ঢাকা ০৪:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পলাশবাড়ীতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ

সরকার লুৎফর রহমান,গাইবান্ধাঃ
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:১৯:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৫ বার পড়া হয়েছে

filter: 0; jpegRotation: 0; fileterIntensity: 0.000000; filterMask: 0; module:1facing:0; hw-remosaic: 0; touch: (-1.0, -1.0); modeInfo: ; sceneMode: Night; cct_value: 0; AI_Scene: (-1, -1); aec_lux: 77.0; hist255: 0.0; hist252~255: 0.0; hist0~15: 0.0;

বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর সাতারপাড়া এম.ইউ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও মোটাঅংকের অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দাখিলকৃত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, অত্র বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগের নিমিত্তে গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিধি মোতাবেক বিজ্ঞপ্তিটি অত্র প্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ডে টানানোর কথা থাকলেও মূলতঃ তা করা হয়নি। শুধু তাই-ই নয় এক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আরোপিত অফিসিয়াল কোন প্রকার নথিপত্র সংরক্ষণ করা হয়নি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

বিদ্যালয়ের তৎসময়ের সভাপতি আনোয়ার হোসেন পলিন পূর্ব পরিকল্পিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি গোপন করেন। ওই সময়ের প্রধান শিক (ভারপ্রাপ্ত) একেএম আহসান হাবিব সামগ্রিক নিয়োগ প্রক্রিয়া কার্যক্রম বিধি মোতাবেক হয়নি বলে অসম্মতি জানালেও তা কার্যকর করা হয়নি। পরবর্তীতে সভাপতি তার একক প্রভাবে কোন প্রকার কোন কারণ দর্শানো বা ছাড়াই প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) একেএম আহসান হাবিবকে তার স্বপদে বহাল রেখেই মনগড়া এবং অবৈধ পন্থায় জুনিয়র শিক্ষক সুজন কুমারকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার প্রদান করেন। 

সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগে সরকারি বিধি-বিধান অনুসরণ না করায় এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত যোগ্যতা সম্পন্ন অভিজ্ঞ সিনিয়র শিক্ষকদের আবেদন করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আগ্রহী প্রার্থীদের সার্বিক যাচাই-বাছাই সম্পূর্ণ গোপন করা হয়। জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট ডিজি’র প্রতিনিধি এবং জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি চেয়ে নিয়োগ বোর্ড গঠন করার ক্ষেত্রেও নানা দুরভিসন্ধিসহ পায়তারা চালানো হয়। 

এমন তুঘলকি ও শুভঙ্করের বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নবুলার রহমান জানতে পান। পরবর্তীতে অনিয়মের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি বরাবর গত ১৭ নভেম্বর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু ওই অভিযোগের কোন তোয়াক্কা কিংবা কর্ণপাত না করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অত্র প্রতিষ্ঠান সভাপতি গত ২৯ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। আমজাদ হোসেন নামের একজনকে মোটাঅংকের অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হয় বলে এলাকাবাসী সূত্র জানান। নিয়োগ বোর্ড গঠন করার সময় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা নবুলার রহমান প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হলেও সেখান থেকে তাকে চলে যেতে বলা হয়। বিষয়টি সম্পূর্ণ অপমানজনক বলে  অভিযোগ করেন তিনি। 

এছাড়া বিদ্যালয়টি বর্তমানে মনগড়া নিয়মে পরিণত হয়েছে বলে এলাকাবাসীর বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। সরকারি সময়সূচির কোন তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় প্রতিনিয়তই নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ছুটি দিয়ে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীরা বাড়ীতে চলে যান। গত রবিবার সরেজমিনে দেখতে পাওয়া যায় দুপুর ২ টার পর স্কুল বারান্দায় বাল্ব জ্বেলে রাখা হয়েছে এবং স্কুল বন্ধ পাওয়া যায় যদিও পাশেই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলছিলো।

প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সুজন কুমারের সাথে এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বিদ্যালয় বন্ধ সংক্রান্ত বিষয়টি পরীক্ষার কারণে এমন হচ্ছে। নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়ম অর্থ গ্রহনের বিষয়টি এড়িয়ে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অত্র প্রতিষ্ঠান সভাপতি মো. কামরুল হাসান-এর নিকট নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এসব ব্যাপারে অভিযোগ অনুযোগ থাকতেই পারে। নিয়োগ প্রক্রিয়া একটি চলমান বিষয়। সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগের ক্ষেত্রে যেখানে ডিজি এবং ডিসি’র প্রতিনিধি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে সেখানে আমার কিছু করার নেই। তবুও বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তীতে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

সর্বোপরি সরেজমিন শিক্ষানুরাগী সচেতন এলাকাবাসী নিয়োগ সংক্রান্তসহ শিার সুষ্ঠু পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে যথাযথ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনে ইউএনওসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

পলাশবাড়ীতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:১৯:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর সাতারপাড়া এম.ইউ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও মোটাঅংকের অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দাখিলকৃত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, অত্র বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগের নিমিত্তে গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিধি মোতাবেক বিজ্ঞপ্তিটি অত্র প্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ডে টানানোর কথা থাকলেও মূলতঃ তা করা হয়নি। শুধু তাই-ই নয় এক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আরোপিত অফিসিয়াল কোন প্রকার নথিপত্র সংরক্ষণ করা হয়নি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

বিদ্যালয়ের তৎসময়ের সভাপতি আনোয়ার হোসেন পলিন পূর্ব পরিকল্পিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি গোপন করেন। ওই সময়ের প্রধান শিক (ভারপ্রাপ্ত) একেএম আহসান হাবিব সামগ্রিক নিয়োগ প্রক্রিয়া কার্যক্রম বিধি মোতাবেক হয়নি বলে অসম্মতি জানালেও তা কার্যকর করা হয়নি। পরবর্তীতে সভাপতি তার একক প্রভাবে কোন প্রকার কোন কারণ দর্শানো বা ছাড়াই প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) একেএম আহসান হাবিবকে তার স্বপদে বহাল রেখেই মনগড়া এবং অবৈধ পন্থায় জুনিয়র শিক্ষক সুজন কুমারকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার প্রদান করেন। 

সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগে সরকারি বিধি-বিধান অনুসরণ না করায় এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত যোগ্যতা সম্পন্ন অভিজ্ঞ সিনিয়র শিক্ষকদের আবেদন করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আগ্রহী প্রার্থীদের সার্বিক যাচাই-বাছাই সম্পূর্ণ গোপন করা হয়। জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট ডিজি’র প্রতিনিধি এবং জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি চেয়ে নিয়োগ বোর্ড গঠন করার ক্ষেত্রেও নানা দুরভিসন্ধিসহ পায়তারা চালানো হয়। 

এমন তুঘলকি ও শুভঙ্করের বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নবুলার রহমান জানতে পান। পরবর্তীতে অনিয়মের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি বরাবর গত ১৭ নভেম্বর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু ওই অভিযোগের কোন তোয়াক্কা কিংবা কর্ণপাত না করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অত্র প্রতিষ্ঠান সভাপতি গত ২৯ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। আমজাদ হোসেন নামের একজনকে মোটাঅংকের অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হয় বলে এলাকাবাসী সূত্র জানান। নিয়োগ বোর্ড গঠন করার সময় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা নবুলার রহমান প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হলেও সেখান থেকে তাকে চলে যেতে বলা হয়। বিষয়টি সম্পূর্ণ অপমানজনক বলে  অভিযোগ করেন তিনি। 

এছাড়া বিদ্যালয়টি বর্তমানে মনগড়া নিয়মে পরিণত হয়েছে বলে এলাকাবাসীর বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। সরকারি সময়সূচির কোন তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় প্রতিনিয়তই নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ছুটি দিয়ে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীরা বাড়ীতে চলে যান। গত রবিবার সরেজমিনে দেখতে পাওয়া যায় দুপুর ২ টার পর স্কুল বারান্দায় বাল্ব জ্বেলে রাখা হয়েছে এবং স্কুল বন্ধ পাওয়া যায় যদিও পাশেই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলছিলো।

প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সুজন কুমারের সাথে এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বিদ্যালয় বন্ধ সংক্রান্ত বিষয়টি পরীক্ষার কারণে এমন হচ্ছে। নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়ম অর্থ গ্রহনের বিষয়টি এড়িয়ে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অত্র প্রতিষ্ঠান সভাপতি মো. কামরুল হাসান-এর নিকট নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এসব ব্যাপারে অভিযোগ অনুযোগ থাকতেই পারে। নিয়োগ প্রক্রিয়া একটি চলমান বিষয়। সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগের ক্ষেত্রে যেখানে ডিজি এবং ডিসি’র প্রতিনিধি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে সেখানে আমার কিছু করার নেই। তবুও বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তীতে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

সর্বোপরি সরেজমিন শিক্ষানুরাগী সচেতন এলাকাবাসী নিয়োগ সংক্রান্তসহ শিার সুষ্ঠু পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে যথাযথ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনে ইউএনওসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।