বার এসোসিয়েশন নির্বাচনের ফল স্থগিতের প্রতিবাদ সংবাদ সম্মেলন
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:২৯:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ মার্চ ২০২৪ ৯৩ বার পড়া হয়েছে
রাজশাহী বার এসোসিয়েশন নির্বাচন -২০২৪ এর ফলাফল স্থগিতের প্রতিবাদ এবং অত্র প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষনা করা এবং দোষিদের শাস্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল রাজশাহী শাখা।
শুক্রবার (১ মার্চ) বেলা ১১টায় নগরীর সাহেববাজার এলাকার একটি আবাসিক হোটেলের হলরুমে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম রাজশাহী শাখার সভাপতি আলহাজ¦ মাইনলু হাসান পান্না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সভাপতি জাতীয়তাবাদী আইনঝীবী ঐক্য প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী আলহাজ¦ আবুল কাশেম, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শফিকুল হক মিলন, বিএনপি রাজশাহী মহানগনের আহŸায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা, আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি এডভোকেট পারভেজ তৌফিক জাহেদী, বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলর কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি এডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম।
আরও উপস্থিত ছিলেন-জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম রাজশাহীর শাখার সহ-সভাপতি এডভোকেট আলী আশরাফ মাসুম, এডভোকেট মুন্সি আবুল কালাম আজাদ, এডভোকেট মাহমুদুর রহমার রুমন, এডভোকেট আব্দুল মতিন চৌধুরী রুমী ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রইসুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এজাজুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আল-আমিন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি এডভোকেট সামসাদ বেগম মিতালী, এডভোকেট সোহাগ বান্না ও সিরাজুল করিম মাসুম।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি বলেন, ভোট গণনা শেষে ফল ঘোষণার প্রস্তুতি চলছিলো। এমন সময় আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা দাবি করেন ভোট পুনর্গননার। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাতে রাজি না হওয়ায় এ নিয়ে হট্টগোল শুরু হয়। একপর্যায়ে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করেন। শুধু তাইনয় তাঁকে মারতে ওঠে তারা। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে চাপের মুখে তিনি পদত্যাগ করেন। ফলে নির্বাচনের ফল ঘোষণা স্থগিত হয়ে যায় বলে তিনি উল্লেখ করেন তিনি। রাজশাহী এডভোকেট বার সমিতির নির্বাচনে বৃহস্পতিবার রাতে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করেন সভাপতি।
তিনি আরও বলেন, বরাবরই দুটি প্যানেলে রাজশাহী বার সমিতির নির্বাচন হয়ে থাকে। এবারও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল ও আওয়ামী পন্থি সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেলে নির্বাচন হয় । মোট ২১টি পদের বিপরীতে দুই প্যানেলের প্রার্থীরা প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলে সভাপতি পদে আবুল কাশেম ও সাধারণ সম্পাদক পদে জমসেদ আলী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। অপর দিকে আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন ইব্রাহিম ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন সাইফুর রহমান খান রানা।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৬৮৩ জন। এরমধ্যে ৬৩৭ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোটগ্রহণের পর রাতে গণনা শুরু হয়। ১১টি টেবিলে তিনজন করে ভোট গণনা শুরু করেন। এই তিনজনের মধ্যে দুই প্যানেল থেকে দুইজন এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একজন ছিলেন। গণনার পর বিভিন্ন টেবিল থেকে আসা ফল একত্রিত করছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ জাহাঙ্গীর সেলিম। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি ফল ঘোষণার প্রস্তুতি নেন। ইতোমধ্যে এজেন্টদের দেয়া তথ্য ও লিখিত ফল প্রকাশের পেপার্স অনুযায়ী দুইটি সদস্য পদ বাদে মোট ১৯টি পদে জাতীয়তাবাদী আইনঝীবী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা বিজয়ী হন। এ অবস্থা দেখে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা হট্টগোল শুরু করেন এবং নির্বাচন কমিশনারকে আবারও ভোট গণনার কথা বলেন। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার এতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ফল নিয়ে কোন আপত্তি থাকলে তারা তিন দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন।
তার এ কথার পর শুরু হয় হট্টগোল। বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা দাবি করেন, নির্বাচনে তাদের প্যানেলের সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৯ জন বিজয়ী হয়েছেন। শুধু সদস্য পদে আওয়ামীপন্থী দুজন বিজয়ী হয়েছেন। এ কারণে আওয়ামীপন্থীরা জটিলতার সৃষ্টি করছেন। এ সময় দুইপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিও শুরু হয়। একপর্যায়ে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা লাথি দিয়ে ব্যালট বক্স ভেঙে ফেলেন। এ সময় তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করতে থাকেন।
চাপের মুখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ফল ঘোষণা না করে রাত ১টার দিকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এর আগে তিনি জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদকে ফোন করেন। পরে জেলা প্রশাসক একজন কর্মকর্তাকে পাঠালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ব্যালটগুলো অন্য একটি বক্সে ঢুকিয়ে তার হাতে তুলে দেন। ব্যালট বক্সটি এখন জেলা প্রশাসকের ট্রেজারি শাখায় রয়েছে। রাজশাহী বার সমিতির নির্বাচন নিয়ে এ ধরনের ঘটনা এবারই প্রথম ঘটলো বলে জানান তিনি। তারা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। একইসঙ্গে সুষ্ঠুভাবে ভোটের ফল প্রকাশ এবং এ ঘটনায় দোষি ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মাধ্যমে কঠোর শাস্তির দাবী জানান তারা। এছাড়াও উপস্থিত অন্যান্য বক্তারা ডামি সরকারের ন্যাক্কারজনক দলীয় করণের প্রতিবাদ জানান।
পদত্যাগ করা প্রধান নির্বাচন কমিশনার শেখ জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘ফল ঘোষণার আগমূহুর্তে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরাই হট্টগোল করেছেন। তারা অযৌক্তিকভাবে ভোট পুনর্গননার দাবি জানান। তা না করার কারণে তারা ব্যালট বক্স ভেঙে দেন। আমাকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেন। আমি পদত্যাগ করে ব্যালট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ট্রেজারি শাখায় দিয়ে দিয়েছি। এখন এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে জেলা প্রশাসন। এসবের মধ্যে তিনি আর নেই বলে জানান।