ঢাকা ০৬:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪০০ কোটির পিয়নের অবৈধ সম্পদের খোঁজে সিআইডি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৫১:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪ ৩৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনের ব্যক্তিগত পিয়ন ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তার কাজ ছিল সুধা সদনে খাওয়ার পানি সরবরাহ করা। এই কারণে তার নাম হয় ‘পানি জাহাঙ্গীর’। এরপর শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী বলে পরিচয় দেয়া শুরু করেন। এই পরিচয় ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের পদ, বিভিন্ন চাকরিতে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য করেন জাহাঙ্গীর।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা যায়, জাহাঙ্গীরের স্ত্রী কামরুন নাহারের নামে রয়েছে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার সম্পদ। যার মধ্যে ধানমন্ডিতে দুই হাজার ৩৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট,একটি গাড়ি, বিভিন্ন ব্যবসায় মূলধন ৭৩ লাখ টাকা এবং ব্যাংকে এক কোটি ১৭ লাখ টাকার তথ্য পাওয়া যায়।

প্রভাব খাটিয়ে তদবির বাণিজ্যের মাধ্যমে গড়েছেন কোটি টকার সম্পদ। বাগিয়েছেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ। প্রতারণার মাধ্যমে তিনি ৪০০ কোটি টাকার সম্পদসহ গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে জানা যায়। গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-১ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়নও চেয়েছিলেন।

গত ১৪ জুলাই গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার বাসার কাজ করে গেছে পিয়ন, সে এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। এটা বাস্তব কথা। কী করে বানাল এই টাকা। যখন আমি জেনেছি, তাকে বাদ দিয়ে কার্ড সিজ করে আমি ব্যবস্থা নিয়েছি।’

এ ছাড়া জাহাঙ্গীরের নামে নিজ এলাকায় ৪ কোটি টাকার কৃষি ও অকৃষি জমি, মোহাম্মদপুর ও নিউমার্কেটে দুটি দোকান, মিরপুরে ৭ তলা ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট, গ্রামের বাড়িতে একতলা ভবন এবং চাটখিলে পৈতৃক ভিটায় চারতলা বাড়ি রয়েছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি তার পরিবারের একটি আটতলা বাড়ি রয়েছে নোয়াখালী শহর মাইজদীর হরিনারায়ণপুর এলাকায়। এর ১৯টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ১৮টি ভাড়া দেওয়া আছে।

অস্থাবর সম্পদ হিসাবে জাহাঙ্গীরের নগদ ও ব্যাংকের গচ্ছিত মিলিয়ে ২ কোটি ৫২ লাখ ২ হাজার ৪৩০ টাকা, ডিপিএস ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, এফডিআর ১ কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬৮ টাকা এবং তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবের স্থিতি ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৫ টাকা, ডিপিএস ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং অংশীদারি ফার্মে মূলধন ৬ কোটি ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকার তথ্য পাওয়া যায়।

জাহাঙ্গীর আলম এ কে রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামের একটি ডেভেলপার কোম্পানির মালিক ও হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন বলেও জানতে পেরেছে সিআইডি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

৪০০ কোটির পিয়নের অবৈধ সম্পদের খোঁজে সিআইডি

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৫১:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনের ব্যক্তিগত পিয়ন ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তার কাজ ছিল সুধা সদনে খাওয়ার পানি সরবরাহ করা। এই কারণে তার নাম হয় ‘পানি জাহাঙ্গীর’। এরপর শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী বলে পরিচয় দেয়া শুরু করেন। এই পরিচয় ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের পদ, বিভিন্ন চাকরিতে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য করেন জাহাঙ্গীর।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা যায়, জাহাঙ্গীরের স্ত্রী কামরুন নাহারের নামে রয়েছে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার সম্পদ। যার মধ্যে ধানমন্ডিতে দুই হাজার ৩৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট,একটি গাড়ি, বিভিন্ন ব্যবসায় মূলধন ৭৩ লাখ টাকা এবং ব্যাংকে এক কোটি ১৭ লাখ টাকার তথ্য পাওয়া যায়।

প্রভাব খাটিয়ে তদবির বাণিজ্যের মাধ্যমে গড়েছেন কোটি টকার সম্পদ। বাগিয়েছেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ। প্রতারণার মাধ্যমে তিনি ৪০০ কোটি টাকার সম্পদসহ গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে জানা যায়। গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-১ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়নও চেয়েছিলেন।

গত ১৪ জুলাই গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার বাসার কাজ করে গেছে পিয়ন, সে এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। এটা বাস্তব কথা। কী করে বানাল এই টাকা। যখন আমি জেনেছি, তাকে বাদ দিয়ে কার্ড সিজ করে আমি ব্যবস্থা নিয়েছি।’

এ ছাড়া জাহাঙ্গীরের নামে নিজ এলাকায় ৪ কোটি টাকার কৃষি ও অকৃষি জমি, মোহাম্মদপুর ও নিউমার্কেটে দুটি দোকান, মিরপুরে ৭ তলা ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট, গ্রামের বাড়িতে একতলা ভবন এবং চাটখিলে পৈতৃক ভিটায় চারতলা বাড়ি রয়েছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি তার পরিবারের একটি আটতলা বাড়ি রয়েছে নোয়াখালী শহর মাইজদীর হরিনারায়ণপুর এলাকায়। এর ১৯টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ১৮টি ভাড়া দেওয়া আছে।

অস্থাবর সম্পদ হিসাবে জাহাঙ্গীরের নগদ ও ব্যাংকের গচ্ছিত মিলিয়ে ২ কোটি ৫২ লাখ ২ হাজার ৪৩০ টাকা, ডিপিএস ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, এফডিআর ১ কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬৮ টাকা এবং তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবের স্থিতি ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৫ টাকা, ডিপিএস ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং অংশীদারি ফার্মে মূলধন ৬ কোটি ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকার তথ্য পাওয়া যায়।

জাহাঙ্গীর আলম এ কে রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামের একটি ডেভেলপার কোম্পানির মালিক ও হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন বলেও জানতে পেরেছে সিআইডি।