ঢাকা ০৪:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডেঙ্গু রোগী ৯০ হাজার, মৃত্যু পাঁচশ ছুঁইছুঁই

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:০৫:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ৫৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসে এখন পর্যন্ত  ১৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত এক মাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু এটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর)  স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। তাতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে দুজন, ঢাকা বিভাগে দুজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বরিশাল ও খুলনা বিভাগে একজন করে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৮৩৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগের (ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বাদে) বিভিন্ন হাসপাতালে সর্বোচ্চ ২২১ জন ভর্তি হয়েছে। এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৭১, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১১৫, বরিশাল বিভাগে ৭২, খুলনা বিভাগে ১০৯, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৫, রাজশাহী বিভাগে ৩২, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৮, রংপুর বিভাগে ১০ ও সিলেট বিভাগের হাসপাতালে ৪ জন ভর্তি হয়েছে।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯০ হাজার ৪৪০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর আগে অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো ৩০ হাজার ৮৭৯ জন। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৮ হাজার ৬২৩ জন। আর এ বছর এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৪৮২ জন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় ২০২৩ সালে। তখন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। আর মৃত্যু হয় এক হাজার ৭০৫ জনের। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৪৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২৪৮ জন নারী ও ২৩৪ জন পুরুষ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ১৯ হাজার ১৭১ রোগী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরপর ঢাকা বিভাগের (ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বাদে) বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ১৬ হাজার ৫২৮ জন ভর্তি হয়েছেন। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৯০৩ জন ডেঙ্গু রোগী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অপরদিকে, এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ২০২ রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে। এরপর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ৮৯ জনের।

এর আগে ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয় ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

এছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো। ওই বছর মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জন মারা যান।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ডেঙ্গু রোগী ৯০ হাজার, মৃত্যু পাঁচশ ছুঁইছুঁই

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:০৫:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসে এখন পর্যন্ত  ১৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত এক মাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু এটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর)  স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। তাতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে দুজন, ঢাকা বিভাগে দুজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বরিশাল ও খুলনা বিভাগে একজন করে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৮৩৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগের (ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বাদে) বিভিন্ন হাসপাতালে সর্বোচ্চ ২২১ জন ভর্তি হয়েছে। এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৭১, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১১৫, বরিশাল বিভাগে ৭২, খুলনা বিভাগে ১০৯, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৫, রাজশাহী বিভাগে ৩২, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৮, রংপুর বিভাগে ১০ ও সিলেট বিভাগের হাসপাতালে ৪ জন ভর্তি হয়েছে।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯০ হাজার ৪৪০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর আগে অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো ৩০ হাজার ৮৭৯ জন। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৮ হাজার ৬২৩ জন। আর এ বছর এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৪৮২ জন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় ২০২৩ সালে। তখন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। আর মৃত্যু হয় এক হাজার ৭০৫ জনের। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৪৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২৪৮ জন নারী ও ২৩৪ জন পুরুষ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ১৯ হাজার ১৭১ রোগী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরপর ঢাকা বিভাগের (ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বাদে) বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ১৬ হাজার ৫২৮ জন ভর্তি হয়েছেন। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৯০৩ জন ডেঙ্গু রোগী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অপরদিকে, এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ২০২ রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে। এরপর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ৮৯ জনের।

এর আগে ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয় ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

এছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো। ওই বছর মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জন মারা যান।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।