ঢাকা ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভূমি কর্মকর্তাদের সহায়তায় সরকারী জমিতে অবৈধ ভবন নির্মাণ

মাহবুব বিশ্বাস, বরগুনা
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৫১:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪ ২৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বরগুনার আমতলী উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আহসানুল হক রুবেল ও কুকুয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবু জাফরের সহায়তায় সরকারী জমিতে অবৈধভাবে জুয়েল গাজী ও শাকুর গাজী পাকা ভবন নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এমন অভিযোগ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দুই কর্মকর্তা ভবন নির্মাণে সহায়তা করছেন। ঘটনাটি ঘটেছে আমতলী উপজেলার গাজীপুর বন্দরে।

আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক হাসান বলেন, সরকারী খাস জমিতে পাকা ভবন নির্মাণের কোন সুযোগই নেই। ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে ওই স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়া হবে।

জানা গেছে, আমতলী উপজেলার গাজীপুর বন্দরের সরকারী ৮ একর ৩৭ শতাংশ সরকারী খাস জমি রয়েছে। ওই জমির মধ্যে ৮ শতাংশ জমি জুয়েল গাজী ও শাকুর গাজী দুই ভাই দখল করে নেন। গত সোমবার থেকে ওই জমিতে পাকা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন তারা। স্থানীয়রা এ সরকারী জমি দখল ও পাকা ভবন নির্মাণের বিষয়টি উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আহসানুল হক রুবেল ও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবু জাফরকে জানালে তারা তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নির্মাণ কাজের অনুমতি দেন। তাদের অনুমতি পেয়ে অবৈধ দখলদাররা পাকা ভবন নির্মাণ করছেন।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার আহসানুল হক রুবেল ও ভূমি কর্মকর্তা আবু জাফর মোটা অংকের টাকা নিয়ে কাজের অনুমতি দিয়েছেন।

তারা আরও অভিযোগ করেন, এ বিষয়টি আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক হাসানকে জানালেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে অনায়াসে তারা পাকা ভবন নির্মাণ করতে সাহস পাচ্ছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, তিন দিকে বেড়া দিয়ে ভিতরে পাকা ভবনের কাজ চলছে। পাঁচজন শ্রমিক কাজ করছেন। পাশে জুয়েল গাজী ও শাকুর গাজী দাড়িয়ে কাজ দেখভাল করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, সরকারী জমিতে জুয়েল গাজী ও শাকুর গাজী অবৈধভাবে পাকা ভবন নির্মাণ করছেন। এ বিষয়টি উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তাকে জানালে ওই অফিসের সার্ভেয়ার আহসানুল হক রুবেল ও ইউনিয়ন সহকারী কর্মকর্তা আবু জাফর এসে জুয়েল গাজীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ব্যবস্থা নেয়নি। সরকারী জমি সরকারী কর্মকর্তারা রক্ষা না করে তাহলে করবে কে?

পাকা ভবন নির্মাণকারী জুয়েল গাজী ও শাকুর গাজী বলেন, দখলীয় জমিতে পাকা ভবন নির্মাণ করতেছি। এ পাকা ভবন নির্মাণের বিষয়টি উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা জানেন।

কুকুয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহসিলদার) মো. আবু জাফর টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, পাকা ভবনের কাজ করতে জুয়েল গাজীকে নিষেধ করা হয়েছে।

আমতলী উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আহসানুল হক রুবেল বলেন, সরকারী জমিতে পাকা ভবন নির্মাণ করতেই পারবে না। তবে টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জবাব না দিয়ে এগিয়ে যান।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি আরও বলেন, সরকারী জমি উদ্ধার না করে কেউ যদি টাকা নিয়ে পাকা ভবন নির্মাণ করতে সহায়তা করে থাকেন, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ভূমি কর্মকর্তাদের সহায়তায় সরকারী জমিতে অবৈধ ভবন নির্মাণ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৫১:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪

বরগুনার আমতলী উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আহসানুল হক রুবেল ও কুকুয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবু জাফরের সহায়তায় সরকারী জমিতে অবৈধভাবে জুয়েল গাজী ও শাকুর গাজী পাকা ভবন নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এমন অভিযোগ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দুই কর্মকর্তা ভবন নির্মাণে সহায়তা করছেন। ঘটনাটি ঘটেছে আমতলী উপজেলার গাজীপুর বন্দরে।

আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক হাসান বলেন, সরকারী খাস জমিতে পাকা ভবন নির্মাণের কোন সুযোগই নেই। ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে ওই স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়া হবে।

জানা গেছে, আমতলী উপজেলার গাজীপুর বন্দরের সরকারী ৮ একর ৩৭ শতাংশ সরকারী খাস জমি রয়েছে। ওই জমির মধ্যে ৮ শতাংশ জমি জুয়েল গাজী ও শাকুর গাজী দুই ভাই দখল করে নেন। গত সোমবার থেকে ওই জমিতে পাকা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন তারা। স্থানীয়রা এ সরকারী জমি দখল ও পাকা ভবন নির্মাণের বিষয়টি উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আহসানুল হক রুবেল ও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবু জাফরকে জানালে তারা তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নির্মাণ কাজের অনুমতি দেন। তাদের অনুমতি পেয়ে অবৈধ দখলদাররা পাকা ভবন নির্মাণ করছেন।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার আহসানুল হক রুবেল ও ভূমি কর্মকর্তা আবু জাফর মোটা অংকের টাকা নিয়ে কাজের অনুমতি দিয়েছেন।

তারা আরও অভিযোগ করেন, এ বিষয়টি আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক হাসানকে জানালেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে অনায়াসে তারা পাকা ভবন নির্মাণ করতে সাহস পাচ্ছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, তিন দিকে বেড়া দিয়ে ভিতরে পাকা ভবনের কাজ চলছে। পাঁচজন শ্রমিক কাজ করছেন। পাশে জুয়েল গাজী ও শাকুর গাজী দাড়িয়ে কাজ দেখভাল করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, সরকারী জমিতে জুয়েল গাজী ও শাকুর গাজী অবৈধভাবে পাকা ভবন নির্মাণ করছেন। এ বিষয়টি উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তাকে জানালে ওই অফিসের সার্ভেয়ার আহসানুল হক রুবেল ও ইউনিয়ন সহকারী কর্মকর্তা আবু জাফর এসে জুয়েল গাজীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ব্যবস্থা নেয়নি। সরকারী জমি সরকারী কর্মকর্তারা রক্ষা না করে তাহলে করবে কে?

পাকা ভবন নির্মাণকারী জুয়েল গাজী ও শাকুর গাজী বলেন, দখলীয় জমিতে পাকা ভবন নির্মাণ করতেছি। এ পাকা ভবন নির্মাণের বিষয়টি উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা জানেন।

কুকুয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহসিলদার) মো. আবু জাফর টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, পাকা ভবনের কাজ করতে জুয়েল গাজীকে নিষেধ করা হয়েছে।

আমতলী উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আহসানুল হক রুবেল বলেন, সরকারী জমিতে পাকা ভবন নির্মাণ করতেই পারবে না। তবে টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জবাব না দিয়ে এগিয়ে যান।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি আরও বলেন, সরকারী জমি উদ্ধার না করে কেউ যদি টাকা নিয়ে পাকা ভবন নির্মাণ করতে সহায়তা করে থাকেন, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।