ঢাকা ১১:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উচ্চস্বরে বক্স বাজিয়ে মহিলাদের সাথে নাচলেন শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল

ত্রিপুরারী দেবনাথ তিপু, হবিগঞ্জ
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:১৭:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ২৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হবিগঞ্জের মাধবপুরে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল নাজিম সম্প্রতি বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নির্বাচিতও হয়েছেন। কিন্তু তার কর্মকাণ্ড দেখে জনমনে প্রশ্ন, তাকে কিভাবে বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা নির্বাচিত করা হয়েছে?

সম্প্রতি তার নির্দেশে উপজেলার সুবিদপুর, কমলা নগর এবং অন্যান্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশের নামে সাউন্ড বক্স ভাড়া করে এলাকার মহিলাদের নিয়ে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে তিনি মহিলাদের সাথে নাচানাচি করে। নাচানাচির এ ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায় ১৫-২০ জন মহিলাকে সাথে নিয়ে এলোমেলো সিলেটী দামাইল নাচগান নিয়ে নাচানাচি করছেন তিনি। সাথে যোগ দিয়েছে এ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: মতিন মিয়া।

এলাকার সচেতন মহল বলছে শিক্ষা কর্মকর্তা তার প্রভাব খাটিয়ে আমাদের ঘরের মহিলাদের বিদ্যালয়ে এনে নাচানাচির অনুষ্ঠান করে সমাজে আমাদের অসম্মানিত করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।

গ্রামের বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তি বলেন মুসলিম ধর্মের বিধান অনুযায়ী গান বাজনা ও নাচানাচি সম্পূর্ণ হারাম। তিনি আমাদের ঘরের মহিলাদেরকে বিদ্যালয় এনে এসব নাচ বাজনা করতে বাধ্য করেছে। আমরা তার বিচার চাই।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বলেন, সরকারের একজন কর্মকর্তা হয়ে এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি। এ কারণে শিশুদের মনের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। মহিলাদের উপর তাদের স্বামী ও শশুর শাশুড়িরা খারাপ মনোভাব পোষণ করবে। এটা গ্রামাঞ্চল। এখানে সামান্য কিছুতেই মহিলাদের উপর স্বামীর নির্যাতন বেড়ে যায়। আর এই কর্মকান্ডের কারণে এলাকায় পারিবারিক শৃঙ্খলা নষ্ট হবে।

যদিও শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক ২য় সাময়িক পরিক্ষা শেষ হয়ে সামনে বার্ষিক মূল্যায়নের জন্য প্রায় ৩১ দিনের মত পাঠদান কার্য দিবস রয়েছে মাত্র। গত পূজার ছুটির আগেও দেশের পরিস্থিতি কারণে সরকারীভাবে স্কুল বন্ধ গেছে বেশ দিন। পাঠদানের সময় ব্যহত হচ্ছে। কোনো শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক পরিপত্র নির্দেশনা ছাড়াই তিনি সহকারী শিক্ষা অফিসার হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন স্কুলে এমন ধরনের নাচগানের অনুষ্ঠানের সময়সূচি দিচ্ছে উপজেলার ধর্মঘর, চৌমুহনী, মনতলা ক্লাস্টার এলাকার বিভিন্ন স্কুলে। এমন চলছে ১০ থেকে ১৫ দিন যাবৎ যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যঘাত ঘটছে, সেই সাথে স্কুলে পাঠদান কার্যক্রমে ফাঁকি দিয়ে সহকারী শিক্ষক মো: মতিন মিয়াও বিভিন্ন স্কুলের অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছে। শিক্ষা প্রশাসনের নিকট সচেতন মহলের দাবী শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল নাজিমের এ অনৈতিক কর্মকাণ্ড দ্রুত বন্ধ করা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল নাজিমের কাছে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার এসএম জাকিরুল হাসানের সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য দেয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

উচ্চস্বরে বক্স বাজিয়ে মহিলাদের সাথে নাচলেন শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:১৭:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪

হবিগঞ্জের মাধবপুরে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল নাজিম সম্প্রতি বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নির্বাচিতও হয়েছেন। কিন্তু তার কর্মকাণ্ড দেখে জনমনে প্রশ্ন, তাকে কিভাবে বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা নির্বাচিত করা হয়েছে?

সম্প্রতি তার নির্দেশে উপজেলার সুবিদপুর, কমলা নগর এবং অন্যান্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশের নামে সাউন্ড বক্স ভাড়া করে এলাকার মহিলাদের নিয়ে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে তিনি মহিলাদের সাথে নাচানাচি করে। নাচানাচির এ ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায় ১৫-২০ জন মহিলাকে সাথে নিয়ে এলোমেলো সিলেটী দামাইল নাচগান নিয়ে নাচানাচি করছেন তিনি। সাথে যোগ দিয়েছে এ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: মতিন মিয়া।

এলাকার সচেতন মহল বলছে শিক্ষা কর্মকর্তা তার প্রভাব খাটিয়ে আমাদের ঘরের মহিলাদের বিদ্যালয়ে এনে নাচানাচির অনুষ্ঠান করে সমাজে আমাদের অসম্মানিত করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।

গ্রামের বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তি বলেন মুসলিম ধর্মের বিধান অনুযায়ী গান বাজনা ও নাচানাচি সম্পূর্ণ হারাম। তিনি আমাদের ঘরের মহিলাদেরকে বিদ্যালয় এনে এসব নাচ বাজনা করতে বাধ্য করেছে। আমরা তার বিচার চাই।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বলেন, সরকারের একজন কর্মকর্তা হয়ে এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি। এ কারণে শিশুদের মনের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। মহিলাদের উপর তাদের স্বামী ও শশুর শাশুড়িরা খারাপ মনোভাব পোষণ করবে। এটা গ্রামাঞ্চল। এখানে সামান্য কিছুতেই মহিলাদের উপর স্বামীর নির্যাতন বেড়ে যায়। আর এই কর্মকান্ডের কারণে এলাকায় পারিবারিক শৃঙ্খলা নষ্ট হবে।

যদিও শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক ২য় সাময়িক পরিক্ষা শেষ হয়ে সামনে বার্ষিক মূল্যায়নের জন্য প্রায় ৩১ দিনের মত পাঠদান কার্য দিবস রয়েছে মাত্র। গত পূজার ছুটির আগেও দেশের পরিস্থিতি কারণে সরকারীভাবে স্কুল বন্ধ গেছে বেশ দিন। পাঠদানের সময় ব্যহত হচ্ছে। কোনো শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক পরিপত্র নির্দেশনা ছাড়াই তিনি সহকারী শিক্ষা অফিসার হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন স্কুলে এমন ধরনের নাচগানের অনুষ্ঠানের সময়সূচি দিচ্ছে উপজেলার ধর্মঘর, চৌমুহনী, মনতলা ক্লাস্টার এলাকার বিভিন্ন স্কুলে। এমন চলছে ১০ থেকে ১৫ দিন যাবৎ যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যঘাত ঘটছে, সেই সাথে স্কুলে পাঠদান কার্যক্রমে ফাঁকি দিয়ে সহকারী শিক্ষক মো: মতিন মিয়াও বিভিন্ন স্কুলের অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছে। শিক্ষা প্রশাসনের নিকট সচেতন মহলের দাবী শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল নাজিমের এ অনৈতিক কর্মকাণ্ড দ্রুত বন্ধ করা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল নাজিমের কাছে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার এসএম জাকিরুল হাসানের সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য দেয়নি।