স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা বেতন পাবেন ইএফটিতে
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৫০:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৭৪ বার পড়া হয়েছে
সারা দেশের বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতার সরকারি অংশ বা এমপিও ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) প্রক্রিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এজন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার তালিকাভুক্তি বা এমপিওভুক্তি এবং উচ্চতর গ্রেড, বিএড স্কেলসহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা পাওয়ার আবেদনের সময় পুনর্নির্ধারণ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
নতুন এই সূচি অনুসারে, ফেব্রুয়ারি, এপ্রিল, জুনের মত প্রতি ‘জোড়’ মাসের ৬ তারিখের মধ্যে বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্তি ও এ সংক্রান্ত আবেদন করতে পারবেন। এর আগে জোড় মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত এমপিওভুক্তির আবেদনের সুযোগ ছিল।
আর জানুয়ারি, মার্চ, মে বা জুলাইয়ের মত প্রতি ‘বেজোড়’ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে এমপিও কমিটি সভা করে আবেদন করা শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত নেবে।
সরকারি কর্মচারীরা ইএফটিতে বেতন-ভাতা পান। অন্যদিকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে অনেকটা ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হয়।
ব্যাংকগুলো মাধ্যমে বেতন-ভাতা ছাড়ের জন্য কয়েক পর্যায়ে অনুমোদনসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অনেক ক্ষেত্রেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পেতে দেরি হয়। অনেক সময় পরের মাসের ১০ তারিখের পরও আগের মাসের বেতন-ভাতা জোটে।
বিগত সময়ে এক ঈদের উৎসব ভাতা আরেক ঈদে পাওয়ার মত ‘বিব্রতকর’ পরিস্থিতিতেও পড়তে হয়েছে শিক্ষাব্যবস্থার সিংহভাগ পরিচালনা করা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের। ফলে শিক্ষকরাও সরকারি কর্মীদের মত মাসের শুরুতে ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও ইএফটিতে ছাড় করতেও তথ্য সংগ্রহের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক অধিশাখার উপসচিব সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী বলেন, গত ১২ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ে সভা করে জানুয়ারি থেকে বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও ইএফটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি আমাদের টার্গেট। এ জন্য শিক্ষকদের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এটি টেকনিক্যাল প্রক্রিয়া।
তিনি বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সব শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিও ইএফটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে তথ্য সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তথ্য সংগ্রহ শেষে তা আইবাস প্লাস প্লাস প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা গেলে আমরা জানুয়ারি থেকেই ইএফটিতে তাদের এমপিও দেওয়া হবে।
অধিদপ্তরের মাধ্যমিক উইংয়ের পরিচালক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ইএফটিতে বেতন ভাতা দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করতেই এমপিওভুক্তির আবেদনের সময় পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন সূচি অনুসারে, শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির আবেদন প্রতি জোড় মাসের ৬ তারিখের মধ্যে প্রতিষ্ঠান প্রধানের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা ওই মাসের ১২ তারিখের মধ্যে ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা ২০ তারিখের মধ্যে তা যাচাই ও নিষ্পত্তি করে আঞ্চলিক পরিচালক ও উপপরিচালকদের পাঠাবেন।
তারা বেজোড় মাসের ৬ তারিখের মধ্যে সেগুলো যাচাই ও অনুমোদন দিয়ে অনুমোদিত আবেদন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠাবেন। অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখা সেগুলো পুনর্যাচাই করে তা বেজোড় মাসের ৮ তারিখ ‘এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (ইমআইএস)’ পাঠাবেন।
প্রতি বেজোড় মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখ সভা করে আবেদন করা শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত নেবে এমপিও কমিটি।
এর আগে গত ১৪ নভেম্বর অধিদপ্তর থেকে জারি করা এক আদেশে স্কুল-কলেজের এমপিও ইএফটিতে দেওয়ার তথ্য দিতে সব শিক্ষক-কর্মচারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র, জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে রেজিস্ট্রেশন করা মোবাইল ফোন নম্বর আর তারা যে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এমপিও পান ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ১৩ থেকে ১৭ ডিজিটের নম্বর সংগ্রহ করে রাখতে বলা হয়েছিল।