ঢাকা ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবৈধ দখলে উপজেলা পরিষদের আবাসিক ভবন

রুবেল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০২:৪৯:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৪ ১৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অবৈধভাবে বছরের পর বছর দখল করে বসবাস করছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের সরকারি আবাসিক ভবন। প্রকৃত কর্মচারিরা এ থেকে বঞ্চিত হলেও কার্যত পদক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের। উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বরতরা বলছেন আগামী মাস থেকে নিয়মের বাইরে কেউ থাকবে না এসব ভবনে।

জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী এসব আবাসিক ভবনে অল্প বেতনে সংশ্লিস্ট উপজেলায় কর্মরতরা ভাড়ায় থাকবেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বরত উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল কাদেরের যোগসাজসে এ উপজেলায় এমন অনিয়মের চিত্র।

দেখা গেছে,বহিরাগতরা আবাসিক ভবন দখলে নিয়ে বছরের পর বছর বসবাস করছে। তারা সময় মতো ভাড়া দেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। সদর উপজেলায় চাকুরিরত দু-একজন কর্মচারি বসবাসের সুযোগ পেলেও বাকিরা বঞ্চিত।

আবার কেউ কেউ অন্য জেলায় বদলী হলেও কোয়ার্টারের ঘর নিজ দখলেই রেখেছেন। আর এসব জেনেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ সুবিধা বঞ্চিতদের।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সদর ইউএনও’র বাসভবন বাদে পাথরাজ, শুক, সেনুয়া ও টাংগন নামে দ্বিতলা বিশিষ্ট্য ভবনে আবাসিক প্লট রয়েছে। আর এসব প্লটে অবৈধ দখলে থাকছে বদলী হওয়া কর্মকর্তা ও বহিরাগতরা। তবে তাদের বিরুদ্ধে নোটিশ দেওয়ার পরেও ঘর ছাড়ছেন না।

সরকারি কোয়ার্টারে বসবাসের তালিকায় রয়েছেন পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলায় এলজিইডিতে কর্মরত মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার এলজিইডিতে কর্মরত আবু সাঈদ মো: করিম, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি অফিসের উচ্চমান সহকারী মো: মুঞ্জুর আলম,একই উপজেলায় একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: মাবুদ হোসেন,নীলফামারি জেলার এলজিউডি’র সার্ভেয়ার মো: মফিজুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক মো: মুন্না, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো: সাজ্জাত হোসেন,পঞ্চগড় উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা মো: বাবুল আক্তার, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অফিস সহকারী মো: সফিকুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের অফিস সহায়ক মো: রবিউল ইসলাম, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব চন্দ্র রায়, উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ের সিএ কাম-উচ্চমান সহকারী রেবা খাতুন, বিআরডিবি’র জুনিয়র অফিসার (হিসাব) মো: আবদুল হাই আল হাদী ও যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর জহির রায়হান। প্লট বাবদ প্রতিমাসে ভাড়া ৩ হাজার টাকা হলেও নিয়মিত কেউ ভাড়া পরিশোধ করেন না।

এরমধ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অফিস সহকারী মো: সফিকুল ইসলামের বকেয়া রয়েছে ৭২ হাজার টাকা, মঞ্জুর আলমের ৬ হাজার টাকা, রবিউলের ১২ হাজার টাকা, মাবুদ হোসেনের ১৫ হাজার টাকা, আবু সাঈদের ১২ হাজার টাকা, বাবুল আক্তারের ৬ হাজার টাকা, বিপ্লব চন্দ্রের ৬ হাজার টাকা, রেবা খাতুনের ৯ হাজার টাকা, সাজ্জাতের ৬ হাজার টাকা, হাদীর ৯ হাজার টাকা , মফিজুর রহমানের ১৫ হাজার টাকা, মুন্নার ৬ হাজার টাকা ও জহির রায়হানের ৬ হাজার টাকা।

বদলি হওয়ার পরও ঘর না ছাড়ার প্রসঙ্গে আবু সাঈদ মো: করিম ও মোস্তাফিজুর রহমান লিটনসহ অন্যান্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা দায়িত্বরত উপজেলা প্রকৌশলীকে দেখিয়ে দেন।

উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল কাদের বলেন, উপজেলা কোয়ার্টারে ১৪টি পরিবার আছে। তাঁর মধ্যে অনেকের বদলী হয়ে গেছে। অনেকের ভাড়াও বাকি আছে। নোটিশ দিয়েও লাভ হয়নি। তবে এবার দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিয়মের বাইরে কেউ থাকতে পারবে না।

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

অবৈধ দখলে উপজেলা পরিষদের আবাসিক ভবন

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০২:৪৯:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৪

অবৈধভাবে বছরের পর বছর দখল করে বসবাস করছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের সরকারি আবাসিক ভবন। প্রকৃত কর্মচারিরা এ থেকে বঞ্চিত হলেও কার্যত পদক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের। উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বরতরা বলছেন আগামী মাস থেকে নিয়মের বাইরে কেউ থাকবে না এসব ভবনে।

জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী এসব আবাসিক ভবনে অল্প বেতনে সংশ্লিস্ট উপজেলায় কর্মরতরা ভাড়ায় থাকবেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বরত উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল কাদেরের যোগসাজসে এ উপজেলায় এমন অনিয়মের চিত্র।

দেখা গেছে,বহিরাগতরা আবাসিক ভবন দখলে নিয়ে বছরের পর বছর বসবাস করছে। তারা সময় মতো ভাড়া দেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। সদর উপজেলায় চাকুরিরত দু-একজন কর্মচারি বসবাসের সুযোগ পেলেও বাকিরা বঞ্চিত।

আবার কেউ কেউ অন্য জেলায় বদলী হলেও কোয়ার্টারের ঘর নিজ দখলেই রেখেছেন। আর এসব জেনেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ সুবিধা বঞ্চিতদের।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সদর ইউএনও’র বাসভবন বাদে পাথরাজ, শুক, সেনুয়া ও টাংগন নামে দ্বিতলা বিশিষ্ট্য ভবনে আবাসিক প্লট রয়েছে। আর এসব প্লটে অবৈধ দখলে থাকছে বদলী হওয়া কর্মকর্তা ও বহিরাগতরা। তবে তাদের বিরুদ্ধে নোটিশ দেওয়ার পরেও ঘর ছাড়ছেন না।

সরকারি কোয়ার্টারে বসবাসের তালিকায় রয়েছেন পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলায় এলজিইডিতে কর্মরত মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার এলজিইডিতে কর্মরত আবু সাঈদ মো: করিম, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি অফিসের উচ্চমান সহকারী মো: মুঞ্জুর আলম,একই উপজেলায় একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: মাবুদ হোসেন,নীলফামারি জেলার এলজিউডি’র সার্ভেয়ার মো: মফিজুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক মো: মুন্না, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো: সাজ্জাত হোসেন,পঞ্চগড় উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা মো: বাবুল আক্তার, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অফিস সহকারী মো: সফিকুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের অফিস সহায়ক মো: রবিউল ইসলাম, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব চন্দ্র রায়, উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ের সিএ কাম-উচ্চমান সহকারী রেবা খাতুন, বিআরডিবি’র জুনিয়র অফিসার (হিসাব) মো: আবদুল হাই আল হাদী ও যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর জহির রায়হান। প্লট বাবদ প্রতিমাসে ভাড়া ৩ হাজার টাকা হলেও নিয়মিত কেউ ভাড়া পরিশোধ করেন না।

এরমধ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অফিস সহকারী মো: সফিকুল ইসলামের বকেয়া রয়েছে ৭২ হাজার টাকা, মঞ্জুর আলমের ৬ হাজার টাকা, রবিউলের ১২ হাজার টাকা, মাবুদ হোসেনের ১৫ হাজার টাকা, আবু সাঈদের ১২ হাজার টাকা, বাবুল আক্তারের ৬ হাজার টাকা, বিপ্লব চন্দ্রের ৬ হাজার টাকা, রেবা খাতুনের ৯ হাজার টাকা, সাজ্জাতের ৬ হাজার টাকা, হাদীর ৯ হাজার টাকা , মফিজুর রহমানের ১৫ হাজার টাকা, মুন্নার ৬ হাজার টাকা ও জহির রায়হানের ৬ হাজার টাকা।

বদলি হওয়ার পরও ঘর না ছাড়ার প্রসঙ্গে আবু সাঈদ মো: করিম ও মোস্তাফিজুর রহমান লিটনসহ অন্যান্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা দায়িত্বরত উপজেলা প্রকৌশলীকে দেখিয়ে দেন।

উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল কাদের বলেন, উপজেলা কোয়ার্টারে ১৪টি পরিবার আছে। তাঁর মধ্যে অনেকের বদলী হয়ে গেছে। অনেকের ভাড়াও বাকি আছে। নোটিশ দিয়েও লাভ হয়নি। তবে এবার দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিয়মের বাইরে কেউ থাকতে পারবে না।

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।