ঢাকা ১১:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডুবছে সুনামগঞ্জ, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:৪২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪ ৫২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও অব্যাহত ভারী বর্ষণে সুরমা নদী এবং অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও সড়ক প্লাবিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) ভোরে হুহু করে পানি প্রবেশ করে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হয়। পরে দুপুর ৩টার দিকে বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ৬৫ মিলিমিটার ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৩৯৫ মিলিমিটার।

সুনামগঞ্জ জেলার ১২ উপজেলায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও সবচেয়ে বেশী দোয়ারাবাজার, ছাতক ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা। এছাড়াও সুনামগঞ্জের পৌর এলাকার নয়টি ওয়ার্ডের সব কটিই প্লাবিত হয়েছে। সুনামগঞ্জ শহরের সাথে দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক তাহিরপুর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ইতিমধ্যেই বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

এর ফলে নৌকায় ভরসা করতে হচ্ছে। সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার তেঘরিয়া, পশ্চিম হাজী পাড়া, বড়পাড়, আরপিনগর, ষোলঘর, নবীনগর, জলিল পুর, সুলতান পুর, উকিল পাড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় মানুষের ঘরবাড়ি, ও সড়কে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়াও মধ্য বাজার, পূর্ব বাজার সহ অন্যান্য দোকানপাট পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির আশংকা রয়েছে।

পৌর এলাকাসহ বিভিন্ন উপজেলার নলকূপগুলো পানির নীচে চলে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। হাসঁ মোরগ ও মাছসহ গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য অফিসার সামছুল করিম জানিয়েছেন, বন্যার ফলে ইতিমধ্যেই দুই হাজারের অধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। টাকার অংকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৫০০ কোটি টাকা।

সুনামগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আহমদ নুর জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুরে জরুরী সভা করে পানিবন্দি মানুষের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা ও শুকনো খাবার চিড়া গুড় মোমবাতি দিয়াশলাই পৌছেঁ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইউএনও মৌসুমী মান্নান জানিয়েছেন,৬২টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ জুন) সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

দোয়ারাবাজার ইউএনও মেহের নিগার তনু জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। ১৭ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষদের উদ্ধার করে শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে।

ছাতক ইউএনও গোলাম মোস্তফা মুন্না জানিয়েছেন, উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য উচু জায়গাতে বন্যা কবলিতদের আশ্রয় কেন্দ্র খুলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানিয়েছেন, জেলার ১২ উপজেলার মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলা বেশী প্লাবিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্য উপজেলাও প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৫১৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য জরুরী সভা করে বন্যা কবলিত উপজেলার জন্য ৫ টন জি আর চাল বরাদ্দ দিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ডুবছে সুনামগঞ্জ, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:৪২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪

সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও অব্যাহত ভারী বর্ষণে সুরমা নদী এবং অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও সড়ক প্লাবিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) ভোরে হুহু করে পানি প্রবেশ করে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হয়। পরে দুপুর ৩টার দিকে বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ৬৫ মিলিমিটার ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৩৯৫ মিলিমিটার।

সুনামগঞ্জ জেলার ১২ উপজেলায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও সবচেয়ে বেশী দোয়ারাবাজার, ছাতক ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা। এছাড়াও সুনামগঞ্জের পৌর এলাকার নয়টি ওয়ার্ডের সব কটিই প্লাবিত হয়েছে। সুনামগঞ্জ শহরের সাথে দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক তাহিরপুর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ইতিমধ্যেই বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

এর ফলে নৌকায় ভরসা করতে হচ্ছে। সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার তেঘরিয়া, পশ্চিম হাজী পাড়া, বড়পাড়, আরপিনগর, ষোলঘর, নবীনগর, জলিল পুর, সুলতান পুর, উকিল পাড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় মানুষের ঘরবাড়ি, ও সড়কে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়াও মধ্য বাজার, পূর্ব বাজার সহ অন্যান্য দোকানপাট পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির আশংকা রয়েছে।

পৌর এলাকাসহ বিভিন্ন উপজেলার নলকূপগুলো পানির নীচে চলে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। হাসঁ মোরগ ও মাছসহ গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য অফিসার সামছুল করিম জানিয়েছেন, বন্যার ফলে ইতিমধ্যেই দুই হাজারের অধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। টাকার অংকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৫০০ কোটি টাকা।

সুনামগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আহমদ নুর জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুরে জরুরী সভা করে পানিবন্দি মানুষের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা ও শুকনো খাবার চিড়া গুড় মোমবাতি দিয়াশলাই পৌছেঁ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইউএনও মৌসুমী মান্নান জানিয়েছেন,৬২টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ জুন) সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

দোয়ারাবাজার ইউএনও মেহের নিগার তনু জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। ১৭ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষদের উদ্ধার করে শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে।

ছাতক ইউএনও গোলাম মোস্তফা মুন্না জানিয়েছেন, উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য উচু জায়গাতে বন্যা কবলিতদের আশ্রয় কেন্দ্র খুলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানিয়েছেন, জেলার ১২ উপজেলার মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলা বেশী প্লাবিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্য উপজেলাও প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৫১৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য জরুরী সভা করে বন্যা কবলিত উপজেলার জন্য ৫ টন জি আর চাল বরাদ্দ দিয়েছেন।