ঢাকা ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খাল দখল করে মাছ শিকার, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

শিমুল তালুকদার, সদরপুর (ফরিদপুর)
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:১৯:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪ ৩৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফরিদপুরের সদরপুর ঢেউখালি ইউনিয়নের চরডুবাইল খাল দখল হয়ে গেছে। এতে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে রাস্তা-ঘাট আর ফসলের জমি পানিতে একাকার হয়ে গেছে। বর্তমানে এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ। বর্ষা মৌসুম আসলেই এ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে।

সম্প্রতি উপজেলার ঢেউখালি ইউনিয়নের চরডুবাইল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে একটি খাল। স্থানীয়দের কাছে সরকারি এই খালটি ‘চরডুবাইল খাল’ নামে পরিচিত। পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই খালের প্রায় দুই কিলোমিটার বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বেপারী, ইদ্রিস বেপারী, দবির উদ্দিন কয়াল সহ কয়েকজন কৃষক জানান, কয়েক মাস যাবত কিছু মানুষ খাল দখল করে মাছ শিকার করছে। সরকারি নিয়ম-নীতি না মেনে টোনা জাল, চায়না দুয়ারি ও পাটাতন নেটের বেড়া দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এতে কৃষিকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

তারা আরও জানান, ফসল আবাদে খালের পানি সেচের মাধ্যমে কৃষকের ফসল উৎপাদনে ভূমিকা রাখে। ওইসব খালে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করায় ফসল আবাদে মিঠা পানির সংকটে পড়েছেন কৃষকেরা। সরকারি খালের বাঁধ কেটে খালগুলোর পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কয়েক মাস যাবত ঢেউখালি ইউনিয়নের কিছু প্রভাবশালী মানুষ খালে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে উপজেলার চরডুবাইল, উত্তর চরডুবাইল, সুরেশ্বরীর মোড়, এগারো ঘর, মৃধা কান্দি, সরদার ডাঙ্গীসহ কয়েকটি গ্রামের সাধারণ মানুষ দুরাবস্থায় পড়েছে। নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ব্যবহারের ফলে মাছের পোনা নিধন হচ্ছে। এলাকার কৃষিজীবী ও খালনির্ভর প্রায় শতাধিক পরিবারের জীবিকা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। একাধিকবার আপত্তি জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।

ঢেউখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, পানি সরবরাহের খাল ফসলি জমির চেয়ে উচু হয়ে গেছে। খালে যারা বাধ দিয়েছে আমি তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে বাধ অপসারণ করতে বলেছি। চরডুবাইল গ্রামে একটি ব্রীজ অপরিকল্পিতভাবে নির্মান করায় ফসলি জমির পানি প্রবাহের গতি কমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিটুল রায় বলেন, বাধ দেওয়ার কারণে পানি গতিপথ রোধ করা হয় ফলে কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। কৃষি কাজের সুবিধার্থে সরকারি খালের বাঁধ অপসারণ করে খাস খালগুলো উন্মুক্ত রাখা প্রয়োজন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবানা তানজিন বলেন, চরডুবাইল খালের বাঁধ কেটে উন্মুক্ত করে দেয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

খাল দখল করে মাছ শিকার, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:১৯:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪

ফরিদপুরের সদরপুর ঢেউখালি ইউনিয়নের চরডুবাইল খাল দখল হয়ে গেছে। এতে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে রাস্তা-ঘাট আর ফসলের জমি পানিতে একাকার হয়ে গেছে। বর্তমানে এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ। বর্ষা মৌসুম আসলেই এ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে।

সম্প্রতি উপজেলার ঢেউখালি ইউনিয়নের চরডুবাইল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে একটি খাল। স্থানীয়দের কাছে সরকারি এই খালটি ‘চরডুবাইল খাল’ নামে পরিচিত। পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই খালের প্রায় দুই কিলোমিটার বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বেপারী, ইদ্রিস বেপারী, দবির উদ্দিন কয়াল সহ কয়েকজন কৃষক জানান, কয়েক মাস যাবত কিছু মানুষ খাল দখল করে মাছ শিকার করছে। সরকারি নিয়ম-নীতি না মেনে টোনা জাল, চায়না দুয়ারি ও পাটাতন নেটের বেড়া দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এতে কৃষিকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

তারা আরও জানান, ফসল আবাদে খালের পানি সেচের মাধ্যমে কৃষকের ফসল উৎপাদনে ভূমিকা রাখে। ওইসব খালে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করায় ফসল আবাদে মিঠা পানির সংকটে পড়েছেন কৃষকেরা। সরকারি খালের বাঁধ কেটে খালগুলোর পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কয়েক মাস যাবত ঢেউখালি ইউনিয়নের কিছু প্রভাবশালী মানুষ খালে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে উপজেলার চরডুবাইল, উত্তর চরডুবাইল, সুরেশ্বরীর মোড়, এগারো ঘর, মৃধা কান্দি, সরদার ডাঙ্গীসহ কয়েকটি গ্রামের সাধারণ মানুষ দুরাবস্থায় পড়েছে। নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ব্যবহারের ফলে মাছের পোনা নিধন হচ্ছে। এলাকার কৃষিজীবী ও খালনির্ভর প্রায় শতাধিক পরিবারের জীবিকা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। একাধিকবার আপত্তি জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।

ঢেউখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, পানি সরবরাহের খাল ফসলি জমির চেয়ে উচু হয়ে গেছে। খালে যারা বাধ দিয়েছে আমি তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে বাধ অপসারণ করতে বলেছি। চরডুবাইল গ্রামে একটি ব্রীজ অপরিকল্পিতভাবে নির্মান করায় ফসলি জমির পানি প্রবাহের গতি কমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিটুল রায় বলেন, বাধ দেওয়ার কারণে পানি গতিপথ রোধ করা হয় ফলে কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। কৃষি কাজের সুবিধার্থে সরকারি খালের বাঁধ অপসারণ করে খাস খালগুলো উন্মুক্ত রাখা প্রয়োজন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবানা তানজিন বলেন, চরডুবাইল খালের বাঁধ কেটে উন্মুক্ত করে দেয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।