ঢাকা ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুবলারচরে চলছে তিনদিনব্যাপী রাস উৎসব

আবু-হানিফ, বাগেরহাট (প্রতিনিধি)
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৪৫:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ২৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাগরদ্বীপ সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে শত বছর ধরে উদযাপন হয়ে আসছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। প্রতিবছর নভেম্বর মাসের পূর্ণিমার তিথিতে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আলোরকোলে জাকজমকভাবে পালিত হয় এই উৎসব।

১৪ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় ধমীয় রীতি অনুয়ায়ি দুবলার চরের আলোরকোলের অস্থায়ী মন্দিরে রাধাকৃষ্ণের প্রতিমায় পূজা অর্চণার মধ্যে দিয়ে শুরু হবে তিন দিনের এই রাস উৎসব। ১৬ নভেম্বর ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাগরের প্রথম জোয়ারের নোনা জলে পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই মিলন মেলা।

বঙ্গোপসাগরের তীরে দুর্গম ও জনবিচ্ছিন্ন দ্বীপ দুবলার চরের আলোরকোলে রাস উৎসব কবে থেকে পালিত হয়ে আসছে এ নিয়ে রয়েছে নানা মত। তবে এর সঠিক দিনক্ষণ পাওয়া না গেলেও ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের অনুসারী হরিভজন নামে এক সাধু ১৯২৩ সালে সুন্দরবনের দুবলার আলোরকোলে প্রথম রাস পূর্ণিমার পুজা শুরু করেন। ২৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই সাধু একা একা বনে অব¯’ান করে পুজা উদযাপন করতেন।

দুই যুগেরও অধিককাল বনের ফলমূল খেয়ে জীবনধারণ করেন তিনি। পরবর্তীতে তার সম্পর্কে আর কিছু জানা যায়নি। এর পর থেকে সনাতন ধর্মের লোকেরা প্রতিবছর রাস পূর্ণিমার পুজা পালনের জন্য ছুটে যায় দুর্গম বনে। সনতনীদের এই রাস পুজা ধীরে ধীরে রাস মেলায় পরিনত হয়।

সুন্দরবন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সনাতন ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বনবিভাগ ও রাসোৎসব উদযাপন কমিটির সহযোগিতায় প্রতিবছর এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এজন্য আলোরকোলে তৈরী করা হয় অস্থায়ী মন্দির। সেখানে গিয়ে মনোবাসনা পুরণের আশায় পুজা-আর্চনা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। নিয়ে যান খাসি-মুরগিসহ মানতের নানা সামগ্রী। এক সময় এই রাস মেলায় পূণ্যার্থী ও দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী মিলে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হতো। কিš‘ এতো লোকের আনাগোনা ও বাদ্যবাজনায় সংরক্ষিত বনের পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যের ওপর মারাতœক বিরূপ প্রভাব দেখা দেয়।

যেকারণে ২০২১ সাল থেকে রাস মেলার আয়োজন বন্ধ করে শুধুমাত্র রাস পুজায় সনাতন ধর্মলম্বীদের উৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নেয় বনবিভাগ। পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তা, হরিণ শিকারিসহ অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বনরক্ষীসহ পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

দুবলারচরে চলছে তিনদিনব্যাপী রাস উৎসব

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৪৫:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

সাগরদ্বীপ সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে শত বছর ধরে উদযাপন হয়ে আসছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। প্রতিবছর নভেম্বর মাসের পূর্ণিমার তিথিতে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আলোরকোলে জাকজমকভাবে পালিত হয় এই উৎসব।

১৪ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় ধমীয় রীতি অনুয়ায়ি দুবলার চরের আলোরকোলের অস্থায়ী মন্দিরে রাধাকৃষ্ণের প্রতিমায় পূজা অর্চণার মধ্যে দিয়ে শুরু হবে তিন দিনের এই রাস উৎসব। ১৬ নভেম্বর ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাগরের প্রথম জোয়ারের নোনা জলে পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই মিলন মেলা।

বঙ্গোপসাগরের তীরে দুর্গম ও জনবিচ্ছিন্ন দ্বীপ দুবলার চরের আলোরকোলে রাস উৎসব কবে থেকে পালিত হয়ে আসছে এ নিয়ে রয়েছে নানা মত। তবে এর সঠিক দিনক্ষণ পাওয়া না গেলেও ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের অনুসারী হরিভজন নামে এক সাধু ১৯২৩ সালে সুন্দরবনের দুবলার আলোরকোলে প্রথম রাস পূর্ণিমার পুজা শুরু করেন। ২৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই সাধু একা একা বনে অব¯’ান করে পুজা উদযাপন করতেন।

দুই যুগেরও অধিককাল বনের ফলমূল খেয়ে জীবনধারণ করেন তিনি। পরবর্তীতে তার সম্পর্কে আর কিছু জানা যায়নি। এর পর থেকে সনাতন ধর্মের লোকেরা প্রতিবছর রাস পূর্ণিমার পুজা পালনের জন্য ছুটে যায় দুর্গম বনে। সনতনীদের এই রাস পুজা ধীরে ধীরে রাস মেলায় পরিনত হয়।

সুন্দরবন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সনাতন ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বনবিভাগ ও রাসোৎসব উদযাপন কমিটির সহযোগিতায় প্রতিবছর এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এজন্য আলোরকোলে তৈরী করা হয় অস্থায়ী মন্দির। সেখানে গিয়ে মনোবাসনা পুরণের আশায় পুজা-আর্চনা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। নিয়ে যান খাসি-মুরগিসহ মানতের নানা সামগ্রী। এক সময় এই রাস মেলায় পূণ্যার্থী ও দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী মিলে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হতো। কিš‘ এতো লোকের আনাগোনা ও বাদ্যবাজনায় সংরক্ষিত বনের পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যের ওপর মারাতœক বিরূপ প্রভাব দেখা দেয়।

যেকারণে ২০২১ সাল থেকে রাস মেলার আয়োজন বন্ধ করে শুধুমাত্র রাস পুজায় সনাতন ধর্মলম্বীদের উৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নেয় বনবিভাগ। পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তা, হরিণ শিকারিসহ অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বনরক্ষীসহ পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হয়েছে।