ঢাকা ০৮:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভাড়া না মারলে সংসার চলবে না!

যশোর প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪ ৮৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির আবহাওয়া দপ্তর এ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। গত সপ্তাহখানি ধরেই খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে এ বিভাগের যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। প্রতিদিনই তাপমাত্রা এক ডিগ্রি করে বাড়ছে।

১৮ এপ্রিল যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এ দিন তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ১৯ এপ্রিল যশোরে তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার যশোরে তাপমাত্রা আর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর চুয়াডাঙ্গায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্রচন্ড গরমে নাকাল হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জনজীবন। শ্রমজীবী মানুষ রয়েছেন ভোগান্তিতে। প্রচন্ড গরমে গলে গেছে শহরের বেশ কয়েকটি পিচঢালা সড়ক। এরই মধ্যে প্রখর রোদ উপেক্ষা করেই যাত্রী বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন রিকশাচালকরা। সূর্যের তাপ এতই বেশি যে, খোলা আকাশের নিচে হাঁটলেও গরম বাতাস লাগছে চোখে-মুখে। যাত্রাপথে ছাতা মাথায় দিয়ে তাপ থেকে চেষ্টা করছেন অনেকেই। স্বস্তি পেতে শ্রমজীবী মানুষ রাস্তার পাশে জিরিয়ে নিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ হাতে মুখে পানি দিয়ে ঠান্ডা হওয়ার চেষ্টা করছেন। আর শিশু কিশোররা গরম থেকে রেহাই পেতে মাতছে জলকেলিতে।

রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন শওকত আলী। তিনি বলেন, তীব্র গরমের কারণে রিকশা চালাতে কষ্ট হচ্ছে। এত গরম যে মাথার মধ্যে ঘুরিয়ে উঠছে। কিন্তু ভাড়া না মারলে তো সংসার চলবে না।

যশোর শহরের রিকশা চালক মফিজুর রহমান বলছেন, মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছে। যারা বাইরে আসছে গরমের সাথে তাদেরও মেজাজ গরম থাকছে। মানুষের সাথে ভালো করে কথা বলা যাচ্ছে না। গরমে পরিবহনে চলাচল করা যাত্রীরাও নিদারুণ কষ্টে যাতায়াত করছেন।

শহরের শংকরপুেরর বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, বাসার ছাদের পানির রিজার্ভ ট্যাংকের পানি অনেক গরম হয়ে যাচ্ছে। দুপুর বারোটা থেকে বিকেল পর্যন্ত পানিতে হাত দেয়া যাচ্ছে না।

আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এই তাপপ্রবাহ আরও কিছুদিন চলমান থাকবে। বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমান বেশি হওয়ায় অস্বস্তি বাড়বে।

তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে পানি সংকটে পড়েছে শহরের বাসিন্দা। তারা বলছেন, যে টিউবওয়েলে সহসা আসতো পানি, সেই টিউবওয়েলে অকেজ হয়ে পড়ে আছে। শহরের রেলগেটোর বাসিন্দা আল আমিন বলেন, টিউবওয়েলে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পুকুরে যেতে হচ্ছে। যা উঠছে পানির সঙ্গে আয়রণ উঠছে। পান করা যাচ্ছে না পানি।

যশোর জনস্বাস্থ প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশল জাহিদ পারভেজ বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ওয়াটার টেবিলের লেয়ার নিম্মমুখী। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় সুপেয় পানির যাতে সঙ্কট না হয় সে জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সাবমারসিবলের পানি সরবরাহ নিশ্চিত রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ভাড়া না মারলে সংসার চলবে না!

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির আবহাওয়া দপ্তর এ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। গত সপ্তাহখানি ধরেই খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে এ বিভাগের যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। প্রতিদিনই তাপমাত্রা এক ডিগ্রি করে বাড়ছে।

১৮ এপ্রিল যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এ দিন তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ১৯ এপ্রিল যশোরে তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার যশোরে তাপমাত্রা আর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর চুয়াডাঙ্গায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্রচন্ড গরমে নাকাল হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জনজীবন। শ্রমজীবী মানুষ রয়েছেন ভোগান্তিতে। প্রচন্ড গরমে গলে গেছে শহরের বেশ কয়েকটি পিচঢালা সড়ক। এরই মধ্যে প্রখর রোদ উপেক্ষা করেই যাত্রী বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন রিকশাচালকরা। সূর্যের তাপ এতই বেশি যে, খোলা আকাশের নিচে হাঁটলেও গরম বাতাস লাগছে চোখে-মুখে। যাত্রাপথে ছাতা মাথায় দিয়ে তাপ থেকে চেষ্টা করছেন অনেকেই। স্বস্তি পেতে শ্রমজীবী মানুষ রাস্তার পাশে জিরিয়ে নিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ হাতে মুখে পানি দিয়ে ঠান্ডা হওয়ার চেষ্টা করছেন। আর শিশু কিশোররা গরম থেকে রেহাই পেতে মাতছে জলকেলিতে।

রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন শওকত আলী। তিনি বলেন, তীব্র গরমের কারণে রিকশা চালাতে কষ্ট হচ্ছে। এত গরম যে মাথার মধ্যে ঘুরিয়ে উঠছে। কিন্তু ভাড়া না মারলে তো সংসার চলবে না।

যশোর শহরের রিকশা চালক মফিজুর রহমান বলছেন, মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছে। যারা বাইরে আসছে গরমের সাথে তাদেরও মেজাজ গরম থাকছে। মানুষের সাথে ভালো করে কথা বলা যাচ্ছে না। গরমে পরিবহনে চলাচল করা যাত্রীরাও নিদারুণ কষ্টে যাতায়াত করছেন।

শহরের শংকরপুেরর বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, বাসার ছাদের পানির রিজার্ভ ট্যাংকের পানি অনেক গরম হয়ে যাচ্ছে। দুপুর বারোটা থেকে বিকেল পর্যন্ত পানিতে হাত দেয়া যাচ্ছে না।

আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এই তাপপ্রবাহ আরও কিছুদিন চলমান থাকবে। বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমান বেশি হওয়ায় অস্বস্তি বাড়বে।

তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে পানি সংকটে পড়েছে শহরের বাসিন্দা। তারা বলছেন, যে টিউবওয়েলে সহসা আসতো পানি, সেই টিউবওয়েলে অকেজ হয়ে পড়ে আছে। শহরের রেলগেটোর বাসিন্দা আল আমিন বলেন, টিউবওয়েলে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পুকুরে যেতে হচ্ছে। যা উঠছে পানির সঙ্গে আয়রণ উঠছে। পান করা যাচ্ছে না পানি।

যশোর জনস্বাস্থ প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশল জাহিদ পারভেজ বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ওয়াটার টেবিলের লেয়ার নিম্মমুখী। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় সুপেয় পানির যাতে সঙ্কট না হয় সে জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সাবমারসিবলের পানি সরবরাহ নিশ্চিত রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।