ফ্রিল্যান্সারের সাড়ে ৩ কোটি টাকা ‘হাতিয়ে’ বরখাস্ত ডিবির ৬ সদস্য

চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:১৬:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪ ১৩৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফ্রিল্যান্সারকে আটকের পর মামলা ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো এবং তার মোবাইল ফোন থেকে কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হচ্ছে। সিএমপি কমিশনার (অ্যাডিশনাল আইজিপি) কৃষ্ণ পদ রায় স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এই নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার স্পিনা রানী প্রামাণিক। জারি করা আদেশের বিষয়টি বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন স্পিনা রাণী প্রামাণিক।

যাদের বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন- নগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উত্তর-দক্ষিণ জোনের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন, সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো.বাবুল মিয়া, মো. শাহ পরাণ জান্নাত, মাইনুল হোসেন, জাহিদুর রহমান এবং আব্দুর রহমান।

এছাড়া ঘটনায় নেতৃত্বদাতা হিসেবে অভিযুক্ত নগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উত্তর-দক্ষিণ জোনের পরিদর্শক রুহুল আমিনের কাছে ব্যাখা তলব করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সিএমপি কমিশনারের দেওয়া আদেশের অনুলপি বুধবার ডিবি (উত্তর-দক্ষিণ) ও সদরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই উপ পুলিশ কমিশনার, রিজার্ভ শাখার সহকারি পুলিশ কমিশনার এবং প্রধান গোপনীয় শাখায় পাঠানো হয়।

এর আগে গত গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন গুলবাগ আবাসিক এলাকার বারাকা এন্টারপ্রাইজ নামের কুলিং কর্নারে চা পান করার সময় আবু বকর সিদ্দিক নামের ওই ফ্রিল্যান্সারকে আটক করে ডিবি পরিদর্শক মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে একটি দল। অনলাইন জুয়ার অভিযোগ তুলে তাকে আটক করা হয়।

আবু বকর সিদ্দিকের অভিযোগ, ওইদিন রাতে অক্সিজেন এলাকা থেকে তুলে মনসুরাবাদ ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয় তাকে। এরপর গভীর রাতে সেখানে কয়েকবার জোর করে তার মুঠোফোনে আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়। পরে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আদায় করা হয় দশ লাখ টাকা। ওই টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নেওয়া হয় ভিন্ন দুইটি অ্যাকাউন্টে। এছাড়া তার বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট থেকেও সরিয়ে নেওয়া হয় ২ লাখ ৭৭ হাজার ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় তিন কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

আবু বকরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে গত ৫ মার্চ আট পুলিশ সদস্যসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন আবু বকরের স্ত্রী হুসনুম মামুরাত লুবাবা। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর) মো. আব্দুল ওয়ারিশ বলেন, ডিবির ছয়জন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্তের একটি আদেশ আমরা (বুধবার) পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ফ্রিল্যান্সারের সাড়ে ৩ কোটি টাকা ‘হাতিয়ে’ বরখাস্ত ডিবির ৬ সদস্য

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:১৬:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

ফ্রিল্যান্সারকে আটকের পর মামলা ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো এবং তার মোবাইল ফোন থেকে কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হচ্ছে। সিএমপি কমিশনার (অ্যাডিশনাল আইজিপি) কৃষ্ণ পদ রায় স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এই নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার স্পিনা রানী প্রামাণিক। জারি করা আদেশের বিষয়টি বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন স্পিনা রাণী প্রামাণিক।

যাদের বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন- নগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উত্তর-দক্ষিণ জোনের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন, সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো.বাবুল মিয়া, মো. শাহ পরাণ জান্নাত, মাইনুল হোসেন, জাহিদুর রহমান এবং আব্দুর রহমান।

এছাড়া ঘটনায় নেতৃত্বদাতা হিসেবে অভিযুক্ত নগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উত্তর-দক্ষিণ জোনের পরিদর্শক রুহুল আমিনের কাছে ব্যাখা তলব করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সিএমপি কমিশনারের দেওয়া আদেশের অনুলপি বুধবার ডিবি (উত্তর-দক্ষিণ) ও সদরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই উপ পুলিশ কমিশনার, রিজার্ভ শাখার সহকারি পুলিশ কমিশনার এবং প্রধান গোপনীয় শাখায় পাঠানো হয়।

এর আগে গত গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন গুলবাগ আবাসিক এলাকার বারাকা এন্টারপ্রাইজ নামের কুলিং কর্নারে চা পান করার সময় আবু বকর সিদ্দিক নামের ওই ফ্রিল্যান্সারকে আটক করে ডিবি পরিদর্শক মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে একটি দল। অনলাইন জুয়ার অভিযোগ তুলে তাকে আটক করা হয়।

আবু বকর সিদ্দিকের অভিযোগ, ওইদিন রাতে অক্সিজেন এলাকা থেকে তুলে মনসুরাবাদ ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয় তাকে। এরপর গভীর রাতে সেখানে কয়েকবার জোর করে তার মুঠোফোনে আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়। পরে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আদায় করা হয় দশ লাখ টাকা। ওই টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নেওয়া হয় ভিন্ন দুইটি অ্যাকাউন্টে। এছাড়া তার বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট থেকেও সরিয়ে নেওয়া হয় ২ লাখ ৭৭ হাজার ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় তিন কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

আবু বকরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে গত ৫ মার্চ আট পুলিশ সদস্যসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন আবু বকরের স্ত্রী হুসনুম মামুরাত লুবাবা। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর) মো. আব্দুল ওয়ারিশ বলেন, ডিবির ছয়জন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্তের একটি আদেশ আমরা (বুধবার) পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন আছে।