ছেলেকে নিয়ে দেশ ছেড়েছেন মতিউরের স্ত্রী
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৩:০৮:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ জুন ২০২৪ ১৩৭ বার পড়া হয়েছে
ছাগল-কাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিভলী ও তার দুই সন্তান নিয়ে দেশ ছেড়েছেন।
মতিউরের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে, ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত ও ইরফানকে নিয়ে বুধবার (১৯ জুন) রাতে মালয়েশিয়া গেছেন শিভলী। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে কুয়ালালামপুর রওনা হন তিনি।
জানা গেছে,এনবিআর কর্মকর্তা মতিউরের প্রথম স্ত্রীর পরিবারের সাথে দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিবারের দ্বন্দ্ব চলছিলো বহুদিন থেকে। ছাগল-কাণ্ডের সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ। তিনি স্বামীকে বোঝাতে সক্ষম হন, ইফাতের পরিচয় অস্বীকার করলেই আপাতত ঝামেলা থেকে রক্ষা পাবেন মতিউর। কানিজের কথাতেই ইফাতকে গণমাধ্যমের কাছে নিজের সন্তান হিসেবে অস্বীকার করেন তিনি।
ঈদুল আজহার আগে কলেজপড়ুয়া ইফাতের ১৫ লাখ টাকা দামের ছাগল কেনার জন্য বুকিং, ৫২ লাখ টাকা দামের গরু কেনা এবং দামি গাড়ি ব্যবহার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে সমালোচনার মধ্যে ইফাতকে ছেলে হিসেবে অস্বীকার করে বসেন মতিউর রহমান।
এদিকে, মতিউর রহমানের নামে বিশাল সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ডি ব্লকের ৭/এ সড়কের ৩৮৪ নম্বর বাড়িতে স্ত্রীর নামে ৫০১ নম্বর ফ্ল্যাট। একই ব্লকের এক নম্বর সড়কের ৫১৯ নম্বর হোল্ডিংয়ে ৭ তলা বাড়ি। যার দাম ৪০ কোটি টাকা। এ বাড়ির দোতলায় পরিবার নিয়ে থাকেন মতিউর রহমান।
এছাড়া ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার সিডস্টোর এলাকার পাশেই ৩০০ বিঘা জমির ওপর গ্লোবাল জুতার ফ্যাক্টরি। এই ফ্যাক্টরির চেয়ারম্যান মতিউর রহমান। ফ্যাক্টরিতে দেশি-বিদেশি প্রায় ৪০০ শ্রমিক কাজ করে।
জানা গেছে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় মতিউর রহমান, তার স্ত্রী, পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনের নামে রয়েছে ৪০টি প্লট। নরসিংদীর বেলাবতে রয়েছে ৪০ বিঘা জমির ওপর বিলাসবহুল রিসোর্ট। রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরে শাহবুদ্দিন পার্কের উল্টোদিকে আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের একটি ভবনে ৪টি ফ্ল্যাটও । এর প্রতিটির দাম ৫ কোটি টাকা করে। গুলশানের শান্তা প্রোপার্টিজের একাধিক প্রজেক্টে রয়েছে আটটি ফ্ল্যাট। গোয়েন্দা তথ্যমতে, মতিউরের একটি ব্যাংক হিসাবে জমা আছে ১১৭ কোটি টাকা।
এছাড়াও গাজীপুর সদর, রাজধানীর খিলগাঁও মৌজায় বিভিন্ন দাগে ৪৭ শতাংশ জমি। সাভার থানার বিলামালিয়া মৌজায় ৮টি খতিয়ানে ৬০ শতাংশ জমি রয়েছে এই কর্মকর্তার। যার দাম প্রায় ৪০ কোটি টাকা।
মতিউরের স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে সাভার থানার বিলামালিয়া মৌজায় রয়েছে ১৪ শতাং। গাজীপুর সদরে ৪৮ দশমিক ১৬ শতাংশ ও অন্য দাগে ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি রয়েছে। ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব ও স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে গাজীপুরে ৪৫ শতাংশ জমির খবর পাওয়া গেছে। গ্লোবাল সুজ লিমিটেড নামে গাজীপুরে রয়েছে ৭ খতিয়ানে ৬০ শতাংশ জমি। এর মূল্য ৯০ কোটি টাকা।
এখানে শেষ নয়। রাজধানীর পুবাইলে ৪০ বিঘা জমিতে ‘আপন ভুবন পিকনিক অ্যান্ড শুটিং স্পট’ নামে একটি রিসোর্ট রয়েছে মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী লায়লা কানিজের। পুবাইলের খিলগাঁও মৌজায় আরো ৬০ বিঘা জমি রয়েছে।