আটঘরিয়ায় ৩৩৪৮ হেক্টর জমিতে বিনা চাষে সরিষা আবাদ,বাম্পার ফলন হওয়ায় আশা কৃষকের
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:১২:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫ ১৮ বার পড়া হয়েছে
বিনা চাষে সরিষার আবাদ করা যায় এটা তার জানা ছিল না। বিনা চাষে সরিষার আবাদের বিষয়টি তিনি প্রত্যক্ষ করেন। এরপর স্থানীয় কৃষি বিভাগের উপসহকারী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হন।
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর এলাকার কৃষক আজাদ, শহিদুল ইসলাম, মিজানুর স্থানীয় কৃষি বিভাগের কাছ থেকে পরামর্শসহ প্রণোদনা হিসেবে বীজ ও সার পেয়ে জমিতে বিনা চাষে সরিষার আবাদ করেছেন।
এই আবাদে তার কোনও খরচ হয়নি। নিজেই সরিষা ক্ষেতের পরিচর্যা করেন। সরিষার বাম্পার ফলন হবে এবং লাভবান হবেন এমনটাই প্রত্যাশা এই কৃষকের।
এরপর কৃষি বিভাগ থেকে ১ বিঘা জমির জন্য ১ কেজি বারি সরিষা বীজ, ডিইপি সার ১০ কেজি, এমওপি সার ১০ কেজি পেয়েছেন। রোপা আমন ধান কাটার পরে গত বছরে ওই জমিতে কোনোরকম চাষ না দিয়েই বিনা চাষে সরিষার বীজ ছিটিয়ে দেন।
এরপর কিছু দিনের মধ্যেই সরিষার চারা গজিয়ে ওঠে। এরপর প্রণোদনার সার জমিতে প্রয়োগ করেছেন। নিড়ানিসহ খরচ ছাড়াই এভাবেই সরিষার আবাদ করেন। এখন ফুল এসে সরিষার মাঠজুড়ে হলুদ রঙ ধারণ করেছে। বাম্পার ফলন আশা করছেন রুবেল।
কৃষক আজাদ, শহিদুলের মতো অনেক কৃষকই চলতি মৌসুমে বিনা চাষে সরিষার আবাদ করেছেন। বিনা চাষে সরিষার আবাদ করা যায় এই খবর ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।
নাগদহ গ্রামের কৃষক স্বপ্ন চৌধুরী জানান, বিনা চাষে সরিষার আবাদ করা যায় এটা তাদের জানা ছিল না। গ্রামের কৃষক মিজানুর, শহিদুল আজাদের এই সরিষার আবাদ করায় বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। বিনা খরচে এবং লাভজনক হওয়ায় আগামীতে অনেক কৃষক এই সরিষার আবাদ করবেন বলে জানান তারা।
শ্রীপুর গ্রামের কৃষক আজাদ ১ একর , মিজানুর রহমান দেড় একর ও শহিদুল ৫০ শতাংশ জমিতে বিনা চাষে সরিষা আবাদ করছেন চলতি মৌসুমে আমন ধান কাটার আগেই ওই জমিতে সরিষা বীজ বপন করেন। এর ১৫ দিন পরে আমন ধান কেটে ফেলেন। ওই জমিতে সরিষার চারা গজিয়ে ওঠে। পরে কৃষি বিভাগ থেকে প্রণোদনা হিসেবে পাওয়া সার জমিতে প্রয়োগ করেন।
এ ছাড়া আর কোনও খরচ করতে হয়নি সরিষা আবাদে। এরপরই কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে আমন ধান কাটার আগেই সরিষা বীজ ছিটিয়ে দিয়েছেন।
সরিষার ফলন ভালো হবে দাবি করে তারা আরও জানান, সরিষা প্রায় পাক ধরে আসায় আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে সরিষা কেটে ঘরে তোলা যাবে। এরপর সরিষা বিক্রি করে ওই টাকা দিয়ে জমিতে বোরো ধান আবাদের প্রস্তুতি নেবেন।
আরেক কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিনা চাষে সরিষা আবাদে কোনও খরচ হয় না, এটা আজাদের আবাদ দেখে আমরা জানতে পেরেছি। আগামীতে আমরাও আমন ধান কাটার আগে সরিষা বীজ জমিতে বপন করবো।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল হক জানান, বিনা চাষে লাভজনক হওয়ায় আগামীতে সরিষা আবাদে কৃষকরা আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছেন।
আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার সজীব আল মারুফ বলেন,চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫ হাজার ১৬৬ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বিনা চাষে সরিষার আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৩৪৮ হেক্টর জমিতে। গত বছর ছিল ৫ হাজার ১১০ হেক্টর।
বিনা চাষে সরিষার আবাদ করেছে কৃষকরা। সরিষা আবাদে উদ্বুদ্ধ করতে সরকারিভাবে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে ১ কেজি করে সরিষা বীজ, ডিইপি সার ১০ কেজি, এমওপি সার ১০ কেজি দেওয়া হয়েছে। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে বিনা চাষে সরিষা আবাদ সারা দেশে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়বে এমনটাই বলছেন তিনি।