সাবেক সেনা সদস্যকে জবাই করার হুমকি!
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৫৪:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫ ৯ বার পড়া হয়েছে
রাজশাহীতে হামলা চালিয়ে সাবেক এক সেনা সদস্যকে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে তার মাথা ফেটে গেছে। হারিয়ে ফেলেছেন শ্রবণশক্তি। এবার তাকে জবাই করে হত্যা করার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী সাবেক সেনা সদস্য এসব অভিযোগ করেন।
সাবেক ওই সেনা সদস্যের নাম মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি নগরীর শিরোইল কলোনী এলাকার মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্পোরাল। সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজেই লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
এ সময় সাইফুল ইসলাম বলেন, নগরীর দড়িখরবোনা এলাকায় আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি রয়েছে। যেটি অন্য শরিকগণ বুঝিয়ে দেয়নি। আমাকে কাগজপত্র দেওয়ার জন্য কল করে গত ৮ জানুয়ারি মোবিন বাবু আমাকে মন্টু ও জিতুর চেম্বারে ডাকে এবং আমার ভাই সাইদুরের হাতে দেয়। ওইদিন আমার ভাই সাইদুর রহমান, ভাবি শেফালি বেগম, ছোট বোন নাজমা বেগমসহ আমরা উপরতলা তাদের চেম্বার থেকে তফসিল বর্ণিত জমিতে যাই। সেখানে পিটার ও তার পিতা দ্বীন মোহাম্মদের নেতৃত্বে প্রাচীর নির্মাণ করা দেখতে পাই। পিটারকে মামলার স্বাক্ষী ডেট ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রাচীর না দেওয়ার কথা বুঝাতে থাকলে মোবিন বাবু পেছন থেকে হাতুড়ি দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। এ সময় পিটার, আব্দুল মোমিন মন্টু, জিতু, মো. স্বপন, মুরাদ মিস্ত্রী, দ্বীন মোহাম্মদ ও লিয়াকত এবং অজ্ঞাতনামা আরও মিস্ত্রীসহ ১০-১৫ জন লোক স্লোগান দেয় ‘আর্মিকে মার, আর্মিকে শেষ কর, তাহলে লড়াই করার কেউ থাকবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক সেনাসদস্য বলেন, লোহার রড, কাঠের বাটাম ও হাতুড়ি দিয়ে আমাকে, আমার বড় ভাই ও ভাবিকে হামলা করে। মোবিন বাবু, স্বপন ও পিটার হত্যার উদ্দেশে আমার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে, কানে ইট দিয়ে স্বজোরে আঘাত করাতে আমার শ্রবণশক্তি হারিয়ে গেছে। পিটার ও স্বপনসহ অন্যরা আমার ভাবির ওপরও আঘাত করে। পরে আমি বোয়ালিয়া মডেল থানায় ১৪৩/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৫০৬/১১৪/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করি। বোয়ালিয়া থানার মামলা নং: ১২/১২, ইং ১৩/১/২০২৫ তারিখ।
সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, ১৪ জানুয়ারি আদালতে গেলে আসামিরা নারী ও শিশু আদালতের পাশে আসামি ও মিস্ত্রিসহ আরও ৪/৫ জন্য ব্যক্তি আমাকে দেখে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় তারা আমাকে কিল, ঘুষি ও চড়থাপ্পড় মারে। এরপর তারা আমাকে জবাই করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। এ ঘটনায় রাজপাড়া থানায় জিডি করেছি। তবে এখনো পুলিশ নীরব। আসামিদের সন্ধান দিলেও তারা আসামি ধরছে না। আসামিরা উল্টো আমাদের হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বিচ্ছিন্ন করার পেছনে মূল হোতা মন্টু, লিয়াকত ও দ্বীন মোহাম্মদ। এসব ঘটনায় নিরাপত্তা নিশ্চিতপূর্বক আসামিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাইফুল ইসলাম।
এদিনের সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল ইসলামের মা ফাতেমা বেগম, ছোট বোন নাজমা বেগম, ভাবি শেফালি বেগম ও সেনাবাহিনীর সাবেক সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ইলিয়াস হোসেনসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান অভিযুক্ত মোবিন বাবু বলেন, এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমি হাতুড়ি দিয়ে মারতে যাবো কোন দুঃখে? দুপক্ষের ঢিলাঢিলি হয়েছে, তাতে হয়তো ঢিল লেগেছে।
এ ব্যাপারে আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদি মাসুদ বলেন, ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমরা যখন যাচ্ছি, তখন (আসামি) পাচ্ছি না। আমরা রাত্রে গিয়ে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করছি। আমরা লোক লাগাচ্ছি, যদি পাই ধরে ফেলবো।