বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়াম
৭ বছর মাঠে গড়ায় না বল, স্টেডিয়ামে হাঁটু পানি
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:১২:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪ ৫২ বার পড়া হয়েছে
ঝিনাইদহের ক্রীড়াঙ্গন এখন ধ্বংসের পথে। সাত বছর মাঠে বল গড়ায় না। নেই খেলার কোন প্রতিযোগিতা। দীর্ঘদিন বন্ধ ফুটবল, ভলিবল এমনকি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। আওয়ামী লীগ নেতাদের পদ দখলের কামড়াকামড়িতে ঝিনাইদহ ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন ঝুলে রয়েছে। মামলা জটিলতায় নির্বাচন না হওয়ায় ক্রীড়া সংস্থা এখন এডহক কমিটি দিয়ে চলছে।
পেশাদার খেলোয়াড়দের যাতায়াত না থাকায় জেলার একমাত্র বৃহৎ খেলার মাঠ ঝিনাইদহ বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামটি খাঁ খাঁ করছে। দীর্ঘদিন স্টেডিয়ামের সংস্কার নেই। মাঠের গ্যালারি, ড্রেসিং রুম আর ক্রীড়া সংস্থার অবকাঠামোগুলো রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে চাকচিক্য হারাচ্ছে। স্টেডিয়ামের সামনে এখন জমে আছে হাটু পানি। সেখানে জলকেলি করে হাঁসের দল।
জানা গেছে, পেশাদার খেলোয়াড়দের নিয়ে বেশ ভালই চলছি ঝিনাইদহ জেলা ক্রীড়া সংস্থা। কিন্তু ১৪ বছর আগে আওয়ামী লীগ নেতারা ক্রিড়া সংস্থা দখল করে নেওয়ায় ধীরে ধীরে কমতে থাকে খেলার মান। ক্লাব ভিত্তিক খেলার প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সালে ক্রীড়া সংস্থায় কাউন্সিলর বানানো নিয়ে যুবলীগ নেতা রাশিদুর রহমান রাসেল ও আ’লীগ নেতা জীবন কুমার বিশ্বাসের মধ্যে দ্বন্দ বাঁধে। সেই দ্বন্দ গড়ায় উচ্চ আদালতে। মামলা হওয়ায় স্টেডিয়ামে সব ধরণের প্রতিযোগিতাসহ খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যায়। খেলেয়াড়দের পরিবর্তে আমলাদের নিয়ে গঠিত হয় ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটি। এতে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে খেলোয়াড়দের মাঝে। এদিকে খেলাধুলা বা বড় ধরণের কোন প্রতিযোগিতার আয়োজন না থাকলেও ক্রিড়া সংস্থার খরচ থেমে নেই।
২০১৪ সালের ১০ মে থেকে ২০২৪ সালের ২২ সেপ্টম্বর পর্যন্ত ক্রীড়া সংস্থার জনতা ব্যাংকে জমা হয় মোট ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ২০২৪ সালের ২২ সেপ্টম্বর পর্যন্ত ব্যায় হয়েছে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৩৯ হাজার টাকা।
অপরদিকে ,ঝিনাইদহ সোনালী ব্যাংকে ক্রিড়া সংস্থার আরেকটা একাউন্টে জমা ছিল ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০২৪ সালের ১০ জুন দু’টি চেকের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের ওই একাউন্ট থেকে ৬ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এই টাকা কোন খাতে ব্যায় দেখিয়ে উত্তোলন করা হয়েছে তার হিসাব জেলা ক্রীড়া সংস্থায় নেই। দীর্ঘদিন আভ্যন্তরীন অডিট না হওয়ায় ক্রীড়া খাতে বেশুমার লুটপাট হয়েছে এমন অভিযোগও তুলেছেন কেউ কেউ।
ঝিমিয়ে পড়া ঝিনাইদহের ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে জেলার সাবেক ফুটবলার ও বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক আহসান উদ্দীন আফাঙ্গীর জানান, ক্রিড়া সংস্থার নেতৃত্ব পেশাদার খেলোয়াড়দের হাতে ফিরিয়ে না দিলে মাঠে প্রানবন্ত পরিবেশ ফিরে আসবে না। তিনি দ্রুত মামলা নিস্পত্তি করে ক্রিড়া সংস্থার নির্বাচন দাবী করেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিয়া আক্তার চৌধুরী বলেন, ক্রীড়া সংস্থার নতুন কমিটি গঠন হলেই কেবল ক্রীড়ায় প্রাণ ফিরতে পারে। এ জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্ষা মৌসুম চলে গেলে আশাকরা যায় বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামে ফুটবল, ভলিবল ও ক্রিকেট টুর্নামেন্ট এর আয়োজন করা হলে আবারও প্রানবন্ত হয়ে উঠবে জেলার একমাত্র এই স্টেডিয়ামটি।