ঢাকা ০৮:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মায়ের জন্মদিনে জন্ম, মৃত্যুও হলো একই দিনে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৩:১৯:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪ ১৯৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাবা-মায়ের সঙ্গে খাগড়াছড়ি ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিলআ ফাইরুজার। বৃহস্পতিবার রাতে বাসের টিকেটও কেটে রেখেছিলেন বাবা শাহজালাল উদ্দিন (৩৪)। বাবা ও মা মেহেরুন্নেছা জাহান হেলালীর (২৪) সঙ্গে সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হয়েছিল সাড়ে ৩ বছরের শিশু ফায়রুজ কাশেম জামিরা। কিন্তু খাগড়াছড়ি ঘুরে দেখা হলো না ফাইরুজের।

বেইলি রোডের আগুন কেড়ে নিলো পুরো পরিবারের প্রাণ। নিহত শাহজালালের পরিবারের কেউই জানতেন না এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন তাদের পরিবারের তিন সদস্য। প্রতি শুক্রবার শাহজালার বাড়িতে ফোন করে সবার খোঁজখবর নিতেন। কিন্তু এই শুক্রবার ফোন না পেয়ে পারিবারের সকলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

শাহজালালকে ফোনে না পেয়ে তার শ্বশুর মুক্তার আলম হেলালী চলে আসেন ঢাকা মেডিকেলে। খুঁজতে থাকেন তার মেয়ে, জামাই ও নাতনিকে। অবশেষ রাত সাড়ে ৯ টায় খোঁজ মেলে তাদের। ততক্ষণে ঢাকা মেডিকেলের মর্গের হিমাগারে চিরনিদ্রায় ফাইরুজরা।

শনিবার (২ মার্চ) সকাল ১০ টার দিকে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। মরদেহ নিতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসেন শাহজালালের ভাইয়েরা।

ফাইরুজের মা মেহেরুনের জন্মদিন ১৪ সেপ্টেম্বর। একই দিনে ফাইরুজ জন্ম নেয়। গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর মা-মেয়ের জন্মদিন উদ্‌যাপন করা হয়। কেউ জানত না তাদের মৃত্যুর দিনটিও এক হবে। কক্সবাজারের উখিয়া থানার পূর্ব গোয়ালিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবুল কাশেমের ছেলে শাহজালাল। তিনি সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা। কেরানীগঞ্জের পানগাঁও কার্যালয়ে শুল্ক বিভাগে তিনি কর্মরত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে বেইলি রোডের গ্রীন কোজি কটেজের নিচের অংশে আগুন লাগে। খবর পেয়ে পর্যায়ক্রমে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৪৬। আর জীবিত উদ্ধার করা হয় ৭৫ জনকে।

সাততলা ওই ভবনে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট, খানাস, ফুকো, অ্যাম্ব্রোশিয়াসহ একাধিক রেস্টুরেন্ট ও দোতলায় কাপড়ের দোকান ‘ক্লজেট ক্লাউড’ ও ‘ইলিয়েন’ ছিলো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

মায়ের জন্মদিনে জন্ম, মৃত্যুও হলো একই দিনে

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৩:১৯:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪

বাবা-মায়ের সঙ্গে খাগড়াছড়ি ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিলআ ফাইরুজার। বৃহস্পতিবার রাতে বাসের টিকেটও কেটে রেখেছিলেন বাবা শাহজালাল উদ্দিন (৩৪)। বাবা ও মা মেহেরুন্নেছা জাহান হেলালীর (২৪) সঙ্গে সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হয়েছিল সাড়ে ৩ বছরের শিশু ফায়রুজ কাশেম জামিরা। কিন্তু খাগড়াছড়ি ঘুরে দেখা হলো না ফাইরুজের।

বেইলি রোডের আগুন কেড়ে নিলো পুরো পরিবারের প্রাণ। নিহত শাহজালালের পরিবারের কেউই জানতেন না এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন তাদের পরিবারের তিন সদস্য। প্রতি শুক্রবার শাহজালার বাড়িতে ফোন করে সবার খোঁজখবর নিতেন। কিন্তু এই শুক্রবার ফোন না পেয়ে পারিবারের সকলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

শাহজালালকে ফোনে না পেয়ে তার শ্বশুর মুক্তার আলম হেলালী চলে আসেন ঢাকা মেডিকেলে। খুঁজতে থাকেন তার মেয়ে, জামাই ও নাতনিকে। অবশেষ রাত সাড়ে ৯ টায় খোঁজ মেলে তাদের। ততক্ষণে ঢাকা মেডিকেলের মর্গের হিমাগারে চিরনিদ্রায় ফাইরুজরা।

শনিবার (২ মার্চ) সকাল ১০ টার দিকে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। মরদেহ নিতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসেন শাহজালালের ভাইয়েরা।

ফাইরুজের মা মেহেরুনের জন্মদিন ১৪ সেপ্টেম্বর। একই দিনে ফাইরুজ জন্ম নেয়। গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর মা-মেয়ের জন্মদিন উদ্‌যাপন করা হয়। কেউ জানত না তাদের মৃত্যুর দিনটিও এক হবে। কক্সবাজারের উখিয়া থানার পূর্ব গোয়ালিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবুল কাশেমের ছেলে শাহজালাল। তিনি সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা। কেরানীগঞ্জের পানগাঁও কার্যালয়ে শুল্ক বিভাগে তিনি কর্মরত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে বেইলি রোডের গ্রীন কোজি কটেজের নিচের অংশে আগুন লাগে। খবর পেয়ে পর্যায়ক্রমে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৪৬। আর জীবিত উদ্ধার করা হয় ৭৫ জনকে।

সাততলা ওই ভবনে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট, খানাস, ফুকো, অ্যাম্ব্রোশিয়াসহ একাধিক রেস্টুরেন্ট ও দোতলায় কাপড়ের দোকান ‘ক্লজেট ক্লাউড’ ও ‘ইলিয়েন’ ছিলো।