বললেন জামায়াতে আমীর
একটি সুন্দর দেশ গড়ে তুলতে পারবো
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:০৮:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫ ২৭ বার পড়া হয়েছে
রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা ও মহানগরের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছর পর রাজশাহীতে এমন বড় পরিসরে জামায়াতের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন, রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ সাকিব আনজুমের বাবা সাইদুল হক। মঞ্চে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে বিদায় করতে গিয়ে আমার কলিজার টুকরা সাকিব শহীদ হয়েছে। আমি একজন গর্বিত পিতা। আমার সাকিবের মতো হাজারো ছাত্র-জনতা যে স্বপ্ন নিয়ে দেশের জন্য জীবন দিয়েছে, সেই স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনোভাবেই ব্যর্থ হওয়া যাবে না।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, সবার সহযোগিতা ও ভালোবাসা পেলে একটি সুন্দর দেশ সবাই মিলে গঠন করতে পারব। আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই, যেখানে ঘরে ও বাইরে মানুষ শান্তিতে থাকবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির ড. মো. কেরামত আলী। সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মাদ্রাসা মাঠে প্রবেশ করেন। সম্মেলনে লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর সমবেত হওয়ার আশা করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৫ বছর পর রাজশাহীতে প্রকাশ্যে জামায়াতের এমন কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো, যা দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নায়েবে আমির রাজশাহীর সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল ও রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন। সভাপতিত্ব করছেন দলটির মহানগরীর আমির ড. কেরামত আলী। ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল খালেক।
কুরআন তিলাওয়াত দিয়ে সম্মেলন শুরু হয়। তিলাওয়াত করেন মাওলানা আরিফুল ইসলাম। সম্মেলন উদ্বোধন করেন স্বাগত বক্তব্য রাখেন জামায়াতের রাজশাহী জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল খালেক। হামদ পেশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকল্প সাংস্কৃতিক সংসদ।
এ সময় বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম ও মোবারক হোসাইন, সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, পাবনা জেলা আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমির মাওলানা আবুযর গিফারী, নাটোর জেলা আমির ড. মীর নুরুল ইসলাম, নওগাঁ জেলা আমির খন্দকার মো. আব্দুর রাকিব, রাজশাহী জেলার নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল খালেক, মহানগরীর নায়েবে আমির এডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম, যুব বিভাগের সেক্রেটারি সালাহউদ্দিন আহমেদ, জেলার মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মাওলানা ইসমাইল আলম আল হাসানী, মহানগরীর উলামা বিভাগের সেক্রেটারি মাওলানা রুহুল আমিন, খেলাফতে মজলিশের রাজশাহী মহানগরীর সভাপতি মুফতি মোহাম্মদ আবুল বাশার, হেফাজতে ইসলামের আহবায়ক মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমী, ছাত্রশিবিরের জেলা পশ্চিম শাখার সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, জেলা পূর্বের সভাপতি রুবেল আলী, মহানগরীর সাংগঠনিক সেক্রেটারি জসিম উদ্দিন সরকার, জেলার শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক কামরুজ্জামান, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নাজমুল হক, মহানগরীর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুস সামাদ, জামায়াতের রাজশাহী মহানগরীর সহকরী সেক্রটারি অধ্যক্ষ মাহবুবুল আহসান বুলবুল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক নওসাজ জামান, মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. শামিম উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ।
শনিবার ভোর থেকেই জেলার পবা, মোহনপুর, তানোর, গোদাগাড়ী, পুঠিয়া, দুর্গাপুর, বাঘা, চারঘাট ও বাগমারা উপজেলা থেকে কর্মী সম্মেলনে দলটির নেতাকর্মীরা যোগ দেন। এছাড়া মহানগরী ১২ থানা এবং ৩০টি ওয়ার্ড থেকে ব্যানার, ফেস্টুন ও দলীয় প্রতিক দাঁড়িপাল্লা হাতে পৃথক পৃথক মিছিল নিয়ে সম্মেলনে আসেন নেতাকর্মীরা। আমির ডা. শফিকুর রহমানকে স্বাগত জানিয়ে দিচ্ছেন নানা স্লোগান। নগরীর সব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জামায়াত-শিবিরের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করেন।