ঢাকা ০১:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাঁচ বছর ডেঙ্গুতে কেউ মারা যায়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:০৩:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ২৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি নভেম্বর মাসের ১৭ দিনে ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর মৃত্যুর সংখ্যা ৪১৫ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৭৯ হাজার ৯৮৪ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে গত অক্টোবর মাসে ভর্তি হয়েছে ৩০ হাজার ৮৭৯ জন। আর চলতি মাসে ভর্তি হয়েছে ১৮ হাজার ১৬৭ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সীরা। এ সংখ্যা ১২ হাজার ১৭৮। তবে ডেঙ্গুতে বেশি মৃত্যু ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের। এ বয়সী ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে। চলতি বছর এই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ রোগী ভর্তি হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকার হাসপাতালগুলোয়। এ সংখ্যা ১৭ হাজার ৫৮। এরপর রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। সেখানে রোগীর সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার ৪৮৬। এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ১৮৩ রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেন এলাকায়। এরপর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৬৯ জন।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত নারী ও পুরুষের মৃত্যু প্রায় সমান, যথাক্রমে ২০৮ ও ২০৭ জন। সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৮৩ জনের। যা মোট মৃত্যুর ৪৪ শতাংশ। এরপর ঢাকা উত্তর সিটিতে ৬৯, বরিশাল বিভাগে ৪৭, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪২, ঢাকা বিভাগে ৩২, খুলনা বিভাগে ২১, ময়মনসিংহ বিভাগে ১২, রাজশাহী বিভাগে পাঁচ, রংপুর বিভাগে দুই এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বাইরে একজন করে মারা গেছে।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৮৯৩ পুরুষ ও ৪৯৬ নারী। এর মধ্যে শূন্য থেকে ১৫ বছর বয়সী ১৬৯ শিশু রয়েছে।

এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৭৯ হাজার ৯৮৪ জন। তাদের মধ্যে ৫০ হাজার ৫০৯ জন বা ৬৩ শতাংশ পুরুষ ও ২৯ হাজার ৪৭৫ জন বা ৩৭ শতাংশ নারী। সর্বোচ্চ রোগী পাওয়া গেছে ঢাকার দুই সিটিতে। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটিতে ভর্তি হয়েছে ১৭ হাজার ৫৬ জন ও উত্তর সিটিতে ১৪ হাজার ৪৮৬ জন।

২০০০ সালে দেশে ডেঙ্গুর প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। গত ২৪ বছরের ইতিহাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নেয় ২০২৩ সালে। সে বছর ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। মারা যায় এক হাজার ৭০৫ জন। রোগী ও মৃত্যুর এই সংখ্যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল ২০২২ সালে ২৮১ জন। সে বছর রোগী ছিল ৬২ হাজার ৩৮২ জন, যা এ বছরের আগে পর্যন্ত ছিল তৃতীয় সর্বোচ্চ রোগী। কিন্তু এ বছর এরই মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ রোগীর রেকর্ড হয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭৯ হাজার ছাড়িয়েছে।

চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছে। এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৪১৫ জন। এ বছরের আগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল ২০২২ সালে ২৮১ জনের। সেটি এখন তৃতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। ডেঙ্গুতে চতুর্থ সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল ২০১৯ সালে ১৭৯ জন ও সে বছর রোগী ছিল এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন।

এরপর ২০২১ সালে ১০৫, ২০০০ সালে ৯৩, ২০০২ সালে ৫৮ ও ২০০১ সালে ৪৪ জন ডেঙ্গুতে মারা যায়। বাকি বছরগুলোর মধ্যে পাঁচ বছর ডেঙ্গুতে কেউ মারা যায়নি। অন্য বছরগুলোতে ১-২৬ জনের মধ্যে মৃত্যু ওঠানামা করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

পাঁচ বছর ডেঙ্গুতে কেউ মারা যায়নি

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:০৩:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি নভেম্বর মাসের ১৭ দিনে ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর মৃত্যুর সংখ্যা ৪১৫ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৭৯ হাজার ৯৮৪ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে গত অক্টোবর মাসে ভর্তি হয়েছে ৩০ হাজার ৮৭৯ জন। আর চলতি মাসে ভর্তি হয়েছে ১৮ হাজার ১৬৭ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সীরা। এ সংখ্যা ১২ হাজার ১৭৮। তবে ডেঙ্গুতে বেশি মৃত্যু ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের। এ বয়সী ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে। চলতি বছর এই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ রোগী ভর্তি হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকার হাসপাতালগুলোয়। এ সংখ্যা ১৭ হাজার ৫৮। এরপর রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। সেখানে রোগীর সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার ৪৮৬। এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ১৮৩ রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেন এলাকায়। এরপর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৬৯ জন।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত নারী ও পুরুষের মৃত্যু প্রায় সমান, যথাক্রমে ২০৮ ও ২০৭ জন। সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৮৩ জনের। যা মোট মৃত্যুর ৪৪ শতাংশ। এরপর ঢাকা উত্তর সিটিতে ৬৯, বরিশাল বিভাগে ৪৭, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪২, ঢাকা বিভাগে ৩২, খুলনা বিভাগে ২১, ময়মনসিংহ বিভাগে ১২, রাজশাহী বিভাগে পাঁচ, রংপুর বিভাগে দুই এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বাইরে একজন করে মারা গেছে।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৮৯৩ পুরুষ ও ৪৯৬ নারী। এর মধ্যে শূন্য থেকে ১৫ বছর বয়সী ১৬৯ শিশু রয়েছে।

এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৭৯ হাজার ৯৮৪ জন। তাদের মধ্যে ৫০ হাজার ৫০৯ জন বা ৬৩ শতাংশ পুরুষ ও ২৯ হাজার ৪৭৫ জন বা ৩৭ শতাংশ নারী। সর্বোচ্চ রোগী পাওয়া গেছে ঢাকার দুই সিটিতে। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটিতে ভর্তি হয়েছে ১৭ হাজার ৫৬ জন ও উত্তর সিটিতে ১৪ হাজার ৪৮৬ জন।

২০০০ সালে দেশে ডেঙ্গুর প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। গত ২৪ বছরের ইতিহাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নেয় ২০২৩ সালে। সে বছর ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। মারা যায় এক হাজার ৭০৫ জন। রোগী ও মৃত্যুর এই সংখ্যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল ২০২২ সালে ২৮১ জন। সে বছর রোগী ছিল ৬২ হাজার ৩৮২ জন, যা এ বছরের আগে পর্যন্ত ছিল তৃতীয় সর্বোচ্চ রোগী। কিন্তু এ বছর এরই মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ রোগীর রেকর্ড হয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭৯ হাজার ছাড়িয়েছে।

চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছে। এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৪১৫ জন। এ বছরের আগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল ২০২২ সালে ২৮১ জনের। সেটি এখন তৃতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। ডেঙ্গুতে চতুর্থ সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল ২০১৯ সালে ১৭৯ জন ও সে বছর রোগী ছিল এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন।

এরপর ২০২১ সালে ১০৫, ২০০০ সালে ৯৩, ২০০২ সালে ৫৮ ও ২০০১ সালে ৪৪ জন ডেঙ্গুতে মারা যায়। বাকি বছরগুলোর মধ্যে পাঁচ বছর ডেঙ্গুতে কেউ মারা যায়নি। অন্য বছরগুলোতে ১-২৬ জনের মধ্যে মৃত্যু ওঠানামা করেছে।