বেরোবির প্রতীষ্ঠাবার্ষিকীতে বললেন তথ্য উপদেষ্টা
ফ্যাসিবাদী শক্তি পরাজিত হয়ে গুজব রটাচ্ছে
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:৫৩:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪ ৩৮ বার পড়া হয়েছে
তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ভারত বিশ্বকে দেখাতে চায় বাংলাদেশে চলছে উগ্রবাদ। অথচ তাদের দেশেই উগ্রবাদ পুষ্ঠ হচ্ছে সে সম্পর্কে কিছু বলেনা। ভারতের এ ধরনের অপপ্রচার বেশ কিছুদিন ধরে তারা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশেও যে অনাকাংখিত ঘটনা ঘটছে আমাদের উচিত নিজেদের দিকে তাঁকানো । এই বিষয়গুলো যাতে কখনও না ঘটে সে জন্য আমরা তাৎক্ষনিক আইনী পদক্ষেপ নিচ্ছি।
শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতীষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি রাজপথে পরাজিত হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচুর গুজব রটাচ্ছে। ফেক আইডি দিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। তারা অনলাইনে তাদের শক্তি প্রদর্শন করছে। তিনি জনগনকে তাদের মিথ্যা তথ্য ও গুজবে ভিম্বাস না করার আহবান জানান।
তথ্য উপদেষ্ঠা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি রংপুর দেশের মধ্যে সবচেয়ে অবিেহলত হয়ে আছে। রংপুরকে স্বল্প পরিমান বাজেট দেয়া হয় আর ৩ গুন বাজেট দেয়া হয় গোপালগজ্ঞে। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধেই আমরা মুলত লড়াই করেছিলাম রংপুরের প্রতি অবহেলা বৈষম্য অবশ্যই দুর করবো।
তিনি বলেন, আমরা অন্তবর্তীকালিন সরকার কোন নতজানু পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাস করিনা। বাংলাদেশের সম্মান মান মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে সমতার ভিত্তিতে যে কোন দেশের সাথে সম্পর্ক করবো। দেশের আইন শৃঙখলা সহ জরুরী কিছু ইস্যু আছে তা সমাধান করার চেষ্টা করছি।
তিনি বেরোবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাইদ যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন আবু সাইদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার সমাধানে আমরা সব সময় থাকবো বলে জানান। আবু সাইদের বিশ্ববিদ্যালয় কখনই অবহেলিত থাকবেনা অবশ্যই তারা অগ্রাধিকার পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, আমাদের সহযোদ্ধা শহীদ আবু সাইদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে তিনি লড়াই করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। রক্ত দিয়েছেন এই রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা ভোগ করছি।
এখন আমরা ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা সরকারে আছি। সেই দায়িত্বে জায়গা থেকে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। আজকে বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়ের প্রতীষ্ঠা বার্ষিকীতে আমন্ত্রিত হয়ে খুবই সৌভাগ্যবান মনে করছি। আজকের এই দিনে গভীর ভাবে স্মরন করছি শহীদ আবু সাইদকে স্মরন করছি জুলাই বিপ্লবের সকল শহীদ ও আহতদের।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই প্রতীষ্ঠাবার্ষিকীতে শপথ নিতে চাই আবু সাইদরা যে কারনে শহীদ হয়েছে, গন অভুত্থানের যে আকাংখা তারা ধারন করেছিলো সেই আকাংখা ধারন করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আবু সাইদকে পুরো বাংলার ছাত্র সমাজ অগ্রসৈনিক হিসেবে সব সময় স্মরন করবে।
এর আগে বেরোবির প্রতীষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে একটি দৃষ্টি নন্দন গেট উদ্বোধন করেন তথ্য উপদেষ্ঠা। এরপর শিক্ষার্থীদের সাথে আনন্দ র্যালিতে অংশ নেন তিনি। এর আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষথেকে শহীদ আবু সাইদের বাবা মকবুল হোসেনকে ক্রেষ্ট দিয়ে সম্মাননাপ্রদান করা হয়। পরে তাকে সম্মাননা দেয়া হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড, শওকত আলী সহ শিক্ষক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, অনুষ্ঠান চলা কালে শহীদ আবু সাইদের বাবা মকবুল হোসেন সভা মঞ্চে এসে পৌছলে তথ্য উপদেষ্টা তার জন্য নির্ধারিত চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে যান। নিজের চেয়ার আবু সাইদের বাবাকে ছেড়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পরে অন্য একটি চেয়ারের ব্যাবস্থা করা হলে তিনি সেই চেয়ারে বসেন। সেই সাথে প্রধান অতিথির চেয়ারে শহীদ আবু সাইদকে বসিয়ে দেন। পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে তিনি আর প্রধান অতিথির দেয়া নিদৃষ্ট চেয়ারে বসেননি।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেওকে তাকে ক্রেষ্ট উপহার দেয়া হলে তিনি আগে শহীদ আবু সাইদের বাবা মকবুল হোসেনকে ক্রেষ্ট উপহার দেবার পর তাকে দেয়া ক্রেষ্ট গ্রহন করেন। পুরো বিষয়টি বেরোবির সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী তথ্য উপদেষ্ঠাকে ধন্যবাদ ও হাত তালি দিয়ে অভিনন্দন জানান।