অবৈধ দখলদার কর্তৃক হামলার প্রতিবাদে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মানববন্ধন
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:০২:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ৫১ বার পড়া হয়েছে
নীলফামারী’র বুড়িতিস্তা ব্যারেজের উজানে জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে বাঁধাদানকারী অবৈধ দখলদার কর্তৃক হত্যার উদ্দেশে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও আন্তবর্তীকালিন সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান কর্মসুচী পালন করেছে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডে।
সোমবার (১৪ অক্টোম্বর) দুপুরে নীলফামারী জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে অতুষ্ঠিত হয়।
এ মানববন্ধনে উত্তরা ল রংপুর বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রংপুর সার্কেল-১ আহসান হাবিব, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রংপুর সার্কেল-২ মিজানুর রহমান, তত্ববধায়ক প্রকৌশলী ঠাকুরগাঁও সার্কেল কৃষ্ণকমল চন্দ্র সরকার ,নীলফামারী পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমানসহ রংপুর জোনের সকল নির্বাহী প্রকৌশলী, উপ-বিভগীয প্রকৌশলী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেয়।
এ মানববন্ধনে বক্তরা বুড়িতিস্তার পুনঃখনন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে বাঁধাদানকারী অবৈধ দখলদার ও হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও প্রকল্প বাস্তবায়নে নিরাপত্তার দাবী জানান তারা। মানববন্ধন কর্মসুচী পালন শেষে নীলফামারী জেলা প্রশাসক নায়িরুজ্জামানের মাধ্যমে অন্তবর্তীকালিন সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা ড.ইউনুসের বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন তারা।
প্রধান উপদেষ্ঠাকে দেয়া স্বারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে: অসংখ্য নদ-নদীর বাংলাদেশ।এর মধ্যে ৭’শত নদ-নদী র অস্তিত রয়েছে।এসব নদ-নদীর ৫৪ টি উৎস দ্বার ভারত থেকে আর ৩টি নদী মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।নীলফামারী’র ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার মানচিত্র অবস্থিত বুড়িতিস্তা।এই অববাহিকা বুড়িতিস্তার উৎস দ্বার প্রতিবেশী দেশ ভারতের কুচবিহার জেলার মেকলিগঞ্জ থানার সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশ সীমান্তের নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার পৃর্বছাতণাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্ট দিয়ে প্রবেশ করে ৬৯ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে তিস্তা নদীতে মিলিত হয়েছে।বুড়িতিস্তা নদীতে ব্যারেজ নির্মাণ করে পানির সমতা বৃদ্ধি করে প্রধান খাল ও শাখা খাল সমুহের মাধ্যমে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে গ্রাভিটি সেচ পদ্ধতিতে আমন মৌসুমে প্রকল্প এলাকায় সম্পূরক সেচ প্রদান করা হয়। এই সেচ প্রকল্প এলাকার কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নে এ সেচ কার্যাক্রম ও সেচ প্রদানের মাধ্যমে অধিক খাদ্য উৎপাদন করাই প্রকল্পের মুল উদ্দেশ্য।
বুড়িতিস্তা সেচ প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৯৬০ সালে।এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ১৯৬৭ সালে।তিস্তা সেচ প্রকল্পের পাইলট প্রকল্প হিসাবে বুড়িতিস্তা সেচ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়।১৯৬৮ সালে খরিফ-২ মৌসুমে প্রকল্পের সেচ কার্যক্রম শুরু করা হয়।
তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পূর্নবাসন ও সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১২১৭ একর (২৭০হেক্টর) আয়তনের জলাধারের মধ্যে প্রথম ধাপে ৬৬৭ একর জলাধার পুনঃখনন করা হবে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কাজ সমুহ বাস্তবায়িত হলে জলাধারের পানি ব্যবহার করে ৫ হাজার ৫শত (২২৩২ হেক্টর) জমিতে আমন-বোরো মৌসুমে কৃষকরা নিরাবিচ্ছিন্ন ভাবে সেচের পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে প্রতি বছর প্রায় ২৬ হাজার মেট্রিকটন ফসল উৎপাদন হবে। যার বাজার মুল্যে প্রায় ৭২ কোটি টাকা।এ ফসল উৎপাদনে জ্বালানী সাশ্রয় হবে প্রায় ১২ কোটি টাকা।
ভুপরিস্থ উর্বব পানি গ্রাভিটি ইরিগেশন পদ্ধতিতে ব্যবহার হওয়ায় প্রতি বছর অতিরিক্ত প্রায় ১২ কোটি ফসল উৎপাদন হবে।জ্বালানি খরচ সাশ্রয় হবে ২২০ কোটি টাকা এবং রাসায়নিক সার ব্যবহার না করায় সাশ্রয় হবে প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা। তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পূর্নবাসন ও সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক অধিগ্রহনকৃত ১২১৭ একর রিজার্ভার এর মধ্যে ২৭০ হেক্টর (৬৬৭একর) পুর্রঃখননের জন্য গ্রহন করা হয়েছে।
প্রকল্পটির আওতায় জলাধারটি গড়ে ৯-১০ পুট গভীরতায় থননের মাধ্যমে পানির ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ইতোমধ্যে পাঁচটি প্যাকেজের ই-জিপি (ওটিএম) পদ্ধতিতে দরপত্র আহবানপূর্বক ২০২২৩ সালের ১০ আগষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।বর্তমানে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। বুড়িতিস্তা সেচ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অবৈধ দখলদারদের বাঁধা প্রদান ও হামলারকারীদের বিরুদ্ধে নীলফামারী জলঢাকা থানায় ১টি ,ডিমলা থানায় ৪টি ও ডিমলা উপজেলা আমলী আদালতে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা গুলো বিচারাধীন রয়েছে।