ঢাকা ০২:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জনস্বার্থে কাজ করার আহবান প্রধান উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:৪৫:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫ ৩২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জনস্বার্থে কাজ করার ব্রত নিয়ে দেশবাসীকে সমাজসেবায় এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২৫ উপলক্ষে সমাজ সেবা অধিদপ্তর আয়োজিত ওয়াকাথন ও সমাজ সেবা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা যদি অল্প অল্প করে নিজের স্বার্থের পাশাপাশি পরের স্বার্থে কাজ করতে পারতাম এবং অপরের জন্য কিছু করার চিন্তা মাথায় ঢুকাতে পারতাম তাহলে যে সমস্যা আমাদের রয়েছে তা সমাধানে কারোর মুখাপেক্ষ হতে হতো না। সমাজসেবা দিবসে সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চায় আমাদের মধ্যে পরের স্বার্থে কাজ করার যে শক্তি রয়েছে, সেটাকে যেন জাগিয়ে তুলতে পারি। উন্মোচন করতে পারি। ব্যক্তি এবং প্রতি পরিবার থেকে এই ব্রত গ্রহণ করলে আমরা সফল হবো।

তিনি দৈনন্দিন জীবনে জনস্বার্থে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তোলার আহবান জানান। সমাজে সেবামূলক কাজ করা শুধু সরকারের একার দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অনেকের ভুল ধারণা ব্যক্তি পর্যায়ে আমাদের কাজ হলো কেবল টাকা-পয়সা রোজগার করা। নিজের স্বার্থে কাজ করা। সমাজসেবা সরকারের দায়িত্ব – এটা ভুল ধারণা। ব্যক্তির যে শক্তি আছে সেই শক্তির কাছে সরকারের শক্তি একেবারে নস্যি। মোটেই তুলনা করা যায় না। আমাদের এই প্রচণ্ড শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে হবে।

সামাজিক ব্যবসা জনস্বার্থের কাজের ক্ষেত্রে বড় মাধ্যম হতে পারে এমন মন্তব্য করে সরকার প্রধান বলেন, ‘অন্যের স্বার্থ বা পরের দুঃখদুর্দশা ও সামাজিক সমস্যা সমাধানে আমরা আনন্দ পেতে পারি – এমন উপলব্ধি থেকে আমরা সবাইকে সামাজিক ব্যবসায় উৎসাহিত করি। মানুষ আস্তে আস্তে এটা বুঝছে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে দেখছি। আমি যখন ব্যবসা করব সেটা নিজের স্বার্থে যেমন করব, তেমনি পরের স্বার্থেও ব্যবসা করবো। স্বাস্থ্য, শিক্ষাখাতসহ সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রে যে ঘাটতি বা সমস্যা রয়ে গেছে, আসুন আমরা তার সমাধানে সামাজিক ব্যবসা করি।’

সমাজসেবা প্রতিটি মানুষের কাজের একটা অংশ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সমাজসেবা চাপিয়ে দেয়ার কোন বিষয় না। নিজের স্বার্থ ও পরস্বার্থ দুইটায় মানুষের কাজের অংশ। এটা আমরা দৈনন্দির জীবনে এমন করে ফেলি যে, আমাদের স্বার্থ একটায় নিজের স্বার্থ। পরস্বার্থটা আস্তে আস্তে মুছে দিতে চাই। আজকে আহ্বান জানাব আমাদের মধ্যে আর একটা যে অংশ আছে, পরের জন্য সেবা এবং পরস্বার্থে কাজ করা এটা যেন ভুলে না যাই।

ড. ইউনূস বলেন, ‘সমাজ সেবা প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব আর মন্ত্রণালয়ের কাজ হলো সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়া, যেন কেউ ভুলে না যায় এই দায়িত্ব থেকে, দূরে সরে না যায়…আশা করি, এই আহ্বান সবার কাছে পৌঁছে যাবে।’

তিনি বলেন, প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই পরের স্বার্থে কাজ করার প্রবণতা আছে। সেই ইচ্ছাকে জাগিয়ে তুলতে হবে। নিজের জন্য কিছু করার তুলনায় পরের কল্যাণে কাজ করায় আনন্দ মেলে বেশি।

অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ ও জুলাই বিপ্লবের তিন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনস্বার্থে কাজ করার আহবান প্রধান উপদেষ্টার

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:৪৫:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জনস্বার্থে কাজ করার ব্রত নিয়ে দেশবাসীকে সমাজসেবায় এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২৫ উপলক্ষে সমাজ সেবা অধিদপ্তর আয়োজিত ওয়াকাথন ও সমাজ সেবা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা যদি অল্প অল্প করে নিজের স্বার্থের পাশাপাশি পরের স্বার্থে কাজ করতে পারতাম এবং অপরের জন্য কিছু করার চিন্তা মাথায় ঢুকাতে পারতাম তাহলে যে সমস্যা আমাদের রয়েছে তা সমাধানে কারোর মুখাপেক্ষ হতে হতো না। সমাজসেবা দিবসে সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চায় আমাদের মধ্যে পরের স্বার্থে কাজ করার যে শক্তি রয়েছে, সেটাকে যেন জাগিয়ে তুলতে পারি। উন্মোচন করতে পারি। ব্যক্তি এবং প্রতি পরিবার থেকে এই ব্রত গ্রহণ করলে আমরা সফল হবো।

তিনি দৈনন্দিন জীবনে জনস্বার্থে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তোলার আহবান জানান। সমাজে সেবামূলক কাজ করা শুধু সরকারের একার দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অনেকের ভুল ধারণা ব্যক্তি পর্যায়ে আমাদের কাজ হলো কেবল টাকা-পয়সা রোজগার করা। নিজের স্বার্থে কাজ করা। সমাজসেবা সরকারের দায়িত্ব – এটা ভুল ধারণা। ব্যক্তির যে শক্তি আছে সেই শক্তির কাছে সরকারের শক্তি একেবারে নস্যি। মোটেই তুলনা করা যায় না। আমাদের এই প্রচণ্ড শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে হবে।

সামাজিক ব্যবসা জনস্বার্থের কাজের ক্ষেত্রে বড় মাধ্যম হতে পারে এমন মন্তব্য করে সরকার প্রধান বলেন, ‘অন্যের স্বার্থ বা পরের দুঃখদুর্দশা ও সামাজিক সমস্যা সমাধানে আমরা আনন্দ পেতে পারি – এমন উপলব্ধি থেকে আমরা সবাইকে সামাজিক ব্যবসায় উৎসাহিত করি। মানুষ আস্তে আস্তে এটা বুঝছে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে দেখছি। আমি যখন ব্যবসা করব সেটা নিজের স্বার্থে যেমন করব, তেমনি পরের স্বার্থেও ব্যবসা করবো। স্বাস্থ্য, শিক্ষাখাতসহ সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রে যে ঘাটতি বা সমস্যা রয়ে গেছে, আসুন আমরা তার সমাধানে সামাজিক ব্যবসা করি।’

সমাজসেবা প্রতিটি মানুষের কাজের একটা অংশ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সমাজসেবা চাপিয়ে দেয়ার কোন বিষয় না। নিজের স্বার্থ ও পরস্বার্থ দুইটায় মানুষের কাজের অংশ। এটা আমরা দৈনন্দির জীবনে এমন করে ফেলি যে, আমাদের স্বার্থ একটায় নিজের স্বার্থ। পরস্বার্থটা আস্তে আস্তে মুছে দিতে চাই। আজকে আহ্বান জানাব আমাদের মধ্যে আর একটা যে অংশ আছে, পরের জন্য সেবা এবং পরস্বার্থে কাজ করা এটা যেন ভুলে না যাই।

ড. ইউনূস বলেন, ‘সমাজ সেবা প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব আর মন্ত্রণালয়ের কাজ হলো সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়া, যেন কেউ ভুলে না যায় এই দায়িত্ব থেকে, দূরে সরে না যায়…আশা করি, এই আহ্বান সবার কাছে পৌঁছে যাবে।’

তিনি বলেন, প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই পরের স্বার্থে কাজ করার প্রবণতা আছে। সেই ইচ্ছাকে জাগিয়ে তুলতে হবে। নিজের জন্য কিছু করার তুলনায় পরের কল্যাণে কাজ করায় আনন্দ মেলে বেশি।

অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ ও জুলাই বিপ্লবের তিন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন।