ঢাকা ০১:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জলবায়ু পরিবর্তন, দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৪৭:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ২২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। সম্প্রতি রাজধানী ঢাকার বাতাসেও নেই স্বস্তির খবর। কয়েক দিন ধরেই বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে মেগাসিটি ঢাকা। এছাড়া বেশ কয়েক দিন ধরেই ভয়াবহ বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত ভারতের দিল্লি শহর।

ঢাকায় বায়ু দূষণের জন্য ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলোকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে, বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার ও তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বেড়েছে। ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যান। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
ঢাকার বাতাস গতকাল রোববার ছিলো ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’। বিশ্বে বায়ুদূষণের তালিকায় ২৯১ স্কোর নিয়ে সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ঢাকা। বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের সূচক থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এই সময় বায়ুদূষণের শীর্ষে ছিল পাকিস্তানের লাহোর। শহরটির বায়ুর মানের স্কোর ছিল ৩৯৯। অর্থাৎ সেখানকার বায়ু ‘দুর্যোগপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ’ পর্যায়ে ছিল। সূচকে তৃতীয় অবস্থানে ছিল ভারতে নয়াদিল্লি, শহরটির স্কোর ছিল ২৪৬। অর্থাৎ সেখানকার বায়ুর মানও ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’। এছাড়া বায়ুদূষণে চতুর্থ অবস্থানে ছিল মিশরের কায়রো, যার স্কোর ছিল ১৯৩ ও একই স্কোরে ভারতের কলকাতা পঞ্চম অবস্থানে ছিল।

আইকিউএয়ারের মানদন্ড অনুযায়ী, স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়।

২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে। যেমন -বস্তুকণা, এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

উল্লেখ্য, সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার দূষিত বাতাসের শহরের এ তালিকা প্রকাশ করে। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

জলবায়ু পরিবর্তন, দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৪৭:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। সম্প্রতি রাজধানী ঢাকার বাতাসেও নেই স্বস্তির খবর। কয়েক দিন ধরেই বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে মেগাসিটি ঢাকা। এছাড়া বেশ কয়েক দিন ধরেই ভয়াবহ বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত ভারতের দিল্লি শহর।

ঢাকায় বায়ু দূষণের জন্য ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলোকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে, বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার ও তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বেড়েছে। ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যান। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
ঢাকার বাতাস গতকাল রোববার ছিলো ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’। বিশ্বে বায়ুদূষণের তালিকায় ২৯১ স্কোর নিয়ে সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ঢাকা। বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের সূচক থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এই সময় বায়ুদূষণের শীর্ষে ছিল পাকিস্তানের লাহোর। শহরটির বায়ুর মানের স্কোর ছিল ৩৯৯। অর্থাৎ সেখানকার বায়ু ‘দুর্যোগপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ’ পর্যায়ে ছিল। সূচকে তৃতীয় অবস্থানে ছিল ভারতে নয়াদিল্লি, শহরটির স্কোর ছিল ২৪৬। অর্থাৎ সেখানকার বায়ুর মানও ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’। এছাড়া বায়ুদূষণে চতুর্থ অবস্থানে ছিল মিশরের কায়রো, যার স্কোর ছিল ১৯৩ ও একই স্কোরে ভারতের কলকাতা পঞ্চম অবস্থানে ছিল।

আইকিউএয়ারের মানদন্ড অনুযায়ী, স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়।

২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে। যেমন -বস্তুকণা, এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

উল্লেখ্য, সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার দূষিত বাতাসের শহরের এ তালিকা প্রকাশ করে। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়।