ঢাকা ০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্ধশত শক্তিশালী চক্র জড়িত

মাঝরাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় পৌছে যায় শত শত মরা মুরগি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:১৪:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫ ৪৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজধানীর ব্যস্ত জীবনে তিন বেলা বাড়ির রান্না খাওয়ার সুযোগ হয় না। তাই হোটেল-রেস্তোরাঁই ভরসা। অনেকে আবার তিন বেলাই রেস্তোরাঁর ওপর নির্ভরশীল। সেখানে আপনার প্লেটে তুলে দেওয়া হচ্ছে মরা মুরগির রোস্ট। এসব  মাংস মরা মুরগির কিনা তা হয়ত রেস্তোরাঁয় খেতে বসে বোঝার উপায় নেই।

জানা গেছে, রাজধানীসহ সারা দেশের হোটেল রেস্তোরাঁয় দেদারসে বিক্রি হচ্ছে মরা মুরগি। এসব ব্যবসার সঙ্গে অর্ধশত শক্তিশালী চক্র জড়িত। চক্রের সদস্যদের সহযোগিতা করছে স্থানীয় সন্ত্রাসী, পুলিশ ও ডিসিসির বাজার শাখার অসৎ কর্মচারীরা। মাঝে মধ্যে মুরগি ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করলে তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এমনকি সন্ত্রাসীরা পুলিশকে দিয়ে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন দোকানে মারা যাওয়া মুরগিগুলো সস্তা দামে কিনে নিচ্ছে হোটেল ও রোস্তারাঁগুলো। এরপর তা রান্না করে পরিবেশন করা হচ্ছে ভোক্তাদের খাবার টেবিলে। আর এ কাজে জড়িত রয়েছে কিছু অসাধু চক্র, যারা হোটেল ও রেস্তোরাঁয় এই মরা মুরগিগুলো সরবরাহ করছে। অনেকক্ষেত্রে হোটেল কর্তৃপক্ষই জানে না যে, ড্রেসিং করে আনা মাংসগুলো মরা মুরগির। আবার কেউ কেউ জেনেশুনেই বেশি লাভের জন্য কম দামে এই মাংস কিনছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মরা মুরগির মাংসে মারাত্মক রোগব্যাধী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  কারণ, এ মুরগিগুলো নানা রোগের কারণেই মারা যায়। এছাড়া ধর্মীয়ভাবেও মরা পশুর মাংস খাওয়া অনুমোদিত নয়।

শুত্রকার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এসময় মরা মুরগি ফ্রিজে রেখে হোটেল ও রেস্টুরেন্টে সরবরাহের অপরাধে এক ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে কিচেন মার্কেটের মেসার্স আল্লাহর দান চিকেন হাউজের ব্যবসায়ী সুমনকে এই জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি অভিযুক্তকে থানায় সোপর্দ করা হয়। অভিযানে শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, শিক্ষার্থীদের নিয়ে দেশব্যাপী একযোগে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বাজারে অরো চারটি টিম তদারকি করছে। আমি কারওয়ান বাজারে কিচেন মার্কেটে দেখলাম মেসার্স আল্লাহর দান চিকেন হাউজ ১৮৫ ও ১৯৩ টাকায় সোনালী মুরগি কেনে। কিন্তু বিক্রি করছে ২৬০টাকা কেজিতে, যেটা অনৈতিক। অতিরিক্ত লাভের প্রবণতা রয়েছে।

তিনি বলেন, মুরগির দোকানে ফ্রিজ থাকার কারণ জানতে চাইলে একজন বলেন, দুর্বল মুরগি প্রসেস করে ফ্রিজে রাখেন। পরে সেগুলো বিভিন্ন হোটেল ও রেস্টুরেন্টে সরবরাহ করেন। কিন্তু আরেকজন বলেছেন, এসব মুরগি বাসায় নিয়ে নিজেরা রান্না করে খান। সবশেষে স্বীকারোক্তি দিলেন, এগুলো আসলে মরা মুরগি এবং বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে সরবরাহ করেন। এ অপরাধে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাসহ জনস্বার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

তথ্যানুযায়ী, ঢাকার তেজগাঁও, কাপ্তান বাজার এবং ফকিরাপুল মুরগির আড়ত থেকে প্রতিদিন দেড় লাখের অধিক মুরগি বিক্রি হয়। এসব মুরগির বেশিরভাগ হোটেল রেস্তোরাঁ, বিপণি বিতান ও বাসাবাড়িতে খাওয়ার জন্য বিক্রি হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে ট্রাকযোগে ঢাকায় আনা হয় মুরগিগুলো। জানা গেছে, ঢাকায় পৌঁছাতে অনেক ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এর মধ্যে ফার্মের মুরগি, যাদের সহনক্ষমতা একেবারেই কম দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে ঢাকায় আসতে মারা যায়। কিছু মারা যায় ট্রাকে চাপাচাপির কারণে। আবার যেসব মুরগির সহনক্ষমতা কম একটু গরমেই হিটস্ট্রোকে এগুলো মারা যায়।

মরা মুরগি বিক্রেতাদের হিসাব মতে, প্রতিদিন ৩ হাজারেরও বেশি মুরগি ঢাকায় আনতে মারা যায়। আবার গরম বেশি পড়লে মরা মুরগির সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। কোনো কোনো মুরগি যেগুলো ৫ থেকে ৭ ঘণ্টা আগে মারা যায় সেগুলোও ঢাকায় আসতে আসতে গন্ধ ছড়ায়।

মুরগি বহনকারী ট্রাক ঢাকায় আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ জনের একটি চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে মুরগি সংগ্রহের কাজে। প্রত্যেক ট্রাকে ১০ থেকে ১৫টি মরা মুরগি পাওয়া যায়। চক্রটি মরা মুরগিগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সংগ্রহ করে আড়তের আড়ালে নিয়ে যায় এবং চামড়া ছাড়িয়ে ফেলে। একবার চামড়া ছাড়িয়ে নিলে কেউ আর বুঝতে পারে না যে মুরগিগুলো মরা ছিল। আবার যেসব মুরগি মরে গন্ধ বের হয় সেগুলোতে লেবুর রস স্প্রে করে পলিথিনে ভরে সরিয়ে ফেলে। এর সাথে আরেকটি চক্র জড়িত যারা তাদের কাছ থেকে মুরগি কিনে নিয়ে যায় উত্তরা, গুলশানসহ রাজধানীর বিভিন্ন হোটেল রেন্টুরেন্ট ও বিপণি বিতানে। ৪০ টাকায় কেনা এসব মুরগি নামি-দামি এসব হোটেল ও বিপণি বিতানে বিক্রি হয় ২শ’ টাকায়। তখন কেউ আর বুঝতে পারে না মুরগিগুলো মরা ছিল। আর না বুঝে অনেকে মরা মুরগি কিনে বাসায় নিয়ে যায়। আবার হোটেলেও খাবার হিসেবে বিক্রি হয়।

প্রতারকরা বিভিন্ন কৌশলে আড়ত থেকে মরা মুরগিগুলো অন্যত্রে সরিয়ে নিচ্ছে। প্রতারক চক্রের এক সদস্য জানায়, প্রায় তিন বছর ধরে ঢাকার নামি-দামি হোটেলগুলোতে মরা মুরগি সাপ্লাই দিয়ে আসছি। এই এলাকার চিহ্নিত কয়েকজন সন্ত্রাসী এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তবে প্রকৃত মুরগি ব্যবসায়ীরা এসব কাজে জড়াচ্ছে না। পুলিশকে প্রতি মাসে টাকা দিতে হচ্ছে। আবার ডিসিসির একাধিক কর্মচারী প্রতারকদের সহযোগিতা করছে।

অতিরিক্ত ভ্যাকসিন, আবহাওয়ার তারতম্য, নাজুক পরিবহন ব্যবস্থাপনাসহ নানা কারণে অনেক মুরগি পথেই মারা যায়। অনেকের অভিযোগ, অসুস্থ-মরা মুরগি রাত পেরিয়ে দিনের আলো ফোটার পর চলে যায় খাবার টেবিলে।

কাপ্তানবাজারে দেখা গেলো, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা মরে যাওয়া মুরগি ময়লার ট্রলিতে সংগ্রহ করছেন। পরে মধ্যরাতে বেরিয়ে এলো গা শিউরে উঠা তথ্য।

সালাম মিয়া নামে একজন জানান, রোগা মুরগী, অসুস্থ। এগুলো ৮০ টাকা ১০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। মেসে যারা খাওয়ায় তারা এগুলো নেয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

অর্ধশত শক্তিশালী চক্র জড়িত

মাঝরাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় পৌছে যায় শত শত মরা মুরগি

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:১৪:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

রাজধানীর ব্যস্ত জীবনে তিন বেলা বাড়ির রান্না খাওয়ার সুযোগ হয় না। তাই হোটেল-রেস্তোরাঁই ভরসা। অনেকে আবার তিন বেলাই রেস্তোরাঁর ওপর নির্ভরশীল। সেখানে আপনার প্লেটে তুলে দেওয়া হচ্ছে মরা মুরগির রোস্ট। এসব  মাংস মরা মুরগির কিনা তা হয়ত রেস্তোরাঁয় খেতে বসে বোঝার উপায় নেই।

জানা গেছে, রাজধানীসহ সারা দেশের হোটেল রেস্তোরাঁয় দেদারসে বিক্রি হচ্ছে মরা মুরগি। এসব ব্যবসার সঙ্গে অর্ধশত শক্তিশালী চক্র জড়িত। চক্রের সদস্যদের সহযোগিতা করছে স্থানীয় সন্ত্রাসী, পুলিশ ও ডিসিসির বাজার শাখার অসৎ কর্মচারীরা। মাঝে মধ্যে মুরগি ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করলে তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এমনকি সন্ত্রাসীরা পুলিশকে দিয়ে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন দোকানে মারা যাওয়া মুরগিগুলো সস্তা দামে কিনে নিচ্ছে হোটেল ও রোস্তারাঁগুলো। এরপর তা রান্না করে পরিবেশন করা হচ্ছে ভোক্তাদের খাবার টেবিলে। আর এ কাজে জড়িত রয়েছে কিছু অসাধু চক্র, যারা হোটেল ও রেস্তোরাঁয় এই মরা মুরগিগুলো সরবরাহ করছে। অনেকক্ষেত্রে হোটেল কর্তৃপক্ষই জানে না যে, ড্রেসিং করে আনা মাংসগুলো মরা মুরগির। আবার কেউ কেউ জেনেশুনেই বেশি লাভের জন্য কম দামে এই মাংস কিনছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মরা মুরগির মাংসে মারাত্মক রোগব্যাধী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  কারণ, এ মুরগিগুলো নানা রোগের কারণেই মারা যায়। এছাড়া ধর্মীয়ভাবেও মরা পশুর মাংস খাওয়া অনুমোদিত নয়।

শুত্রকার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এসময় মরা মুরগি ফ্রিজে রেখে হোটেল ও রেস্টুরেন্টে সরবরাহের অপরাধে এক ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে কিচেন মার্কেটের মেসার্স আল্লাহর দান চিকেন হাউজের ব্যবসায়ী সুমনকে এই জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি অভিযুক্তকে থানায় সোপর্দ করা হয়। অভিযানে শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, শিক্ষার্থীদের নিয়ে দেশব্যাপী একযোগে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বাজারে অরো চারটি টিম তদারকি করছে। আমি কারওয়ান বাজারে কিচেন মার্কেটে দেখলাম মেসার্স আল্লাহর দান চিকেন হাউজ ১৮৫ ও ১৯৩ টাকায় সোনালী মুরগি কেনে। কিন্তু বিক্রি করছে ২৬০টাকা কেজিতে, যেটা অনৈতিক। অতিরিক্ত লাভের প্রবণতা রয়েছে।

তিনি বলেন, মুরগির দোকানে ফ্রিজ থাকার কারণ জানতে চাইলে একজন বলেন, দুর্বল মুরগি প্রসেস করে ফ্রিজে রাখেন। পরে সেগুলো বিভিন্ন হোটেল ও রেস্টুরেন্টে সরবরাহ করেন। কিন্তু আরেকজন বলেছেন, এসব মুরগি বাসায় নিয়ে নিজেরা রান্না করে খান। সবশেষে স্বীকারোক্তি দিলেন, এগুলো আসলে মরা মুরগি এবং বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে সরবরাহ করেন। এ অপরাধে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাসহ জনস্বার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

তথ্যানুযায়ী, ঢাকার তেজগাঁও, কাপ্তান বাজার এবং ফকিরাপুল মুরগির আড়ত থেকে প্রতিদিন দেড় লাখের অধিক মুরগি বিক্রি হয়। এসব মুরগির বেশিরভাগ হোটেল রেস্তোরাঁ, বিপণি বিতান ও বাসাবাড়িতে খাওয়ার জন্য বিক্রি হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে ট্রাকযোগে ঢাকায় আনা হয় মুরগিগুলো। জানা গেছে, ঢাকায় পৌঁছাতে অনেক ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এর মধ্যে ফার্মের মুরগি, যাদের সহনক্ষমতা একেবারেই কম দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে ঢাকায় আসতে মারা যায়। কিছু মারা যায় ট্রাকে চাপাচাপির কারণে। আবার যেসব মুরগির সহনক্ষমতা কম একটু গরমেই হিটস্ট্রোকে এগুলো মারা যায়।

মরা মুরগি বিক্রেতাদের হিসাব মতে, প্রতিদিন ৩ হাজারেরও বেশি মুরগি ঢাকায় আনতে মারা যায়। আবার গরম বেশি পড়লে মরা মুরগির সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। কোনো কোনো মুরগি যেগুলো ৫ থেকে ৭ ঘণ্টা আগে মারা যায় সেগুলোও ঢাকায় আসতে আসতে গন্ধ ছড়ায়।

মুরগি বহনকারী ট্রাক ঢাকায় আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ জনের একটি চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে মুরগি সংগ্রহের কাজে। প্রত্যেক ট্রাকে ১০ থেকে ১৫টি মরা মুরগি পাওয়া যায়। চক্রটি মরা মুরগিগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সংগ্রহ করে আড়তের আড়ালে নিয়ে যায় এবং চামড়া ছাড়িয়ে ফেলে। একবার চামড়া ছাড়িয়ে নিলে কেউ আর বুঝতে পারে না যে মুরগিগুলো মরা ছিল। আবার যেসব মুরগি মরে গন্ধ বের হয় সেগুলোতে লেবুর রস স্প্রে করে পলিথিনে ভরে সরিয়ে ফেলে। এর সাথে আরেকটি চক্র জড়িত যারা তাদের কাছ থেকে মুরগি কিনে নিয়ে যায় উত্তরা, গুলশানসহ রাজধানীর বিভিন্ন হোটেল রেন্টুরেন্ট ও বিপণি বিতানে। ৪০ টাকায় কেনা এসব মুরগি নামি-দামি এসব হোটেল ও বিপণি বিতানে বিক্রি হয় ২শ’ টাকায়। তখন কেউ আর বুঝতে পারে না মুরগিগুলো মরা ছিল। আর না বুঝে অনেকে মরা মুরগি কিনে বাসায় নিয়ে যায়। আবার হোটেলেও খাবার হিসেবে বিক্রি হয়।

প্রতারকরা বিভিন্ন কৌশলে আড়ত থেকে মরা মুরগিগুলো অন্যত্রে সরিয়ে নিচ্ছে। প্রতারক চক্রের এক সদস্য জানায়, প্রায় তিন বছর ধরে ঢাকার নামি-দামি হোটেলগুলোতে মরা মুরগি সাপ্লাই দিয়ে আসছি। এই এলাকার চিহ্নিত কয়েকজন সন্ত্রাসী এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তবে প্রকৃত মুরগি ব্যবসায়ীরা এসব কাজে জড়াচ্ছে না। পুলিশকে প্রতি মাসে টাকা দিতে হচ্ছে। আবার ডিসিসির একাধিক কর্মচারী প্রতারকদের সহযোগিতা করছে।

অতিরিক্ত ভ্যাকসিন, আবহাওয়ার তারতম্য, নাজুক পরিবহন ব্যবস্থাপনাসহ নানা কারণে অনেক মুরগি পথেই মারা যায়। অনেকের অভিযোগ, অসুস্থ-মরা মুরগি রাত পেরিয়ে দিনের আলো ফোটার পর চলে যায় খাবার টেবিলে।

কাপ্তানবাজারে দেখা গেলো, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা মরে যাওয়া মুরগি ময়লার ট্রলিতে সংগ্রহ করছেন। পরে মধ্যরাতে বেরিয়ে এলো গা শিউরে উঠা তথ্য।

সালাম মিয়া নামে একজন জানান, রোগা মুরগী, অসুস্থ। এগুলো ৮০ টাকা ১০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। মেসে যারা খাওয়ায় তারা এগুলো নেয়।