আসাদকে পালাতে হয়েছে অনির্বাচিত বলে। আর জনগণের ভোটে নির্বাচিত বলে ইউন সুক ইয়োল ইমপিচমেন্ট থেকে বেঁচেছেন।
শেখ হাসিনার টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনামলে তথাকথিত নির্বাচিত গণতন্ত্রের নামে কার্যকর ছিল একনায়কতন্ত্র।