হত্যার নেপথ্যে ২০০ কোটি টাকার বখরা, ৫০০০ টাকায় এমপির দেহ ৮০ টুকরা!
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০৫:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪ ১৪৩ বার পড়া হয়েছে
সময়ের সাথে সাথে এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ভয়ংকর তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে যেভাবে হত্যার শিকার হলেন, তার নৃশংসতায় শিউরে উঠছে সবাই। এ যেন হলিউড-বলিউডের থ্রিলার সিনেমাকেও হার মানায়। হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার কসাই জিহাদকে জেরা করে যেসব বিস্ফোরক তথ্য জানতে পারছেন তদন্তকারীরা, তাতে তদন্ত কর্মকর্তাদেরও মাথা ঘুরে যাচ্ছে। পুলিশের দাবি, জেরায় সে জানিয়েছে, আনোয়ারুলের দেহ ৮০ টুকরো করে নিউটাউন, ভাঙড় এলাকাসহ জলাশয়ে লোপাট করা হয়। তার বিনিময়ে ৫০ হাজার টাকা পায় জাহিদ। তার এই স্বীকারোক্তির পর তদন্তকারীদের মত, সেসব খণ্ডাংশ উদ্ধার করা আরও কঠিন হয়ে গেলো। এরমধ্যে তা কোনো জলচর প্রাণীর পেটে চলে গিয়ে থাকতে পারে ধারনা করা হচ্ছে।
চলতি মাসের ১২ মে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে যান ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম। এরপর ১৩ তারিখ রাতে তিনি কলকাতার নিউটাউনের ফ্ল্যাটে খুন হন। দিন দুই নিখোঁজ থাকার পর তার হত্যা সম্পর্কে নিশ্চিত হয় পুলিশ। এ ঘটনার তদন্তভার যায় সিআইডির হাতে। হত্যায় জড়িত সন্দেহে বাংলাদেশে তিনজনকে গ্রেপ্তার হয়েছে। অন্যদিকে, কলকাতার বনগাঁ থেকে গ্রেপ্তার হয় জিহাদ ও সিয়াম নামে দুই জনকে। এরমধ্যে জিহাদ কসাই। বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা হলেও খাকতো মুম্বাইয়ে।
জিহাদকে জেরায় জানা যায়, এমপিকে হত্যার জন্য তাদের সুপারি দেয়া হয়েছিলো। তাই মুম্বাই থেকে কলকাতায় এসে কাজ শেষের পর বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ পালানোর ছক ছিলো। তার মাঝেই ধরা পড়লো। হত্যার পর এমপির দেহ টুকরা করে ভাঙড়ে এলাকার জলাশয়ে ফেলা হয়। তার কথামতো বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাত থেকে লাগাতার জলাশয় তল্লাশি চালিয়েও একটি অংশও এখনো উদ্ধার হয়নি।
শুক্রবার (২৪ মে) গ্রেপ্তারকৃতদের জেরা করে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এলেঅ পুলিশের কাছে। জানা গেছে, ৫০ হাজার টাক দেয়া হয়েছিলো জিহাদকে। হত্যার পর আনোয়ারুলের দেহ ৮০ টুকরো করা হয়। মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। হাড়, মাংস আলাদা করে হলুদ মাখিয়ে একেকটি টুকরো একেক জায়গার জলাশয়ে ফেলা হয়। যদিও কোথায় কী ফেলা হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো মুখে কুলুপ গ্রেপ্তারকৃতদের। তবে পুলিশের ধারণা, দেহাংশ খুঁজে পাওয়া কঠিন।
তদন্তে আরও জানা যায়, ২০০ কোটি টাকার বখরা নিয়ে এমপি আনোয়ারুলের সাথে হত্যাকাণ্ডে মাস্টারমাইন্ড শাহিনের মূল ঝামেলা। আগেও একাধিকবার এমপিকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলো শাহিন। প্রথমে ঢাকার গুলশানে এবং পরে কলকাতার নিউমার্কেটে বসে হত্যার পরিকল্পনা তৈরি হয়। এক্ষেত্রে শাহিনের তুরুপের তাস ছিলো বান্ধবী শিলাস্তি। শেষমেশ কলকাতায় আসা এমপি আনোয়ারুলকে শিলাস্তির ‘হানিট্র্যাপে’ ফেলে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে এনে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাপ্রবাহ দেখে এমনটাই ধারণা করছেন তদন্তকারীরা।