ঢাকা ০১:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকা অচল যানজটে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:০৫:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ১০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে রাজধানীর মহাখালীতে সড়কে অবস্থান নেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। দিনভর আন্দোলনের ফলে দেখা দেয় তীব্র যানজট। কার্যত অচল হয়ে পড়ে রাজধানী। এতে দুর্ভোগের শিকার হন সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার দাবিতে রাজধানীর মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার বেলা ১১টা থেকে সড়কে বিক্ষোভ করেন তারা। এর ফলে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও সকালে ‘উপক‚ল এক্সপ্রেস’ ট্রেনে আন্দোলনকারীদের হামলায় শিশুসহ বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। এ সময় শিক্ষার্থীরা মহাখালী এলাকার দুটি ট্রেন আটকে দেন। ওই ট্রেন দুটি হলো জামালপুরের তারাকান্দিগামী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকামুখী বনলতা এক্সপ্রেস।

এদিকে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধের কারণে সময় যত গড়ায় শহরজুড়ে যানজট তত তীব্র হয়। বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন থেকে নেমে শত শত মানুষকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। মহাখালী আইসিডিডিআর, বি হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসেন মমতাজ উদ্দিন নামে এক নারী। তিনি বলেন, উত্তরা থেকে মেয়েকে নিয়ে হাসপাতাল আসতে দুই ঘণ্টা লেগেছে। এমন পরিস্থিতে আমারই অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে।

মহাখালীতে প্রাইভেটকার নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বসে আছেন ফাহিমুর রহমান নামে ব্যক্তি। তিনি বলেন, দেশে এখন যার যা ইচ্ছে তাই করছে। আর সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কাজে একটি জায়গায় যাচ্ছিলাম। এখানেই দুই ঘণ্টা ধরে বসে আছি। গাড়ি ফেলে যেতেও পারছি না। এতে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে গেলো।

বনানীর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সরোয়ার বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রভাবে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তাদের আন্দোলনের কারণে মহাখালী, বনানী ও জাহাঙ্গীর গেট এলাকায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। এছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, উপক‚ল এক্সপ্রেস ট্রেনটি মহাখালী লেভেল ক্রসিং অতিক্রম করার সময় আন্দোলন থেকে ট্রেনটিতে হামলা চালানো হয়। এতে ট্রেনের জানালার গøাস ভেঙে যায়। বিক্ষোভ পরিস্থিতির কারণে ঢাকা সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

আরিফ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আমরা কয়েক দিন থেকে আন্দোলন করে আসছি। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বিকেল ৪টা পর্যন্ত আমাদের সড়কে থাকার কথা ছিলো। আমরা ৪টা পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করেছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয় আলোচনার জন্য গেছেন। তারা সচিবালয় থেকে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আসবেন। তবে আমরা ঘোষণা অনুযায়ী সড়কটি ছেড়ে দিয়েছি।
অপরদিকে, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে কয়েক শ’ শিক্ষার্থী সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে মহাখালী ওভারব্রিজের নিচের রেললাইনে অবস্থান নেন।

অবরোধ চলাকালে নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর ট্রেন উপক‚ল এক্সপ্রেস মহাখালী রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় সেটি থামানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ট্রেনটি না থেমে গতি কমিয়ে চলতে থাকলে সেটি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে ট্রেনের কয়েকটি জানালার কাচ ভেঙে গেছে। এ সময় ট্রেনের ছাদে কয়েকজনকে উঠে পড়তে দেখা যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ঢাকা অচল যানজটে

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:০৫:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে রাজধানীর মহাখালীতে সড়কে অবস্থান নেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। দিনভর আন্দোলনের ফলে দেখা দেয় তীব্র যানজট। কার্যত অচল হয়ে পড়ে রাজধানী। এতে দুর্ভোগের শিকার হন সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার দাবিতে রাজধানীর মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার বেলা ১১টা থেকে সড়কে বিক্ষোভ করেন তারা। এর ফলে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও সকালে ‘উপক‚ল এক্সপ্রেস’ ট্রেনে আন্দোলনকারীদের হামলায় শিশুসহ বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। এ সময় শিক্ষার্থীরা মহাখালী এলাকার দুটি ট্রেন আটকে দেন। ওই ট্রেন দুটি হলো জামালপুরের তারাকান্দিগামী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকামুখী বনলতা এক্সপ্রেস।

এদিকে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধের কারণে সময় যত গড়ায় শহরজুড়ে যানজট তত তীব্র হয়। বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন থেকে নেমে শত শত মানুষকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। মহাখালী আইসিডিডিআর, বি হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসেন মমতাজ উদ্দিন নামে এক নারী। তিনি বলেন, উত্তরা থেকে মেয়েকে নিয়ে হাসপাতাল আসতে দুই ঘণ্টা লেগেছে। এমন পরিস্থিতে আমারই অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে।

মহাখালীতে প্রাইভেটকার নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বসে আছেন ফাহিমুর রহমান নামে ব্যক্তি। তিনি বলেন, দেশে এখন যার যা ইচ্ছে তাই করছে। আর সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কাজে একটি জায়গায় যাচ্ছিলাম। এখানেই দুই ঘণ্টা ধরে বসে আছি। গাড়ি ফেলে যেতেও পারছি না। এতে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে গেলো।

বনানীর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সরোয়ার বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রভাবে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তাদের আন্দোলনের কারণে মহাখালী, বনানী ও জাহাঙ্গীর গেট এলাকায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। এছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, উপক‚ল এক্সপ্রেস ট্রেনটি মহাখালী লেভেল ক্রসিং অতিক্রম করার সময় আন্দোলন থেকে ট্রেনটিতে হামলা চালানো হয়। এতে ট্রেনের জানালার গøাস ভেঙে যায়। বিক্ষোভ পরিস্থিতির কারণে ঢাকা সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

আরিফ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আমরা কয়েক দিন থেকে আন্দোলন করে আসছি। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বিকেল ৪টা পর্যন্ত আমাদের সড়কে থাকার কথা ছিলো। আমরা ৪টা পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করেছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয় আলোচনার জন্য গেছেন। তারা সচিবালয় থেকে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আসবেন। তবে আমরা ঘোষণা অনুযায়ী সড়কটি ছেড়ে দিয়েছি।
অপরদিকে, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে কয়েক শ’ শিক্ষার্থী সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে মহাখালী ওভারব্রিজের নিচের রেললাইনে অবস্থান নেন।

অবরোধ চলাকালে নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর ট্রেন উপক‚ল এক্সপ্রেস মহাখালী রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় সেটি থামানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ট্রেনটি না থেমে গতি কমিয়ে চলতে থাকলে সেটি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে ট্রেনের কয়েকটি জানালার কাচ ভেঙে গেছে। এ সময় ট্রেনের ছাদে কয়েকজনকে উঠে পড়তে দেখা যায়।