ঢাকা ০৩:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি/ স্কুল মাঠে গরুর হাট, শিক্ষক নিয়োগে বাণিজ্য

ত্রিপুরারী দেবনাথ তিপু, হবিগঞ্জ
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:২৮:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪ ১০২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হবিগঞ্জের মাধবপুরে ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই স্কুল এন্ড কলেজে স্কুলের উন্নয়ন, মসজিদ নির্মাণ, ছাত্র ছাত্রীদের রেজিষ্ট্রেশন, কোচিং বাণিজ্য, স্কুল মাঠে গরুর হাট বসিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া, শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে অনুসন্ধানে দুর্নীতি ও অনিয়ম বেরিয়ে আসে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক দীপক কান্তি রায় সকল অপকর্মে প্রধান সহযোগী হিসেবে রয়েছে। স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দ্বীপক মাষ্টার যে দিন থেকে এই স্কুলে যোগদান করেছেন, তারপর থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতির মাত্রা বেড়েই চলেছে। আর প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ তার সাথে হাতে হাত মিলেয়ে চালিয়ে যাচ্ছে মনগড়া নিয়ম নীতি।

অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে দ্বীপক কান্তি রায় এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি যতো কিছু করেছি সবকিছুই প্রধান শিক্ষক জানেন। আমি স্কুলের অধিকাংশ কাজই করে থাকি। প্রায় সব কাজই আমার মাধ্যমে হয়। কিন্তু কোন কাজের বিষয়ে আমি কোন কিছু বলতে পারব না। যা কিছু জিজ্ঞেসা করার প্রধান শিক্ষকে জিজ্ঞেসা করুন। এই বলে তিনি মোবাইল ফোনের আলাপ শেষ করে দেন।

প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আপনার সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের ডেকে নিয়ে বলেছেন বিষয়গুলো তদন্ত করা হবে। এবং শিক্ষা অফিসার’কে দায়িত্ব দিয়েছেন তদন্ত করার জন্য। একই সাথে বলেছেন কোন সাংবাদিকে কোন তথ্য না দেয়ার জন্য। তাই কোন কিছু বলা যাবে না।

প্রধান শিক্ষকের কথার ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে সরাসরি দেখা করে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এমন কোন কথা বলিনি। আমি বলে দিয়েছি আপনার স্কুল আপনাদের বিরুদ্ধে অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, বিষয়গুলো তদন্ত করা হবে এবং তদন্তের জন্য শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছি।

জানা গেছে, স্কুলের উন্নয়ন, মসজিদ নির্মাণ, ছাত্র ছাত্রীদের রেজিষ্ট্রেশন, কোচিং বাণিজ্য, স্কুল মাঠে গরুর হাট বসিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া, শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য, স্কুল ফান্ড থেকে টাকা ধার নিয়ে আত্মসাৎ, স্কুল ফান্ড থেকে প্রধান শিক্ষক দেড় লক্ষ টাকা ধার নিয়ে আত্মসাৎ, মালামাল ক্রয় করার ক্ষেত্র ব্লাংক বিল ভাউচার আনা, বিল ভাউচারে অতিরিক্ত টাকা, অনিয়ম ও অপরাধের বিষয়ে কোন শিক্ষক প্রতিবাদ করলে ঐ শিক্ষক কে কৌশলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া, শতবর্ষ ফান্ড বাণিজ্য, টিফিন বাণিজ্য, ফান্ড থেকে টাকা নিয়ে নিজের জন্য মোবাইল ক্রয়সহ দুর্নীতি ও অনিয়মের পাহাড় জমে উঠেছে। বিষয়গুলো নিয়ে সদ্য মেয়াদ অতিবাহিত হওয়া কমিটির সভাপতি মোঃ শামসু মিয়া বলেন, যদি কোন শিক্ষক বা কমিটির লোক কোন প্রকার অসংগতি করে থাকে, তাহলে অবশ্য তার জবাবদিহি করতে হবে। আইন সবার জন্য সমান। কোন ব্যক্তিই আইনের উর্ধে নয়। এছাড়া শিক্ষা অফিসার খুব শীঘ্রই তদন্তে আসতেছে সব কিছু উম্মোচন হবে। কে দুর্নীতি করেছে আর কে অনিয়ম করেছে৷ আমিও যদি কোন অনিয়ম বা দুর্নীতি করে থাকি তারও বিচার আমি দিতে প্রস্তুত আছি।

অনিয়ম ও দুর্নীতি রয়েছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক দ্বীপক কান্তি রায়সহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে কোন শিক্ষক বা কোন ব্যক্তি মুখ খুলতে সাহস পায়না হয়রানি শিকার হবে বলেও অনুসন্ধানে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসে।

প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ ওই স্কুলে যোগদান করেন ২০১০ সালের ২০অক্টোবর। যোগদানের পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় এক কোটি টাকার কাজ করিয়েছেন বলে নিজ স্বীকার করেন। কিন্তু প্রতিটি কাজের মধ্যেই রয়েছে দুর্নীতি। তার প্রধান সহযোগী হিসেবে সাথে রয়েছেন সহকারী শিক্ষক দ্বীপক কান্তি রায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি/ স্কুল মাঠে গরুর হাট, শিক্ষক নিয়োগে বাণিজ্য

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:২৮:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪

হবিগঞ্জের মাধবপুরে ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই স্কুল এন্ড কলেজে স্কুলের উন্নয়ন, মসজিদ নির্মাণ, ছাত্র ছাত্রীদের রেজিষ্ট্রেশন, কোচিং বাণিজ্য, স্কুল মাঠে গরুর হাট বসিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া, শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে অনুসন্ধানে দুর্নীতি ও অনিয়ম বেরিয়ে আসে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক দীপক কান্তি রায় সকল অপকর্মে প্রধান সহযোগী হিসেবে রয়েছে। স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দ্বীপক মাষ্টার যে দিন থেকে এই স্কুলে যোগদান করেছেন, তারপর থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতির মাত্রা বেড়েই চলেছে। আর প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ তার সাথে হাতে হাত মিলেয়ে চালিয়ে যাচ্ছে মনগড়া নিয়ম নীতি।

অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে দ্বীপক কান্তি রায় এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি যতো কিছু করেছি সবকিছুই প্রধান শিক্ষক জানেন। আমি স্কুলের অধিকাংশ কাজই করে থাকি। প্রায় সব কাজই আমার মাধ্যমে হয়। কিন্তু কোন কাজের বিষয়ে আমি কোন কিছু বলতে পারব না। যা কিছু জিজ্ঞেসা করার প্রধান শিক্ষকে জিজ্ঞেসা করুন। এই বলে তিনি মোবাইল ফোনের আলাপ শেষ করে দেন।

প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আপনার সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের ডেকে নিয়ে বলেছেন বিষয়গুলো তদন্ত করা হবে। এবং শিক্ষা অফিসার’কে দায়িত্ব দিয়েছেন তদন্ত করার জন্য। একই সাথে বলেছেন কোন সাংবাদিকে কোন তথ্য না দেয়ার জন্য। তাই কোন কিছু বলা যাবে না।

প্রধান শিক্ষকের কথার ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে সরাসরি দেখা করে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এমন কোন কথা বলিনি। আমি বলে দিয়েছি আপনার স্কুল আপনাদের বিরুদ্ধে অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, বিষয়গুলো তদন্ত করা হবে এবং তদন্তের জন্য শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছি।

জানা গেছে, স্কুলের উন্নয়ন, মসজিদ নির্মাণ, ছাত্র ছাত্রীদের রেজিষ্ট্রেশন, কোচিং বাণিজ্য, স্কুল মাঠে গরুর হাট বসিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া, শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য, স্কুল ফান্ড থেকে টাকা ধার নিয়ে আত্মসাৎ, স্কুল ফান্ড থেকে প্রধান শিক্ষক দেড় লক্ষ টাকা ধার নিয়ে আত্মসাৎ, মালামাল ক্রয় করার ক্ষেত্র ব্লাংক বিল ভাউচার আনা, বিল ভাউচারে অতিরিক্ত টাকা, অনিয়ম ও অপরাধের বিষয়ে কোন শিক্ষক প্রতিবাদ করলে ঐ শিক্ষক কে কৌশলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া, শতবর্ষ ফান্ড বাণিজ্য, টিফিন বাণিজ্য, ফান্ড থেকে টাকা নিয়ে নিজের জন্য মোবাইল ক্রয়সহ দুর্নীতি ও অনিয়মের পাহাড় জমে উঠেছে। বিষয়গুলো নিয়ে সদ্য মেয়াদ অতিবাহিত হওয়া কমিটির সভাপতি মোঃ শামসু মিয়া বলেন, যদি কোন শিক্ষক বা কমিটির লোক কোন প্রকার অসংগতি করে থাকে, তাহলে অবশ্য তার জবাবদিহি করতে হবে। আইন সবার জন্য সমান। কোন ব্যক্তিই আইনের উর্ধে নয়। এছাড়া শিক্ষা অফিসার খুব শীঘ্রই তদন্তে আসতেছে সব কিছু উম্মোচন হবে। কে দুর্নীতি করেছে আর কে অনিয়ম করেছে৷ আমিও যদি কোন অনিয়ম বা দুর্নীতি করে থাকি তারও বিচার আমি দিতে প্রস্তুত আছি।

অনিয়ম ও দুর্নীতি রয়েছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক দ্বীপক কান্তি রায়সহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে কোন শিক্ষক বা কোন ব্যক্তি মুখ খুলতে সাহস পায়না হয়রানি শিকার হবে বলেও অনুসন্ধানে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসে।

প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ ওই স্কুলে যোগদান করেন ২০১০ সালের ২০অক্টোবর। যোগদানের পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় এক কোটি টাকার কাজ করিয়েছেন বলে নিজ স্বীকার করেন। কিন্তু প্রতিটি কাজের মধ্যেই রয়েছে দুর্নীতি। তার প্রধান সহযোগী হিসেবে সাথে রয়েছেন সহকারী শিক্ষক দ্বীপক কান্তি রায়।