ঢাকা ১২:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশালে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে

শাহ জালাল, বরিশাল
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৩০:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪ ৮৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টানা তাপপ্রবাহের সাথে নিম্নমানের পথ খাবারে বরিশাল অঞ্চলে ডায়রিয়ার সাথে নতুন করে ডেঙ্গু আবারও ফিরে আসতে শুরু করেছে। দেড়মাসে সরকারী হাসপাতালে দু’জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্বিগ্ন হলেও এসব রোগ প্রতিরোধের তেমন কোন সমন্বিত উদ্যোগ নেই।

চলতি মে মাসের প্রথম ১৫ দিনেই বরিশাল অঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের পেটের পীড়া নিয়ে প্রায় ছয় হাজার রোগী ভর্তি হয়েছে। গত এক মাসে এ্রর ছিলো প্রায় ১১ হাজার। আর বছরের প্রথম সাড়ে চার মাসে প্রায় ৩৮ হাজার নারী পুরুষ ও শিশু ডায়রিয়াসহ নানা পেটের পীড়া নিয়ে বরিশালের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি ও চিকিৎসা নিয়েছেন।

অপরদিকে, মে মাসের প্রথম ১৫দিনে নতুন করে ৭৫ জন ডেঙ্গু রোগী বরিশাল অঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে বরিশালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাটা দাঁড়ালো ৩৮ হাজার ৪১০ জনে। আর মৃত্যু ২১৮ জনের।

এপ্রিল মাসে সরকারী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি ৫৭ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয় একজনের। পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনেই ডেঙ্গু রোগী সংখ্যা গত মাসের ৩০ দিনের তুলনায় ১৮ জন বেশী । ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার বংশ বিস্তার প্রতিরোধের কোন বিকল্প নেই। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বর্ষা শুরুর আগেই এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যাবস্থা গ্রহনের তাগিদ দেয়া হয়েছে।

ডায়রিয়া ব্যাবস্থাপনা নিয়েও চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের নাজেহাল অবস্থা। রোগীর অস্বাভাবিক ভিড়ে সুষ্ঠু চিকিৎসা তো দূরের কথা অনেক রোগীকে হাসপাতালের মেঝেতেও স্থান দেওয়া যাচ্ছে না। স্যালাইন সহ চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব না থাকলেও চিকিৎসক সংকটের সাথে অত্যাধিক রোগীর চাপে সুষ্ঠু চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে অবশ্য ৩৭৪টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে জানানো হলেও মঞ্জুরীকৃত চিকিৎসকের অর্ধেকেরও বেশী পদ শূন্য থাকায় এসব টিমে প্রায় কোনটিতেই চিকিৎসক নেই। তবে দু-তিনটি টিমের জন্য একজন করে চিকিৎসক দায়িত্বে আছেন।

গত এপ্রিল মাসে বরিশাল অঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে প্রায় ১২ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। ডায়রিয়া ও পেটের পীড়া নিয়ে আরও কয়েকগুন রোগী বিভিন্ন চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বার এবং বেসরকারী ক্লিনিকসহ রোগীদের বাসাতেই চিকিৎসা নিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় দপ্তরের তথ্যমতে, এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে সরকারী হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ছিলো সাড়ে তিন হাজারের বেশী। আর গত ১ জানুয়ারী থেকে ১৫ মে পর্যন্ত এই সংখ্যা দাড়িয়েছে প্রায় ৩৭ হাজার ৫১০ জনে।

গত বছরও বরিশাল অঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৭২ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। যা আগের বছর ছিল ৭৭ হাজারেরও বেশী। আর ২০২১ সালে করোনা মহামারীর সর্বোচ্চ সংক্রমনের মধ্যেও বরিশালে প্রায় ৮০ হাজার ডায়রিয়া রোগী সরকারী হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার নেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বরিশালে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৩০:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪

টানা তাপপ্রবাহের সাথে নিম্নমানের পথ খাবারে বরিশাল অঞ্চলে ডায়রিয়ার সাথে নতুন করে ডেঙ্গু আবারও ফিরে আসতে শুরু করেছে। দেড়মাসে সরকারী হাসপাতালে দু’জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্বিগ্ন হলেও এসব রোগ প্রতিরোধের তেমন কোন সমন্বিত উদ্যোগ নেই।

চলতি মে মাসের প্রথম ১৫ দিনেই বরিশাল অঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের পেটের পীড়া নিয়ে প্রায় ছয় হাজার রোগী ভর্তি হয়েছে। গত এক মাসে এ্রর ছিলো প্রায় ১১ হাজার। আর বছরের প্রথম সাড়ে চার মাসে প্রায় ৩৮ হাজার নারী পুরুষ ও শিশু ডায়রিয়াসহ নানা পেটের পীড়া নিয়ে বরিশালের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি ও চিকিৎসা নিয়েছেন।

অপরদিকে, মে মাসের প্রথম ১৫দিনে নতুন করে ৭৫ জন ডেঙ্গু রোগী বরিশাল অঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে বরিশালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাটা দাঁড়ালো ৩৮ হাজার ৪১০ জনে। আর মৃত্যু ২১৮ জনের।

এপ্রিল মাসে সরকারী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি ৫৭ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয় একজনের। পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনেই ডেঙ্গু রোগী সংখ্যা গত মাসের ৩০ দিনের তুলনায় ১৮ জন বেশী । ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার বংশ বিস্তার প্রতিরোধের কোন বিকল্প নেই। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বর্ষা শুরুর আগেই এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যাবস্থা গ্রহনের তাগিদ দেয়া হয়েছে।

ডায়রিয়া ব্যাবস্থাপনা নিয়েও চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের নাজেহাল অবস্থা। রোগীর অস্বাভাবিক ভিড়ে সুষ্ঠু চিকিৎসা তো দূরের কথা অনেক রোগীকে হাসপাতালের মেঝেতেও স্থান দেওয়া যাচ্ছে না। স্যালাইন সহ চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব না থাকলেও চিকিৎসক সংকটের সাথে অত্যাধিক রোগীর চাপে সুষ্ঠু চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে অবশ্য ৩৭৪টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে জানানো হলেও মঞ্জুরীকৃত চিকিৎসকের অর্ধেকেরও বেশী পদ শূন্য থাকায় এসব টিমে প্রায় কোনটিতেই চিকিৎসক নেই। তবে দু-তিনটি টিমের জন্য একজন করে চিকিৎসক দায়িত্বে আছেন।

গত এপ্রিল মাসে বরিশাল অঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে প্রায় ১২ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। ডায়রিয়া ও পেটের পীড়া নিয়ে আরও কয়েকগুন রোগী বিভিন্ন চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বার এবং বেসরকারী ক্লিনিকসহ রোগীদের বাসাতেই চিকিৎসা নিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় দপ্তরের তথ্যমতে, এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে সরকারী হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ছিলো সাড়ে তিন হাজারের বেশী। আর গত ১ জানুয়ারী থেকে ১৫ মে পর্যন্ত এই সংখ্যা দাড়িয়েছে প্রায় ৩৭ হাজার ৫১০ জনে।

গত বছরও বরিশাল অঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৭২ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। যা আগের বছর ছিল ৭৭ হাজারেরও বেশী। আর ২০২১ সালে করোনা মহামারীর সর্বোচ্চ সংক্রমনের মধ্যেও বরিশালে প্রায় ৮০ হাজার ডায়রিয়া রোগী সরকারী হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার নেন।