ঢাকা ০২:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোমতীর বাঁধে ভাঙন: সহায়-সম্বল হারিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে মানুষ

কুমিল্লা প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:২১:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪ ৯৫ বার পড়া হয়েছে

oppo_0

বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গোমতীর নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে কুমিল্লায় বুড়িচং উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে জেলার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুরবুরিয়া নামক স্থান দিয়ে বাঁধ ভেঙ্গে যায়।

শুক্রবার বাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাঁধের প্রায় আড়াইশ’ ফুট ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে ঢুকছে। এদিকে বাঁধ ভাঙ্গার কারণে অনেকেই রাতে আশ্রয় কেন্দ্র ও বাঁধে আশ্রয় নিতে পারেনি। কেউবা ঝুঁকি নিয়ে সহায় সম্বল হারিয়ে নিরাপদে আশ্রয়ে গিয়েছেন। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দিনভর উদ্ধার কর্মীরা বাড়িঘর থেকে আটকে পড়া লোকজনদের উদ্ধার করতে কাজ করেন। তবে বাঁধ ভাঙ্গার মধ্য দিয়ে ধীরগতিতে কমতে শুরু করেছে গোমতীর পানি।

বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাহিদা আক্তার বলেন, প্রাথমিক হিসাবে শুধুমাত্র বুড়িচং উপজেলায়ই ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও পানি প্রবাহ পাশের ব্রাহ্মণপাড়া ও দেবিদ্বার উপজেলা এলাকার কিছু অংশে মৎস্য ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করবে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন বলেন, বাঁধের ভাঙ্গা অংশের উভয় পাশে আশ্রয় নিয়েছেন বুরবুরিয়া, ইন্দবতী, বেড়াজাল, খাড়াতাইয়া, শিকারপুর, শ্রীপুর, শিব রামপুর ও কিংবাজেহুরা গ্রামের হাজারো নারী পুরুষ ও শিশু। এছাড়াও পানি বন্দী অবস্থায় বাড়িতে আটকে আছেন মহিষমারা, গাজীপুর, শিকারপুর, গুষাইপুর ও শিবরামপুর এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। উদ্ধার কর্মীরা তাদের আশ্রয় কেন্দ্র ও বাঁধে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন, জেলায় বন্যা দুর্গত এলাকায় ৭২৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বুড়িচংয়ের দুর্গতদের জন্য এক ট্রাক শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। আরও বরাদ্দ দেয়া হবে। পুরো ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এখনো চুড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, গোমতী একটি ফ্লাশি নদী, এ নদীর উভয় বাঁধ বিগত ৪৮ ঘন্টারও অধিক সময় ধরে ‘ফুল ফ্লাড লেভেলে’ পানি ধরে রেখে কুমিল্লা জেলার ৭টি উপজেলাকে রক্ষার চেষ্টা করে আসছিলো। এই নদীতে এতো দীর্ঘ সময় ধরে ফুল ফ্লাড লেভেলে পানি অবস্থান করা নজিরবিহীন। এছাড়াও টানা বৃষ্টিপাত এবং পানি প্রবল স্রোতের কারণে বাঁধ দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে বাঁধটি ভেঙ্গে গিয়েছে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান জানান, বন্যায় জেলার ১৪টি উপজেলার ১১৮টি ইউনিয়নের ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৭টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে জেলায় ৭২৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৪৪ হাজার ৭৪৭ জন অবস্থান করছে। দুর্গত মানুষদের মাঝে ৩৪০ মেট্রিক টন চাল ও ১২ লাখ টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে। দুর্গত মানুষের সহায়তায় আমরা সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

গোমতীর বাঁধে ভাঙন: সহায়-সম্বল হারিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে মানুষ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:২১:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪

গোমতীর নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে কুমিল্লায় বুড়িচং উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে জেলার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুরবুরিয়া নামক স্থান দিয়ে বাঁধ ভেঙ্গে যায়।

শুক্রবার বাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাঁধের প্রায় আড়াইশ’ ফুট ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে ঢুকছে। এদিকে বাঁধ ভাঙ্গার কারণে অনেকেই রাতে আশ্রয় কেন্দ্র ও বাঁধে আশ্রয় নিতে পারেনি। কেউবা ঝুঁকি নিয়ে সহায় সম্বল হারিয়ে নিরাপদে আশ্রয়ে গিয়েছেন। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দিনভর উদ্ধার কর্মীরা বাড়িঘর থেকে আটকে পড়া লোকজনদের উদ্ধার করতে কাজ করেন। তবে বাঁধ ভাঙ্গার মধ্য দিয়ে ধীরগতিতে কমতে শুরু করেছে গোমতীর পানি।

বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাহিদা আক্তার বলেন, প্রাথমিক হিসাবে শুধুমাত্র বুড়িচং উপজেলায়ই ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও পানি প্রবাহ পাশের ব্রাহ্মণপাড়া ও দেবিদ্বার উপজেলা এলাকার কিছু অংশে মৎস্য ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করবে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন বলেন, বাঁধের ভাঙ্গা অংশের উভয় পাশে আশ্রয় নিয়েছেন বুরবুরিয়া, ইন্দবতী, বেড়াজাল, খাড়াতাইয়া, শিকারপুর, শ্রীপুর, শিব রামপুর ও কিংবাজেহুরা গ্রামের হাজারো নারী পুরুষ ও শিশু। এছাড়াও পানি বন্দী অবস্থায় বাড়িতে আটকে আছেন মহিষমারা, গাজীপুর, শিকারপুর, গুষাইপুর ও শিবরামপুর এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। উদ্ধার কর্মীরা তাদের আশ্রয় কেন্দ্র ও বাঁধে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন, জেলায় বন্যা দুর্গত এলাকায় ৭২৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বুড়িচংয়ের দুর্গতদের জন্য এক ট্রাক শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। আরও বরাদ্দ দেয়া হবে। পুরো ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এখনো চুড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, গোমতী একটি ফ্লাশি নদী, এ নদীর উভয় বাঁধ বিগত ৪৮ ঘন্টারও অধিক সময় ধরে ‘ফুল ফ্লাড লেভেলে’ পানি ধরে রেখে কুমিল্লা জেলার ৭টি উপজেলাকে রক্ষার চেষ্টা করে আসছিলো। এই নদীতে এতো দীর্ঘ সময় ধরে ফুল ফ্লাড লেভেলে পানি অবস্থান করা নজিরবিহীন। এছাড়াও টানা বৃষ্টিপাত এবং পানি প্রবল স্রোতের কারণে বাঁধ দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে বাঁধটি ভেঙ্গে গিয়েছে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান জানান, বন্যায় জেলার ১৪টি উপজেলার ১১৮টি ইউনিয়নের ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৭টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে জেলায় ৭২৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৪৪ হাজার ৭৪৭ জন অবস্থান করছে। দুর্গত মানুষদের মাঝে ৩৪০ মেট্রিক টন চাল ও ১২ লাখ টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে। দুর্গত মানুষের সহায়তায় আমরা সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করছি।