ঢাকা ০৩:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিল উদ্ধারে গিয়ে হামলায় আহত বিএনপির ৭ নেতাকর্মী

শরিফুল ইসলাম, মোহনপুর (রাজশাহী)
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪ ৪০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মোহনপুর উপজেলায় ন্যায্য অধিকার বিল উন্মুক্ত করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়েছেন বিএনপির ৭ নেতাকর্মী।সোমবার বিকেলে (২৬ আগষ্ট) উপজেলার তুলসী ক্ষেত্রবাঁধ সংলগ্ন বিল মাইল /শুটকি বিল ও ডুবির বিলে এ হামলার শিকার হন।

এ ঘটনায় আহতরা হলো- শাহ আলম সরকার সবুজ, জোনাব আলী, আব্দুল হাকিম,জেকের আলী, শ্রী নিরেন হালদার, প্রসনজিৎ এবং দীলদার। এরা স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক নেতাকর্মী। তাদের সবই মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাদের প্রত্যেককে মাথায় লাঠির বাড়িসহ কোপানো হয়। পরে চিকিৎসকরা মাথায় সেলাই শেষে ব্যান্ডেজ দেন।

আহতরা জানান, হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের উপর হামলার ছক করেছেন ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মালেক। তিনি ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। তিনি তার গ্রামের কতিপয় আওয়ামী লীগের নেতাদের দিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমাদের নির্মমভাবে পেটায় সন্ত্রাসীরা।

জানা গেছে, বিগত দিনে আওয়ামী লীগপন্থিরা নানান কৌশলে মোহনপুরের তুলসী ক্ষেত্র বাঁধ সংলগ্ন বিল মাইল শুটকি বিল ও ডুবির বিল তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখে ভোগ করে আসছিলো। বিগত দিনে তাদের নিষেধ করলে তারা দলীয় প্রভাব দেখিয়ে হুমকি দিয়ে বঞ্চিত করে রাখতো এলাকার জেলে পরিবার ও সাধরণ মানুষদের। বর্তমানে দেশে স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার পর শাহ আলম সরকার সবুজ, হাকিম, জনাব, জেকের, নিরেন, প্রসেনজিৎ ও দিলদারসহ এলাকার অসহায় মানুষেরা গিয়ে বিলটি উন্মুক্ত দাবি করলে সন্ত্রাসী কায়দায় আব্দুল মালেক ওরফে মালেক চিট, জাফর ইকবাল, আনসার আলী মীর, মাহাবুবুর রহমান টিপু, পলাশ, আসলাম, জোবায়ের, আব্দুল্লাহ, আব্দুর রউফ, কামাল, শরিফুলসহ অন্তত ১৫০ জন এসে হাসুয়া, লোহার রড, পাইপ, হাতুরী, বাটাম ও কাঠের লাঠি দিয়ে তারা হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ৭ জন গুরুত্বরভাবে জঘম হয়ে মাটিতে লুটিয়া পড়ে। পরে কাওসার আলী, আজিজুল হক ইয়াছিন আলী, নাইমসহ স্থানীয় লোকজন এসে উদ্ধার করে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে চিকিৎসা ব্যবস্থা করায়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও সামরিক সেনা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান উপজেলা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা।

জানা গেছে, মোহনপুর উপজেলার পশ্চিম সিমান্তবর্তী তুলশীক্ষেত্র বাঁধ সংলগ্ন সুটকি বিল, ডুবির বিল এবং বিল মাইল দীর্ঘদিন ধরে দখল রেখে মাছ চাষ করতেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে এ আসনে আসাদুজ্জামান এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর বিলটি দখলে নেন আওয়ামীলীগ নেতা মোহনপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আফজার হোসেন বকুল অনুসারীরা। এরপর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আবদুল মালেক ওরফে চিটু মালেক সাবেক চেয়ারম্যান বকুল অনুসারীদের নিয়ে বিল তিনটি কুক্ষিগত করেন। দাপট দেখিয়ে বিলগুলো দখলে রাখেন তিনি।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, বিগত সময়ে বিলগুলো দখলে মরিয়া হয়ে উঠা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিক মামলাও চলমান রয়েছে।

আরও জানা গেছে, সুটকি বিলের তলা রাজস্বখাতে লীজ দেয়া রয়েছে। কিন্তু যেটুকু জায়গা লীজ হয়েছে তার কয়েকগুন বেশি জায়গার ধরে মাছ চাষ করেন লীজ গ্রহিতা। বাকি জমির মালিকদের কাছে লীজ না নিয়েই জোর পূর্বক চাষ করেন তিনি।

এদিকে, হামলার ঘটনায় মোহনপুর থানায় শাহ আলম সরকার বাদি হয়ে ৩০ জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে অজ্ঞাত আসামী রয়েছে ১৫০ জন।

মোহনপুর থানার ওসি (তদন্ত) আছের আলী জানান, হামলাকারীরা যেই হোক তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বিল উদ্ধারে গিয়ে হামলায় আহত বিএনপির ৭ নেতাকর্মী

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪

মোহনপুর উপজেলায় ন্যায্য অধিকার বিল উন্মুক্ত করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়েছেন বিএনপির ৭ নেতাকর্মী।সোমবার বিকেলে (২৬ আগষ্ট) উপজেলার তুলসী ক্ষেত্রবাঁধ সংলগ্ন বিল মাইল /শুটকি বিল ও ডুবির বিলে এ হামলার শিকার হন।

এ ঘটনায় আহতরা হলো- শাহ আলম সরকার সবুজ, জোনাব আলী, আব্দুল হাকিম,জেকের আলী, শ্রী নিরেন হালদার, প্রসনজিৎ এবং দীলদার। এরা স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক নেতাকর্মী। তাদের সবই মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাদের প্রত্যেককে মাথায় লাঠির বাড়িসহ কোপানো হয়। পরে চিকিৎসকরা মাথায় সেলাই শেষে ব্যান্ডেজ দেন।

আহতরা জানান, হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের উপর হামলার ছক করেছেন ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মালেক। তিনি ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। তিনি তার গ্রামের কতিপয় আওয়ামী লীগের নেতাদের দিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমাদের নির্মমভাবে পেটায় সন্ত্রাসীরা।

জানা গেছে, বিগত দিনে আওয়ামী লীগপন্থিরা নানান কৌশলে মোহনপুরের তুলসী ক্ষেত্র বাঁধ সংলগ্ন বিল মাইল শুটকি বিল ও ডুবির বিল তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখে ভোগ করে আসছিলো। বিগত দিনে তাদের নিষেধ করলে তারা দলীয় প্রভাব দেখিয়ে হুমকি দিয়ে বঞ্চিত করে রাখতো এলাকার জেলে পরিবার ও সাধরণ মানুষদের। বর্তমানে দেশে স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার পর শাহ আলম সরকার সবুজ, হাকিম, জনাব, জেকের, নিরেন, প্রসেনজিৎ ও দিলদারসহ এলাকার অসহায় মানুষেরা গিয়ে বিলটি উন্মুক্ত দাবি করলে সন্ত্রাসী কায়দায় আব্দুল মালেক ওরফে মালেক চিট, জাফর ইকবাল, আনসার আলী মীর, মাহাবুবুর রহমান টিপু, পলাশ, আসলাম, জোবায়ের, আব্দুল্লাহ, আব্দুর রউফ, কামাল, শরিফুলসহ অন্তত ১৫০ জন এসে হাসুয়া, লোহার রড, পাইপ, হাতুরী, বাটাম ও কাঠের লাঠি দিয়ে তারা হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ৭ জন গুরুত্বরভাবে জঘম হয়ে মাটিতে লুটিয়া পড়ে। পরে কাওসার আলী, আজিজুল হক ইয়াছিন আলী, নাইমসহ স্থানীয় লোকজন এসে উদ্ধার করে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে চিকিৎসা ব্যবস্থা করায়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও সামরিক সেনা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান উপজেলা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা।

জানা গেছে, মোহনপুর উপজেলার পশ্চিম সিমান্তবর্তী তুলশীক্ষেত্র বাঁধ সংলগ্ন সুটকি বিল, ডুবির বিল এবং বিল মাইল দীর্ঘদিন ধরে দখল রেখে মাছ চাষ করতেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে এ আসনে আসাদুজ্জামান এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর বিলটি দখলে নেন আওয়ামীলীগ নেতা মোহনপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আফজার হোসেন বকুল অনুসারীরা। এরপর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আবদুল মালেক ওরফে চিটু মালেক সাবেক চেয়ারম্যান বকুল অনুসারীদের নিয়ে বিল তিনটি কুক্ষিগত করেন। দাপট দেখিয়ে বিলগুলো দখলে রাখেন তিনি।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, বিগত সময়ে বিলগুলো দখলে মরিয়া হয়ে উঠা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিক মামলাও চলমান রয়েছে।

আরও জানা গেছে, সুটকি বিলের তলা রাজস্বখাতে লীজ দেয়া রয়েছে। কিন্তু যেটুকু জায়গা লীজ হয়েছে তার কয়েকগুন বেশি জায়গার ধরে মাছ চাষ করেন লীজ গ্রহিতা। বাকি জমির মালিকদের কাছে লীজ না নিয়েই জোর পূর্বক চাষ করেন তিনি।

এদিকে, হামলার ঘটনায় মোহনপুর থানায় শাহ আলম সরকার বাদি হয়ে ৩০ জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে অজ্ঞাত আসামী রয়েছে ১৫০ জন।

মোহনপুর থানার ওসি (তদন্ত) আছের আলী জানান, হামলাকারীরা যেই হোক তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।