ঢাকা ০৮:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গরমে জীবন হাঁসফাঁস, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী

আজিজুল হক সরকার,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:২৫:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ৮৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দিনাজপুরসহ সারা উত্তরাঞ্চলে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। এতে অনেকে জ্বর, নিউমেনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এরমধ্যে বেশি অসুস্থ হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। এই গরমে তাদের বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে দেখা যায়,হাসপাতালে বেড ফাঁকা নেই। জরুরী বিভাগ এবং বহির্বিভাগে রোগীর ব্যাপক চাপ। চিকিৎসকদেরও সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমে অসুস্থ হয়ে সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়ায়সহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন অনেকেই।

প্রখর রোদ আর ভ্যাপসা গরমে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন কর্মজীবী মানুষ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তাপদাহ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা বেড়েছে ঠান্ডা পানীয় গুলোর। ফুটপাতে দাঁড়িয়ে শরবত,ডাবের পানি,আখের রস খেয়ে শরীর জুড়িয়ে নিচ্ছেন অনেকে। কেউ কেউ ছায়াযুক্ত স্থানে বিশ্রাম করছেন। প্রচন্ড তাপদাহের কারণে শহরের সড়কগুলোতেও মানুষের উপস্থিতিও ছিল কম।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর দুইটা পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে বিভিন্ন রোগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪৮৭ জন রোগী। জরুরী বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯৪ জন। ডায়রিয়া রোগে ভর্তি রয়েছেন ১০ জন রোগী।

বৃহস্পতিবার (১৮এপ্রিল) দুপুর দুইটা পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে বিভিন্ন রোগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫৫০ জন, জরুরী বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯৮ জন। ডায়রিয়া রোগে ভর্তি রয়েছেন ১৪ জন রোগী। আলট্রাসনো পরীক্ষা করেছেন ৩৫ জন রোগী।

আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভার.)ডা. মো. সারোয়ার হোসেন বলেন, ইদের পর প্রচন্ড গরমে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। অনেকে পেটের নানা সমস্যা নিয়ে আসছেন। তীব্র গরমে গুরুপাক খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত। বেশি করে পানি পান করতে হবে। ঠন্ডা জাতীয় পানীয় বিশেষ করে লেবুর শরবত,ডাবের পানি বেশি করে পান করতে হবে।এসময় তাপ এড়িয়ে ঠান্ডা স্থানে থাকতে হবে,সেইসাথে শিশু এবং বয়স্কদের বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। সামনের দিনগুলোয় মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে।

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টা পর্যন্ত দিনাজপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে৩৬দশমিক ১ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বুধবার ছিল ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তিনি বলেন,বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকার কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহে তাপপ্রবাাহ আরও বাড়তে পারে। এরমধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই।

পৌর শহরের নিমতলা মোড় এলাকায় ভ্যান-রিকশা চালক মাসুদ রানা,সাইদুর রহমান ও গনেশ সাহা বলেন, ভ্যাপসা গরমে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। যাত্রীও তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। রোদের কারণে রাস্তায়থাকাই মুশকিল।

বারাই পাড়া গ্রামে জমিতেকাজ করা শ্রমিক মকছেদ আলী বলেন, কড়া রোদ, তিব্র গরমে কাজ করতে পারছি না। তাই কাজের ফাঁকে ফাঁকে গাছের নিচে একটু বিশ্রাম নিচ্ছি। রোজার পর বেশি কাজ করার জন্য যে পরিকল্পনা করেছিলাম তা ভেস্তে যাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

গরমে জীবন হাঁসফাঁস, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:২৫:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

দিনাজপুরসহ সারা উত্তরাঞ্চলে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। এতে অনেকে জ্বর, নিউমেনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এরমধ্যে বেশি অসুস্থ হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। এই গরমে তাদের বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে দেখা যায়,হাসপাতালে বেড ফাঁকা নেই। জরুরী বিভাগ এবং বহির্বিভাগে রোগীর ব্যাপক চাপ। চিকিৎসকদেরও সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমে অসুস্থ হয়ে সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়ায়সহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন অনেকেই।

প্রখর রোদ আর ভ্যাপসা গরমে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন কর্মজীবী মানুষ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তাপদাহ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা বেড়েছে ঠান্ডা পানীয় গুলোর। ফুটপাতে দাঁড়িয়ে শরবত,ডাবের পানি,আখের রস খেয়ে শরীর জুড়িয়ে নিচ্ছেন অনেকে। কেউ কেউ ছায়াযুক্ত স্থানে বিশ্রাম করছেন। প্রচন্ড তাপদাহের কারণে শহরের সড়কগুলোতেও মানুষের উপস্থিতিও ছিল কম।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর দুইটা পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে বিভিন্ন রোগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪৮৭ জন রোগী। জরুরী বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯৪ জন। ডায়রিয়া রোগে ভর্তি রয়েছেন ১০ জন রোগী।

বৃহস্পতিবার (১৮এপ্রিল) দুপুর দুইটা পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে বিভিন্ন রোগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫৫০ জন, জরুরী বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯৮ জন। ডায়রিয়া রোগে ভর্তি রয়েছেন ১৪ জন রোগী। আলট্রাসনো পরীক্ষা করেছেন ৩৫ জন রোগী।

আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভার.)ডা. মো. সারোয়ার হোসেন বলেন, ইদের পর প্রচন্ড গরমে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। অনেকে পেটের নানা সমস্যা নিয়ে আসছেন। তীব্র গরমে গুরুপাক খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত। বেশি করে পানি পান করতে হবে। ঠন্ডা জাতীয় পানীয় বিশেষ করে লেবুর শরবত,ডাবের পানি বেশি করে পান করতে হবে।এসময় তাপ এড়িয়ে ঠান্ডা স্থানে থাকতে হবে,সেইসাথে শিশু এবং বয়স্কদের বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। সামনের দিনগুলোয় মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে।

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টা পর্যন্ত দিনাজপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে৩৬দশমিক ১ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বুধবার ছিল ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তিনি বলেন,বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকার কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহে তাপপ্রবাাহ আরও বাড়তে পারে। এরমধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই।

পৌর শহরের নিমতলা মোড় এলাকায় ভ্যান-রিকশা চালক মাসুদ রানা,সাইদুর রহমান ও গনেশ সাহা বলেন, ভ্যাপসা গরমে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। যাত্রীও তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। রোদের কারণে রাস্তায়থাকাই মুশকিল।

বারাই পাড়া গ্রামে জমিতেকাজ করা শ্রমিক মকছেদ আলী বলেন, কড়া রোদ, তিব্র গরমে কাজ করতে পারছি না। তাই কাজের ফাঁকে ফাঁকে গাছের নিচে একটু বিশ্রাম নিচ্ছি। রোজার পর বেশি কাজ করার জন্য যে পরিকল্পনা করেছিলাম তা ভেস্তে যাচ্ছে।