ঢাকা ১১:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:১০:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশে এখন চলছে গরীবের পেটে লাত্থি মারার আইন কানুন। সব আইন কানুন শুধু গরীবদের জন্য, ধনীদের জন্য কোন আইন কানুন নেই। বিক্ষোভ সমাবেশে সংগঠনটির সদস্যরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানায়ি বলেন, ধনীদের বাদ দিয়ে শুধু গরীব মারার এই বে-ইনসাফি আইন কানুন বন্ধ করুন।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর মালিবাগ ফালইয়াফরাহু চত্বরে ব্যাটারি চালিত রিক্সা নিষিদ্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ এসব মন্তব্য সংগঠনটির সদস্যরা।

সংগঠনটির সদস্যরা বলেন, বড়লোকের অফিস-বাড়িতে এক বা একাধিক এসি থাকে, যে এসিতে উচ্চ বিদ্যুৎ ব্যয় হয়। সেই বিদ্যুৎকে কেউ অপচয় বলে না। কিন্তু গরীবের ব্যাটারি চালিত রিক্সা সামান্য বিদ্যুৎ খরচ করলে সেটাকে অপচয় হিসেবে দেখা হয়। ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতা’র নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশে এখন গরীব মারার শাসন চলতেছে। ইনসাফবিহীন শাসন কখনই স্থায়ী হয় না। ব্যাটারি চালিত রিক্সাকে সব সময় সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়। অথচ বিআরটিএর তথ্য বলছে ভিন্ন কথা। বিআরটিএ বলছে, ২০২৩ সালে দেশের সড়কগুলোতে ৭ হাজার ৮৩৭টি যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে, যা মোট দুর্ঘটনার ২২ দশমিক ২৯ শতাংশ। তারপর রয়েছে ট্রাক/কাভার্ড ভ্যান ১৭ দশমিক ৭২ শতাংশ, বাস/মিনিবাস ১৩ দশমিক ৮২ শতাংশ, সিএনজি অটোরিকশা ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ, ব্যাটারিচালিত রিকশা মাত্র ৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। বিআরটিএ’র পরিসংখ্যান বলছে, দুর্ঘটনার জন্য সবচেয়ে কম দায়ী হচ্ছে ব্যাটারি চালিত রিক্সা, কিন্তু সব দোষা চাপানো হচ্ছে সেই ব্যাটারি রিক্সার ঘাড়েই।

তারা বলেন, ব্যাটারি রিক্সার সাথে কোটি কোটি দরিদ্র মানুষের রুটি-রুজি জড়িত। একজন চালক মানে একজন বাবা, আর একজন বাবার কাধে পুরো পরিবারের দায়িত্ব। ব্যাটারি চালিত রিক্সা বন্ধ হলে চালকের ছোট ছোট সন্তান না খেয়ে থাকবে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির এই বাজারে এভাবে কোটি কোটি মানুষের রুটি-রুজি কেড়ে নেয়ার মত নৃশংস অমানবিকতা আর কিছু হতে পারে না। এভাবে কোটি কোটি মানুষের আয়-রোজগার হঠাৎ বন্ধ করে দিলে দেখা যাবে, সংসার চালাতে অনেকেই বাধ্য হয়ে অনৈতিক পেশা বেছে নিবে, যা দেশের জনগণের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি।

দেশের সাধারণ মানুষ সংবিধান কী জিনিস বুঝে না। সেই সংবিধান সংস্কারও তারা বুঝে না। তারা বুঝে পেটের ক্ষুধাকে। তারা তিন বেলা পেট পুরে খেতে চায়। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি হ্রাস চায়, স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা সেবা চায়। কিন্তু সেই দিকে সরকার-শাসকদের কোন খেয়াল নেই। তারা সংস্কারের নামে দেশে গরীবের পেটে লাত্থি মারার উৎসবে মেতেছে। মানুষের রুটি-রুজি কেড়ে নিচ্ছে। আগের সরকার গরীব মারার নীতি নিয়ে টিকে থাকতে পারেনি, নতুন সরকারও সেই পথে হাটছে বলে সতর্ক করেন ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র জনতা।

ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতা’র নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে ৩ দিনের মধ্যে সকল ব্যাটারি চালিত রিক্সা বন্ধ করার নির্দেশ এসেছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ব্যাটারি চালিত রিক্সা নাকি রাজধানী ঢাকায় যানজট তৈরী করছে। অথচ ঢাকা শহরে যানজট নতুন কিছু নয়, ব্যাটারি চালিত রিক্সা আসার পূর্ব থেকেই রাজধানীতে তীব্র যানজট ছিলো। মূলতঃ রাজধানীতে তীব্র যানজটের জন্য দায়ী হচ্ছে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত জনসংখ্যা। রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারকরা রাজধানীকেন্দ্রীক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রণয়ন করায় প্রতিনিয়ত সারা দেশের মানুষ ঢাকায় প্রবেশ করছে, এতে ঢাকার উচ্চ জনসংখ্যার নিচে চাপা পড়েছে। এই উচ্চ জনসংখ্যার চাপই রাজধানীতে তীব্র যানজটের কারণ। এক্ষেত্রে সরকারের উচিত ছিলো, রাজধানী ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে সারা দেশের জনসংখ্যা ছড়িয়ে দেয়া। তবেই ঢাকা শহরকে তীব্র যানজট থেকে মুক্ত করা সম্ভব।

দাবী করা হচ্ছে, রিক্সার ব্যাটারি নাকি বিদ্যুৎ অপচয় করে। অথচ বিনা কারণে কিংবা অপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যয় করাকে অপচয় বলে। রিক্সার ব্যাটারিতে যে বিদ্যুৎ চার্জ দেয়া হয়, সেটা তো অপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যয় হচ্ছে না, বরং প্রয়োজনীয় কাজে ব্যয় করা হচ্ছে। ব্যাটারি রিক্সায় মানুষ যাতায়াত করে, আবার সেই রিক্সা থেকে গরীব মানুষের আয়-রোজগার হয়। সুতরাং রিক্সার ব্যাটারিতে বিদ্যুৎ অপচয় হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আবার রিক্সা চালকরা এই বিদ্যুৎ বিনামূল্যে নেয় না, বরং টাকা দিয়েই কিনে নেন, যেখান থেকে সরকার আয় করে। সুতরাং ‘ব্যাটারি চালিত রিক্সা বিদ্যুৎ অপচয় করে’- এই কথা বলার মানে নিরাপরাধ মানুষকে অপবাদ দেয়া।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:১০:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশে এখন চলছে গরীবের পেটে লাত্থি মারার আইন কানুন। সব আইন কানুন শুধু গরীবদের জন্য, ধনীদের জন্য কোন আইন কানুন নেই। বিক্ষোভ সমাবেশে সংগঠনটির সদস্যরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানায়ি বলেন, ধনীদের বাদ দিয়ে শুধু গরীব মারার এই বে-ইনসাফি আইন কানুন বন্ধ করুন।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর মালিবাগ ফালইয়াফরাহু চত্বরে ব্যাটারি চালিত রিক্সা নিষিদ্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ এসব মন্তব্য সংগঠনটির সদস্যরা।

সংগঠনটির সদস্যরা বলেন, বড়লোকের অফিস-বাড়িতে এক বা একাধিক এসি থাকে, যে এসিতে উচ্চ বিদ্যুৎ ব্যয় হয়। সেই বিদ্যুৎকে কেউ অপচয় বলে না। কিন্তু গরীবের ব্যাটারি চালিত রিক্সা সামান্য বিদ্যুৎ খরচ করলে সেটাকে অপচয় হিসেবে দেখা হয়। ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতা’র নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশে এখন গরীব মারার শাসন চলতেছে। ইনসাফবিহীন শাসন কখনই স্থায়ী হয় না। ব্যাটারি চালিত রিক্সাকে সব সময় সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়। অথচ বিআরটিএর তথ্য বলছে ভিন্ন কথা। বিআরটিএ বলছে, ২০২৩ সালে দেশের সড়কগুলোতে ৭ হাজার ৮৩৭টি যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে, যা মোট দুর্ঘটনার ২২ দশমিক ২৯ শতাংশ। তারপর রয়েছে ট্রাক/কাভার্ড ভ্যান ১৭ দশমিক ৭২ শতাংশ, বাস/মিনিবাস ১৩ দশমিক ৮২ শতাংশ, সিএনজি অটোরিকশা ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ, ব্যাটারিচালিত রিকশা মাত্র ৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। বিআরটিএ’র পরিসংখ্যান বলছে, দুর্ঘটনার জন্য সবচেয়ে কম দায়ী হচ্ছে ব্যাটারি চালিত রিক্সা, কিন্তু সব দোষা চাপানো হচ্ছে সেই ব্যাটারি রিক্সার ঘাড়েই।

তারা বলেন, ব্যাটারি রিক্সার সাথে কোটি কোটি দরিদ্র মানুষের রুটি-রুজি জড়িত। একজন চালক মানে একজন বাবা, আর একজন বাবার কাধে পুরো পরিবারের দায়িত্ব। ব্যাটারি চালিত রিক্সা বন্ধ হলে চালকের ছোট ছোট সন্তান না খেয়ে থাকবে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির এই বাজারে এভাবে কোটি কোটি মানুষের রুটি-রুজি কেড়ে নেয়ার মত নৃশংস অমানবিকতা আর কিছু হতে পারে না। এভাবে কোটি কোটি মানুষের আয়-রোজগার হঠাৎ বন্ধ করে দিলে দেখা যাবে, সংসার চালাতে অনেকেই বাধ্য হয়ে অনৈতিক পেশা বেছে নিবে, যা দেশের জনগণের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি।

দেশের সাধারণ মানুষ সংবিধান কী জিনিস বুঝে না। সেই সংবিধান সংস্কারও তারা বুঝে না। তারা বুঝে পেটের ক্ষুধাকে। তারা তিন বেলা পেট পুরে খেতে চায়। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি হ্রাস চায়, স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা সেবা চায়। কিন্তু সেই দিকে সরকার-শাসকদের কোন খেয়াল নেই। তারা সংস্কারের নামে দেশে গরীবের পেটে লাত্থি মারার উৎসবে মেতেছে। মানুষের রুটি-রুজি কেড়ে নিচ্ছে। আগের সরকার গরীব মারার নীতি নিয়ে টিকে থাকতে পারেনি, নতুন সরকারও সেই পথে হাটছে বলে সতর্ক করেন ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র জনতা।

ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতা’র নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে ৩ দিনের মধ্যে সকল ব্যাটারি চালিত রিক্সা বন্ধ করার নির্দেশ এসেছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ব্যাটারি চালিত রিক্সা নাকি রাজধানী ঢাকায় যানজট তৈরী করছে। অথচ ঢাকা শহরে যানজট নতুন কিছু নয়, ব্যাটারি চালিত রিক্সা আসার পূর্ব থেকেই রাজধানীতে তীব্র যানজট ছিলো। মূলতঃ রাজধানীতে তীব্র যানজটের জন্য দায়ী হচ্ছে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত জনসংখ্যা। রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারকরা রাজধানীকেন্দ্রীক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রণয়ন করায় প্রতিনিয়ত সারা দেশের মানুষ ঢাকায় প্রবেশ করছে, এতে ঢাকার উচ্চ জনসংখ্যার নিচে চাপা পড়েছে। এই উচ্চ জনসংখ্যার চাপই রাজধানীতে তীব্র যানজটের কারণ। এক্ষেত্রে সরকারের উচিত ছিলো, রাজধানী ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে সারা দেশের জনসংখ্যা ছড়িয়ে দেয়া। তবেই ঢাকা শহরকে তীব্র যানজট থেকে মুক্ত করা সম্ভব।

দাবী করা হচ্ছে, রিক্সার ব্যাটারি নাকি বিদ্যুৎ অপচয় করে। অথচ বিনা কারণে কিংবা অপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যয় করাকে অপচয় বলে। রিক্সার ব্যাটারিতে যে বিদ্যুৎ চার্জ দেয়া হয়, সেটা তো অপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যয় হচ্ছে না, বরং প্রয়োজনীয় কাজে ব্যয় করা হচ্ছে। ব্যাটারি রিক্সায় মানুষ যাতায়াত করে, আবার সেই রিক্সা থেকে গরীব মানুষের আয়-রোজগার হয়। সুতরাং রিক্সার ব্যাটারিতে বিদ্যুৎ অপচয় হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আবার রিক্সা চালকরা এই বিদ্যুৎ বিনামূল্যে নেয় না, বরং টাকা দিয়েই কিনে নেন, যেখান থেকে সরকার আয় করে। সুতরাং ‘ব্যাটারি চালিত রিক্সা বিদ্যুৎ অপচয় করে’- এই কথা বলার মানে নিরাপরাধ মানুষকে অপবাদ দেয়া।