তানোরে এ্যাডভোকেট তারেকের সভাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৪৭:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ৩১ বার পড়া হয়েছে
রাজশাহীর তানোরে এ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেকের সভাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ ১৫ ডিসেম্বর রোববার বিকেলের দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে ঘটে সংঘর্ষের ঘটনাটি। এঘটনায় বিএনপি নেতা রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশি সুলতানুল ইসলাম তারেক ও পৌর যুবদলের আহবায়ক সাইদুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
পরে তারেক গ্রুপের নেতাকর্মীদের ধাওয়ায় পালিয়ে যায় বিএনপি নেতা সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান গ্রæপের নেতাকর্মীরা। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে থানা মোড়ে পথসভায় বক্তব্য দেন, এ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক। সংঘর্ষের ঘটনায় সাধারণের মাঝে ব্যাহক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘন্টাব্যাপি জনদূর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষরা। তবে, ঘটনাস্থলে মিজানকে দেখা যায়নি বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। সন্ধ্যায় এরির্পোট লেখা পর্যন্ত বিএনপির দুই গ্রæপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে।
প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, রাজশাহী-১ (তানোর গোদাগাড়ী) আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশি বিশিষ্ট শিল্পপতি এ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক কেন্দ্রীয় বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে তানোর থানা মোড়, মুন্ডুমালা বাজার ও বাধাইড় ইউপিতে পথসভা করার কথা। সেইমতে তানোর উপজেলার কামারগাঁ, কলমা ও তালন্দ থেকে ১৩-১৪টির মত মাইক্রোবাস তানোর সদরে শোডাউন নিয়ে আসে। এর আগে দুটি মাইক্রোবাস উপজেলা পরিষদ ও ডাকবাংলো চত্বরে দেয়াল ঘেঁষে রাখা হয়। এসময় মাইক্রোবাস থেকে নামিয়ে মারপিট শুরু করে মিজান গ্রæপের পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন তোফা ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানের বোন জামাই হাবিব জোবাসহ বেস কিছু নেতাকর্মীরা। প্রায় আধাঘন্টা পর্যন্ত চলে মারপিট ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া আর ইট পাটকেল নিক্ষেপ। সেই সাঙ্গে মাইক্রোবাস ভাংচুর করা হয়। এসময় পৌর যুবদলের আহবায়ক সাইদুর রহমান জিয়া কেউসহ বেশ কয়েকজনকে মারধর করা হয়। মারপিটের সময় রাস্তা দিয়ে আসার পথে ওয়ার্ড যুবদলের নেতা বজলুর রহমানের পিতা হাশেমের মাথা ফাটিয়ে দেয় মিজান গ্রæপের লোকজন। সংবাদ পেয়ে বিএনপি নেতা তারেকসহ নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় মিছিল দেখে পালিয়ে যায় মিজান গ্রæপের লোকজন। এতে প্রচন্ড পায়ে আঘাত পায় তারেক। প্রায় ঘন্টা ব্যাপি সংঘর্ষ চললেও পুলিশের কোন দেখা পাওয়া যায়নি। তবে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর পুলিশের গাড়ি উপজেলা গেটে দেখা যায়।
এবিষয়ে তানোর পৌর যুবদলের আহবায়ক সাইদুর ও যুবদল নেতা বজলুসহ তারেক গ্রæপের নেতাকর্মীরা জানান, ৩১ দফা বাস্তবায়নে আমাদের শান্তিপূর্ণ সভাকে পন্ড করতে সাবেক মেয়র মিজানের বাহিনি হামলা চালিয়েছে। আমরা তো অন্য কোন দলের সভা করতে আসিনি। আমরা বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে গণসংযোগ ও পথসভায় শোডাউন দিচ্ছি। হামলায় উভয় গ্রæপের অন্তত ৮ থেকে ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এনিয়ে উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক আতিকুর রহমান জানান, আমরা বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় কোন ধরনের সভা সমাবেশ বা প্রকাশ্যে থাকতে পারিনি। আমরা তো বিএনপির নেতাকে নিয়ে ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য সাধারণ মানুষের মাঝে পৌঁছে দিচ্ছি। কিন্তু সভা পন্ড করতে সাবেক মেয়র মিজান তার বাহিনী দিয়ে যেভাবে হামলা মারধর, মোবাইল ভাংচুর, গাড়িতে ইট নিক্ষেপ ও নেতা তারেক ভাইকেও ইটের আঘাত করা হয়েছে এটা নিয়ে আমরা ব্যবস্থা নিবো।
পরে উপজেলা থেকে মিছিল নিয়ে থানা মোড়ে ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য লিফলেট বিতরণ ও পথসভা হয়। পথসভায় বক্তব্য রাখেন, এ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক। তিনি বলেন, আমি নেতাকর্মী নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে গণসংযোগ ও পথসভা বাস্তবায়নে নেমেছি। কিন্তু দেশ থেকে স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের দোসররা এজেন্ট বাস্তবায়ন করতে মরিয়া হয়ে পড়েছেন। তারই অংশ হিসেবে সভাকে কেন্দ্র করে মারপিট হয়েছে। তারা যদি প্রকৃত পক্ষে বিএনপির আদর্শ ধারণ করত তাহলে বিএনপির ৩১ দফাকে অমান্য করত না। তিনি এই হামলার বিচার চান দলীয় ফোরামে ও দেশবাসীর কাছে। মিজান গ্রæপের নেতাদের দাবি, এই আসনে ধানের শীষের একমাত্র কান্ডারী মেজর জেনারেল (অব) শরিফ উদ্দিন। এর বাহিরে কোন কথা চলবে না বলে হুংকার দেন। তবে, এনিয়ে সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজানকে ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গ, তানোর থানা মোড় থেকে দেবিপুর মোড় হয়ে পাঠাকাটা, কৈলহাট দিয়ে বাঁধাইড় ইউপির বৈদ্যপুর ও শিদপুরে পথসভা শেষে রাতে উপজেলা বাঁধাইড় ইউপির হাপানিয়া দোগাছি গ্রামে তাফসীরুল কোরআন মাহফিলের প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান ও বক্তব্য রাখেন বিএনপির এই নেতা।
এব্যাপারে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান মিজান বলেন, এমন ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বিষয়টি নিয়ে কোন পক্ষ অভিযোগ করেননি। তবে, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত ও পুলিশের অনুক‚লে রয়েছে বলে জানান ওসি।