ঢাকা ০২:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে অর্ণব’র জন্মদিন উদযাপন

বাংলা টাইমস ডেস্ক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২২:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ৪৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জন্মদিন মানেই বাড়ীতে কেক কাটা,খাওয়া দাওয়ার বিশেষ আয়োজন।আত্মীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা আর ঘুরাঘুরি।কিন্তু এই চিরাচরিত সংস্কৃতির বাইরে গিয়ে নিজের জন্মদিন একটু ভিন্ন ভাবে কয়েকবছর ধরে পালন করে আসচ্ছেন চট্টগ্রামের অর্ণব।

অপরাজেয় বাংলাদেশ,একটি দরিদ্র,এতিম,অসহায় ও প্রতিবন্ধী শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।বলা যায়,পরিচয়হীন ছেলেমেয়েরা প্রতিনিয়ত তাদের মৌলিক চাহিদা গুলো এখান থেকে পেয়েই বেড়ে উঠচ্ছে।মানুষের মধ্যে যেন মানবতাবোধ এবং মনুষ্যত্ব দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।যার ফলশ্রুতিতে আমরা দেখি পথশিশুর সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।ঘর থেকে বের হলেই এমন কিছু দৃশ্য প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে যে এখন ছোট ছোট বাচ্চারা রাস্তায় পত্রিকা বিক্রি করে,ফুলবিক্রি করে।অবশ্য তাদের কথা ভাববেই বা কে। বাস্তবে বলতে গেলে তাদের কেউই নেই।যে বয়সে তাদের হাতে থাকার কথা ছিল বই-খাতা সে বয়সে তাদের হাতে দেখা যায় প্লাস্টিকের বস্তা কিংবা ভিক্ষার থালা।সমাজের এমনই পরিচয়হীন,অসহায় ও প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে অপরাজেয় বাংলাদেশ।

জানা যায়,কয়েকবছর ধরেই অর্ণব তার এই বিশেষ দিনটি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করার মাধ্যমে উদযাপন করে আসচ্ছেন।এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।নগরীর আনসার ক্লাব,জেলরোড,কোতোয়ালী এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রামস্থ অপরাজেয় বাংলাদেশ নামক সেল্টার হাউজে বিভিন্ন জায়গা হতে আসা দরিদ্র,এতিম,অসহায় ও প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে জন্মদিন উদযাপনের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন অর্ণব।

এমন নজিরবিহীন ভাবে নিজের জন্মদিন পালন সম্পর্কে জানতে চাইলে অর্ণব বলেন,সমাজে সবচেয়ে অসহায় হয়তো তাঁরাই,যার মধ্যে একদিকে পথশিশু,অপরদিকে বৃদ্ধাশ্রমে থাকা প্রবীণ ব্যাক্তিরা।তবে অপরাজেয় বাংলাদেশে আসা ছেলেমেয়ে গুলো কেউই নিজেদের পরিচয় জানে না।এই ক্ষেত্রে তাদের বেড়ে উঠার দিন গুলো ভাবলেই বোঝা যায় প্রতিটা দিনই যেন তাদের কাছে জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার লড়াই।তাই প্রতিবছরই আমার জন্মদিনটা এদের সঙ্গে কাটানো কিংবা এদের সাথে নিয়ে কেক কাটার মুহূর্ত টা আমি খুব উপভোগ করি।

প্রজন্মের উদ্দেশ্যে অর্ণব আরো বলেন,কখনো সময় হলে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাথে সময় কাটান,বুঝতে পারবেন আপনার জীবনের মানে টা কি।আমরা আসলে শুধুমাত্র নিজেদেরকে নিয়েই পরে আছি,অথচ আপনার-আমার মত এমন অনেকেই আছে যারা একটু ভালো করে বাঁচতে চায়,সুন্দর একটা জীবন গঠন করতে চায়।কিন্তু কোনো না কোনো কারনে তাদের জীবনের লক্ষে পৌছাতে ব্যর্থ হতে হয়। অথচ আপনি কিংবা আমি চাইলেই এমন শিশুদের জন্য কিছু করতে পারি।গোটা এই জীবনের দীর্ঘ বেঁচে থাকার এই সময়টার মধ্যে এই সকল পরিচয়হীন অনাথ শিশুদের সাথে কিছু মুহূর্ত ব্যয় করলে বুঝা যায়,নিজের এবং পরিবারের প্রতি কতটা কৃতজ্ঞ আমরা তা হয়তো একটু হলেও হয়তো অনুভব করা যায়।

অপরাজেয় বাংলাদেশ,চট্টগ্রাম জোনের ইনচার্জ জিনাত আরা বেগম বলেন,বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা অপরাজেয় বাংলাদেশ নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পক্ষ থেকে আমি অর্ণব কে অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানায়।অর্ণব এর মতো সবাই নিজ নিজ গন্ডি থেকে এগিয়ে আসে বলেই এখনো আমাদের শিশুরা সুন্দর জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখে,কেউ আসলে তারাও খুব আনন্দিত হয়।অর্ণবের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা ও দোয়া থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে অর্ণব’র জন্মদিন উদযাপন

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২২:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

জন্মদিন মানেই বাড়ীতে কেক কাটা,খাওয়া দাওয়ার বিশেষ আয়োজন।আত্মীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা আর ঘুরাঘুরি।কিন্তু এই চিরাচরিত সংস্কৃতির বাইরে গিয়ে নিজের জন্মদিন একটু ভিন্ন ভাবে কয়েকবছর ধরে পালন করে আসচ্ছেন চট্টগ্রামের অর্ণব।

অপরাজেয় বাংলাদেশ,একটি দরিদ্র,এতিম,অসহায় ও প্রতিবন্ধী শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।বলা যায়,পরিচয়হীন ছেলেমেয়েরা প্রতিনিয়ত তাদের মৌলিক চাহিদা গুলো এখান থেকে পেয়েই বেড়ে উঠচ্ছে।মানুষের মধ্যে যেন মানবতাবোধ এবং মনুষ্যত্ব দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।যার ফলশ্রুতিতে আমরা দেখি পথশিশুর সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।ঘর থেকে বের হলেই এমন কিছু দৃশ্য প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে যে এখন ছোট ছোট বাচ্চারা রাস্তায় পত্রিকা বিক্রি করে,ফুলবিক্রি করে।অবশ্য তাদের কথা ভাববেই বা কে। বাস্তবে বলতে গেলে তাদের কেউই নেই।যে বয়সে তাদের হাতে থাকার কথা ছিল বই-খাতা সে বয়সে তাদের হাতে দেখা যায় প্লাস্টিকের বস্তা কিংবা ভিক্ষার থালা।সমাজের এমনই পরিচয়হীন,অসহায় ও প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে অপরাজেয় বাংলাদেশ।

জানা যায়,কয়েকবছর ধরেই অর্ণব তার এই বিশেষ দিনটি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করার মাধ্যমে উদযাপন করে আসচ্ছেন।এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।নগরীর আনসার ক্লাব,জেলরোড,কোতোয়ালী এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রামস্থ অপরাজেয় বাংলাদেশ নামক সেল্টার হাউজে বিভিন্ন জায়গা হতে আসা দরিদ্র,এতিম,অসহায় ও প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে জন্মদিন উদযাপনের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন অর্ণব।

এমন নজিরবিহীন ভাবে নিজের জন্মদিন পালন সম্পর্কে জানতে চাইলে অর্ণব বলেন,সমাজে সবচেয়ে অসহায় হয়তো তাঁরাই,যার মধ্যে একদিকে পথশিশু,অপরদিকে বৃদ্ধাশ্রমে থাকা প্রবীণ ব্যাক্তিরা।তবে অপরাজেয় বাংলাদেশে আসা ছেলেমেয়ে গুলো কেউই নিজেদের পরিচয় জানে না।এই ক্ষেত্রে তাদের বেড়ে উঠার দিন গুলো ভাবলেই বোঝা যায় প্রতিটা দিনই যেন তাদের কাছে জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার লড়াই।তাই প্রতিবছরই আমার জন্মদিনটা এদের সঙ্গে কাটানো কিংবা এদের সাথে নিয়ে কেক কাটার মুহূর্ত টা আমি খুব উপভোগ করি।

প্রজন্মের উদ্দেশ্যে অর্ণব আরো বলেন,কখনো সময় হলে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাথে সময় কাটান,বুঝতে পারবেন আপনার জীবনের মানে টা কি।আমরা আসলে শুধুমাত্র নিজেদেরকে নিয়েই পরে আছি,অথচ আপনার-আমার মত এমন অনেকেই আছে যারা একটু ভালো করে বাঁচতে চায়,সুন্দর একটা জীবন গঠন করতে চায়।কিন্তু কোনো না কোনো কারনে তাদের জীবনের লক্ষে পৌছাতে ব্যর্থ হতে হয়। অথচ আপনি কিংবা আমি চাইলেই এমন শিশুদের জন্য কিছু করতে পারি।গোটা এই জীবনের দীর্ঘ বেঁচে থাকার এই সময়টার মধ্যে এই সকল পরিচয়হীন অনাথ শিশুদের সাথে কিছু মুহূর্ত ব্যয় করলে বুঝা যায়,নিজের এবং পরিবারের প্রতি কতটা কৃতজ্ঞ আমরা তা হয়তো একটু হলেও হয়তো অনুভব করা যায়।

অপরাজেয় বাংলাদেশ,চট্টগ্রাম জোনের ইনচার্জ জিনাত আরা বেগম বলেন,বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা অপরাজেয় বাংলাদেশ নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পক্ষ থেকে আমি অর্ণব কে অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানায়।অর্ণব এর মতো সবাই নিজ নিজ গন্ডি থেকে এগিয়ে আসে বলেই এখনো আমাদের শিশুরা সুন্দর জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখে,কেউ আসলে তারাও খুব আনন্দিত হয়।অর্ণবের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা ও দোয়া থাকবে।