ঢাকা ০৮:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পঞ্চগড়ে মাসব্যাপী তারুণ্যের উৎসবে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান  লক্ষ্মীপুরে শতাধিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে দেয়ালিকা উৎসব ‘বিএনপি ২০০ সিট পেলেও এককভাবে ক্ষমতায় যাবে না, জাতীয় সরকার গঠন করবে’ সদরপুরে অটোরিক্সা-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে কলেজ ছাত্র নিহত জয়পুরহাট সীমান্তে বিএসএফের বেড়া, বিজিবির বাধায় কাজ বন্ধ নিখোঁজের ৪দিন পর পুকুরে মিলল মাদরাসা শিক্ষকের মরদেহ ভেঙ্গে দেয়া ইটভাটা প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে পুনরায় চালু! বেনজীরের অনিয়ম তদন্তে সাভানা রিসোর্টে অভিযান মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে না জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন শুরু

হোটেলে কাজ করেও মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ১১৭তম আল আমিন

মো. সফিকুর রহমান সিহাব, বাউফল (পটুয়াখালী)
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:১১:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫ ৩০ বার পড়া হয়েছে

পরিবারের সদস্যদের সাথে আল আমিন হাওলাদার

বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

‘ছেলেকে মানুষ করার জন্য খাবার হোটেলের ব্যবসা করেছি। রিকশা চালিয়েছি। রাতের বেলাও শ্রমিকের কাজও করেছি। আজ আর সেসব মনে নাই। কারণ, আমার ছেলে ডাক্তার হবে।’

বুকভরা গর্ব আর উচ্ছ্বাস নিয়ে এই কথাগুলো বলছিলেন মো. নিজাম উদ্দিন হাওলাদার। তার ছেলে মো. আল আমিন হাওলাদার এবার মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ করে নিয়েছেন। তাদের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামে।

নিজাম উদ্দিন হাওলাদারের বসতভিটা ছাড়া কিছুই নেই। বাড়ির কাছে ছোট এক কক্ষের একটি ভাড়া ঘরে খাবার হোটেলের ব্যবসা করেন। পাশাপাশি অন্যের জমিতে কৃষিকাজও করেন। তার স্ত্রী নাজমা বেগম একজন গৃহিণী। এই দম্পতির তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে আল আমিন দ্বিতীয়।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের মধ্যে আল আমিনের স্কোর ১৮৬ দশমিক ২৫। মেধাতালিকায় ১১৭তম হয়ে তিনি ঢাকা মেডিকেলে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।

তিনি বলেন, পঞ্চম শ্রেণিতে আমার রোল নম্বর ছিল ১৮। এরপরও বৃত্তি দেয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত ১৫ জনের বেশি ছাত্রের বৃত্তির জন্য আলাদা পাঠদান করাবেন না এবং বৃত্তির জন্য ফরম পূরণ করাবেন না। এ কারণে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারিনি। বিষয়টি আমাকে নাড়া দিয়েছিল। তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম আমাকে পড়াশোনা করে বড় হতে হবে। সেই স্বপ্ন পূরণে আজ এক ধাপ এগোলাম। আমার বিশ্বাস, সবার দোয়ায় ভালো কিছু করতে পারব ইনশা আল্লাহ।

তার মেডিকেলে ভর্তির খবরে স্থানীয় লোকজন, শিক্ষক, স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা অনেকেই ফুল নিয়ে বাড়িতে এসে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। চলছে মিষ্টিমুখ।

মাধবপুর বাজারের ব্যবসায়ী মো. নিজাম উল্লাহ বলেন, তার এমন ভালো ফলাফলে শুধু তার বাবা ও মা নয়, গোটা এলাকার মানুষ আনন্দিত ও গর্বিত।

আল আমিন পড়তে চান মেডিসিন নিয়ে। অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য কিছু করতে চান। তিনি বলেন, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলা না করে পড়াশোনায় মনোযোগ ছিল আমার। পড়াশোনার পাশাপাশি তখন থেকেই বাবাকে সহযোগিতা করতাম, হোটেলে বাবার সঙ্গে কাজ করতাম। এতে তাঁর খারাপ লাগত না, ভালো লাগত।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

হোটেলে কাজ করেও মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ১১৭তম আল আমিন

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:১১:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

‘ছেলেকে মানুষ করার জন্য খাবার হোটেলের ব্যবসা করেছি। রিকশা চালিয়েছি। রাতের বেলাও শ্রমিকের কাজও করেছি। আজ আর সেসব মনে নাই। কারণ, আমার ছেলে ডাক্তার হবে।’

বুকভরা গর্ব আর উচ্ছ্বাস নিয়ে এই কথাগুলো বলছিলেন মো. নিজাম উদ্দিন হাওলাদার। তার ছেলে মো. আল আমিন হাওলাদার এবার মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ করে নিয়েছেন। তাদের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামে।

নিজাম উদ্দিন হাওলাদারের বসতভিটা ছাড়া কিছুই নেই। বাড়ির কাছে ছোট এক কক্ষের একটি ভাড়া ঘরে খাবার হোটেলের ব্যবসা করেন। পাশাপাশি অন্যের জমিতে কৃষিকাজও করেন। তার স্ত্রী নাজমা বেগম একজন গৃহিণী। এই দম্পতির তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে আল আমিন দ্বিতীয়।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের মধ্যে আল আমিনের স্কোর ১৮৬ দশমিক ২৫। মেধাতালিকায় ১১৭তম হয়ে তিনি ঢাকা মেডিকেলে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।

তিনি বলেন, পঞ্চম শ্রেণিতে আমার রোল নম্বর ছিল ১৮। এরপরও বৃত্তি দেয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত ১৫ জনের বেশি ছাত্রের বৃত্তির জন্য আলাদা পাঠদান করাবেন না এবং বৃত্তির জন্য ফরম পূরণ করাবেন না। এ কারণে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারিনি। বিষয়টি আমাকে নাড়া দিয়েছিল। তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম আমাকে পড়াশোনা করে বড় হতে হবে। সেই স্বপ্ন পূরণে আজ এক ধাপ এগোলাম। আমার বিশ্বাস, সবার দোয়ায় ভালো কিছু করতে পারব ইনশা আল্লাহ।

তার মেডিকেলে ভর্তির খবরে স্থানীয় লোকজন, শিক্ষক, স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা অনেকেই ফুল নিয়ে বাড়িতে এসে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। চলছে মিষ্টিমুখ।

মাধবপুর বাজারের ব্যবসায়ী মো. নিজাম উল্লাহ বলেন, তার এমন ভালো ফলাফলে শুধু তার বাবা ও মা নয়, গোটা এলাকার মানুষ আনন্দিত ও গর্বিত।

আল আমিন পড়তে চান মেডিসিন নিয়ে। অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য কিছু করতে চান। তিনি বলেন, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলা না করে পড়াশোনায় মনোযোগ ছিল আমার। পড়াশোনার পাশাপাশি তখন থেকেই বাবাকে সহযোগিতা করতাম, হোটেলে বাবার সঙ্গে কাজ করতাম। এতে তাঁর খারাপ লাগত না, ভালো লাগত।