ঢাকা ১০:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি

ফুঁসছে সাগর, বন্ধ ইলিশ আহরণ

আবু হানিফ, বাগেরহাট
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:০৩:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিম্নচাপের প্রভাবে ফুঁসে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। গত রবিবার থেকে চরম অশান্ত হয়ে ওঠে সমুদ্র। উত্তাল ঢেউয়ে টিকতে না পেরে বাগেরহাটের শরণখোলাসহ বিভিন্ন এলাকার শত শত ফিশিং ট্রলার কূলে ফিরে এসেছে। ফলে তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ইলিশ আহরণ।

এসব ফিশিং ট্রলার উপকূলীয় পাথরঘাটা, মহিপুর, নিদ্রাছখিনা ও শরখোলার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন ঘাটে অবস্থান করছে।

জানা গেছে, ২০ মে থেকে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয় ২৩ জুলাই। নিষেধাজ্ঞা শেষ হতেই হানা দেয় দুর্যোগ। সেসময় সাগরে রওনা হয়েও উত্তাল ঢেউয়ে জাল ফেলতে পারেননি জেলেরা। শূন্য ট্রলার নিয়ে ঘাটে ফিরতে হয় জেলেদের। ইলিশ না পাওয়ায় প্রথম ট্রিপেই লাখ লাখ টাকা লোকসানে পড়তে হয় ট্রলার মালিক ও আড়ৎদারদের। দেড় মাসের মাথায় আবার দুর্যোগ হানা দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

উপকূলীয় জেলে-মহাজনদের দাবি, ৬৫ দিনের অবরোধ (নিষেধাজ্ঞা) মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে তেমন কোনো সুফল হচ্ছে না। নিষিদ্ধ এই সময়টাতে ইলিশের ভরা মৌসুম থাকে। এসময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশীয় জেলেরা। অথচ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভিনদেশি জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে অবাধে মাছ ধরে নিয়ে যায়। তাছাড়া মৌসুমের বেশিভাগ সময় নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সাগর থাকে উত্তাল। ঠিক মতো জাল ফেলা সম্ভব হয়না তখন। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার এই সময়টাতে প্রকৃতিও মোটামুটি শান্ত থাকে। তাই ভরা মৌসুমের এই সময়ে ৬৫ দিনর নিষেধাজ্ঞা না দেওয়ার দাবি জানান মৎস্য সংশ্লিষ্টরা।

শরণখোলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়ৎদার মো. দেলোয়ার ফরাজ ও মো. কবির হাওলাদার জানান, পাঁচ মাসের ইলিশ মৌসুমের তুন মাসই থাকে অবরোধ (নিষেধাজ্ঞা)। বাকি সময় দফায় দফায় দুর্যোগে সাগর উত্তাল থাকায় ঠিক মতো জাল ফেলা যায় না। ফলে লোকসানের ঘানি টানতে টানতে পথে বসতে হচ্ছে মহাজন- আড়ৎদারদের। ভরা মৌসুমে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানান তারা।

শরণখোলা সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, এখন ইলিশ মৌসুম প্রায় শেষের পথে এমন সময় দুর্যোগ তাদের জন্য খাড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। নিম্নচাপের কারণে সাগর খুবই ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। তিন দিন ধরে সমস্ত ট্রলার ঘাটে অবস্থান করছে। মাছ ধরতে না পারায় এবার খরচ ওঠেনি কোনো মহাজনের।


৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা মৎস্য সম্পদে তেমন সুফল বয়ে আনছেনা দাবি করে আবুল হোসেন বলেন, যখন ইলিশের ভরা মৌসুম তখনই নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। এই সুযোগে ভিনদেশি জেলেরা আমাদের জলসীমায় ঢুকে মাছ শিকার করে নিয়ে যায় প্রতিবছর। তাতে আমাদের লাভের চেয়ে ক্ষতি হয় বেশি।

মৎস্যখাতে একেক জন মহাজনের ট্রলার, জাল ও অন্যান্য সব মিলিয়ে কারো ৩০ লাখ, কারো ৫০ লাখ আবার কারো কারো কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। সব মিলিয়ে মৌসুমের তিন মাস নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের চালান উঠছে না। ফলে মৎস্য আহরণে নিয়োজিত লাখ লাখ জেলে চরম সংকটে পতিত হচ্ছে। মহাজনরা দেনায় জর্জরিত হয়ে দেউলিয়া হচ্ছ। তাই জেলেদের সার্থে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানাই সরকারের কাছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি

ফুঁসছে সাগর, বন্ধ ইলিশ আহরণ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:০৩:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিম্নচাপের প্রভাবে ফুঁসে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। গত রবিবার থেকে চরম অশান্ত হয়ে ওঠে সমুদ্র। উত্তাল ঢেউয়ে টিকতে না পেরে বাগেরহাটের শরণখোলাসহ বিভিন্ন এলাকার শত শত ফিশিং ট্রলার কূলে ফিরে এসেছে। ফলে তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ইলিশ আহরণ।

এসব ফিশিং ট্রলার উপকূলীয় পাথরঘাটা, মহিপুর, নিদ্রাছখিনা ও শরখোলার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন ঘাটে অবস্থান করছে।

জানা গেছে, ২০ মে থেকে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয় ২৩ জুলাই। নিষেধাজ্ঞা শেষ হতেই হানা দেয় দুর্যোগ। সেসময় সাগরে রওনা হয়েও উত্তাল ঢেউয়ে জাল ফেলতে পারেননি জেলেরা। শূন্য ট্রলার নিয়ে ঘাটে ফিরতে হয় জেলেদের। ইলিশ না পাওয়ায় প্রথম ট্রিপেই লাখ লাখ টাকা লোকসানে পড়তে হয় ট্রলার মালিক ও আড়ৎদারদের। দেড় মাসের মাথায় আবার দুর্যোগ হানা দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

উপকূলীয় জেলে-মহাজনদের দাবি, ৬৫ দিনের অবরোধ (নিষেধাজ্ঞা) মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে তেমন কোনো সুফল হচ্ছে না। নিষিদ্ধ এই সময়টাতে ইলিশের ভরা মৌসুম থাকে। এসময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশীয় জেলেরা। অথচ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভিনদেশি জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে অবাধে মাছ ধরে নিয়ে যায়। তাছাড়া মৌসুমের বেশিভাগ সময় নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সাগর থাকে উত্তাল। ঠিক মতো জাল ফেলা সম্ভব হয়না তখন। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার এই সময়টাতে প্রকৃতিও মোটামুটি শান্ত থাকে। তাই ভরা মৌসুমের এই সময়ে ৬৫ দিনর নিষেধাজ্ঞা না দেওয়ার দাবি জানান মৎস্য সংশ্লিষ্টরা।

শরণখোলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়ৎদার মো. দেলোয়ার ফরাজ ও মো. কবির হাওলাদার জানান, পাঁচ মাসের ইলিশ মৌসুমের তুন মাসই থাকে অবরোধ (নিষেধাজ্ঞা)। বাকি সময় দফায় দফায় দুর্যোগে সাগর উত্তাল থাকায় ঠিক মতো জাল ফেলা যায় না। ফলে লোকসানের ঘানি টানতে টানতে পথে বসতে হচ্ছে মহাজন- আড়ৎদারদের। ভরা মৌসুমে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানান তারা।

শরণখোলা সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, এখন ইলিশ মৌসুম প্রায় শেষের পথে এমন সময় দুর্যোগ তাদের জন্য খাড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। নিম্নচাপের কারণে সাগর খুবই ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। তিন দিন ধরে সমস্ত ট্রলার ঘাটে অবস্থান করছে। মাছ ধরতে না পারায় এবার খরচ ওঠেনি কোনো মহাজনের।


৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা মৎস্য সম্পদে তেমন সুফল বয়ে আনছেনা দাবি করে আবুল হোসেন বলেন, যখন ইলিশের ভরা মৌসুম তখনই নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। এই সুযোগে ভিনদেশি জেলেরা আমাদের জলসীমায় ঢুকে মাছ শিকার করে নিয়ে যায় প্রতিবছর। তাতে আমাদের লাভের চেয়ে ক্ষতি হয় বেশি।

মৎস্যখাতে একেক জন মহাজনের ট্রলার, জাল ও অন্যান্য সব মিলিয়ে কারো ৩০ লাখ, কারো ৫০ লাখ আবার কারো কারো কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। সব মিলিয়ে মৌসুমের তিন মাস নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের চালান উঠছে না। ফলে মৎস্য আহরণে নিয়োজিত লাখ লাখ জেলে চরম সংকটে পতিত হচ্ছে। মহাজনরা দেনায় জর্জরিত হয়ে দেউলিয়া হচ্ছ। তাই জেলেদের সার্থে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানাই সরকারের কাছে।