ঢাকা ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জয়পুরহাটে গুলিতে একজন নিহত, এমপিসহ আহত শতাধিক

সুজন কুমার মন্ডল, জয়পুরহাট
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৩১:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ অগাস্ট ২০২৪ ৬৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও ছররা গুলি ছোড়ে। এ সময় গুলিতে মেহেদী হাসান নামের একজন নিহত হন। হামলা ও সংঘর্ষে এমপি সামছুল আলম দুদুসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।

জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এস এম গালিব আনোয়ার জানান, দুপুর ১২টার পর থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ৬৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এরমধ্যে তিনজন গুলিবিদ্ধ।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সকাল ১০টার পর বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা শহরের নতুনহাটে জড়ো হন। বেলা ১১টার দিকে তাঁরা মিছিল নিয়ে বাটার মোড়ে আসেন। সেখানে আগেই জড়ো হওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীরা শিক্ষার্থীদের মিছিলে যোগ দেন। বাটার মোড় থেকে মিছিল নিয়ে শহরের জিরো পয়েন্ট-পাঁচুর মোড়ে আসেন। এ সময় চিত্রা রোড কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের সামনে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিলেন। পুলিশ ওই সড়কে ব্যারিকেড দেয়।

এ সময় আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে কিছু ব্যক্তি বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে উসকানিমূলক কথা বলেন। এরপর রেলগেট অতিক্রম করে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে স্থানীয় সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদুসহ দলটির ১০ থেকে ১২ জনকে পিটিয়ে জখম করেন এবং কার্যালয়ের আসবাব ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করেন। পরে দলীয় কার্যালয়ে সামনে থাকা পাঁচটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর তাঁরা রেলস্টেশন–সংলগ্ন ছাত্রলীগের কার্যালয়ে আগুন দেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও ছররা গুলি ছোড়ে। এ সময় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক আহত হন। তাঁদের মধ্যে বেলা ২টা পর্যন্ত ৬৮ জনকে জয়পুরহাট-২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ মেহেদী হাসানকে (১৮) বগুড়ায় পাঠানোর পথে কালাইয়ে তিনি মারা যান। তাঁকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজনীন নাহার ডেইজি তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মেহেদী হাসানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। বিকেলে শহরের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান করছিলেন তাঁরা। পরে জয়পুরহাট সদর থানা কার্যালয় ঘেরাও করতে আসেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় আরও দুজনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এখন শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ নূরে আলম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর আছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

জয়পুরহাটে গুলিতে একজন নিহত, এমপিসহ আহত শতাধিক

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৩১:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ অগাস্ট ২০২৪

জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও ছররা গুলি ছোড়ে। এ সময় গুলিতে মেহেদী হাসান নামের একজন নিহত হন। হামলা ও সংঘর্ষে এমপি সামছুল আলম দুদুসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।

জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এস এম গালিব আনোয়ার জানান, দুপুর ১২টার পর থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ৬৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এরমধ্যে তিনজন গুলিবিদ্ধ।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সকাল ১০টার পর বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা শহরের নতুনহাটে জড়ো হন। বেলা ১১টার দিকে তাঁরা মিছিল নিয়ে বাটার মোড়ে আসেন। সেখানে আগেই জড়ো হওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীরা শিক্ষার্থীদের মিছিলে যোগ দেন। বাটার মোড় থেকে মিছিল নিয়ে শহরের জিরো পয়েন্ট-পাঁচুর মোড়ে আসেন। এ সময় চিত্রা রোড কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের সামনে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিলেন। পুলিশ ওই সড়কে ব্যারিকেড দেয়।

এ সময় আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে কিছু ব্যক্তি বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে উসকানিমূলক কথা বলেন। এরপর রেলগেট অতিক্রম করে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে স্থানীয় সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদুসহ দলটির ১০ থেকে ১২ জনকে পিটিয়ে জখম করেন এবং কার্যালয়ের আসবাব ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করেন। পরে দলীয় কার্যালয়ে সামনে থাকা পাঁচটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর তাঁরা রেলস্টেশন–সংলগ্ন ছাত্রলীগের কার্যালয়ে আগুন দেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও ছররা গুলি ছোড়ে। এ সময় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক আহত হন। তাঁদের মধ্যে বেলা ২টা পর্যন্ত ৬৮ জনকে জয়পুরহাট-২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ মেহেদী হাসানকে (১৮) বগুড়ায় পাঠানোর পথে কালাইয়ে তিনি মারা যান। তাঁকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজনীন নাহার ডেইজি তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মেহেদী হাসানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। বিকেলে শহরের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান করছিলেন তাঁরা। পরে জয়পুরহাট সদর থানা কার্যালয় ঘেরাও করতে আসেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় আরও দুজনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এখন শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ নূরে আলম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর আছেন।