ক্রাইম পেট্রোল দেখে হত্যা, এমপি আনারের মতো মরদেহ গুম
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:২৩:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪ ১৭৪ বার পড়া হয়েছে
পাবনার ঈশ্বরদীতে ক্রাইম পেট্রোলে ক্রাইমসিন দেখে তপু হোসেন নামে এক কিশোরকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার মতো মরদেহ গুমের পরিকল্পনা করে তার টুকরা টুকরা করে ট্রাংকের মধ্যে রেখে দেয় খুনিরা।
এ ঘটনায় আটক তিনজন হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন ঈশ্বরদী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম। রবিবার (২৩ জুন) তিনি বলেন, মরদেহ শনাক্তের লক্ষ্যে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার একটি ছাত্রাবাস থেকে তপু হোসেন (১৪) নামে এক কিশোরের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ৭ দিন থেকে এই কিশোর নিখোঁজ ছিলো। শনিবার (২২ জুন) সন্ধ্যায় ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের পেছনে মশুরিয়াপাড়ার অরণ্য ছাত্রাবাসের তিনতলার ৩০৫নং কক্ষে তপুর মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়। নিহতের বাবার নাম আবুল কাশেম।
এ ব্যাপারে নিহত তপুর বড় ভাই অপু জানান, চলতি মাসের ১৫ তারিখ বেলা ১১টার দিকে তপুর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। ওই দিন রাত ১০টার দিকে তপুর ফোন নম্বর থেকে জানানো হয় আপনার ছেলেকে অপহরণ করা হয়। বিকাশে ৩০ হাজার টাকা না দিলে তপুকে হত্যা করা হবে। তখন খরচসহ ৭ হাজার টাকা দেয়া হয়। এরপর থেকেই তপুর ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পর দিন আমার মা বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় জিডি করেন। এরপর আজকে পুলিশ মরদেহের খোঁজ পান।
অপু আরও জানান, স্থানীয়দের সাথে পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে বন্ধুদের দিয়ে বাড়ির পাশের অরণ্য ছাত্রাবাসের তিন তলার ওই কক্ষে নিয়ে হত্যা করে। এরপর মরদেহ টুকরো টুকরো করে ট্রাংকে ভরে রেখে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়।
অরণ্য ছাত্রাবাসের ৩০৪নং কক্ষে থাকা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ৩য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ বলেন, ঈদের ছুটিতে আমি গত ১১ জুন বাড়িতে চলে যাই। শনিবার দুপুরের দিকে ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে ফিরি। দরজার কাছে আসলে ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। পাশের ৩০৫নং কক্ষের ভেতর থেকে দরজা দিয়ে বের হওয়া রক্ত দেখতে পেয়ে আমি মেসের আয়ার মাধ্যমে মেস মালিককে জানাই। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কক্ষের তালা খুলে ট্রাংকের ভেতরে রাখা মরদেহের টুকরো দেখতে পান।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নিহত তপু একই এলাকার কয়েকজন উঠতি বয়সি মাদকাসক্ত ছেলের সাথে চলাফেরা করত। তারা সব সময় স্থানীয় হাসুর দোকানে বসে আড্ডা দিত। সম্প্রতি তপুও মাদক সেবন শুরু করেছিল। ঈদের আগে মাদক সেবন কেন্দ্র করেই হত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় নিহত তপুর মা বাদী হয়ে থানায় ১৬ জুন একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তার সূত্র ধরেই মশুড়িয়াপাড়ার একটি মেসে ট্রাংকের মধ্যে টুকরো টুকরো অবস্থায় অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।