ঢাকা ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাস্তা যেখানে, অটো যাবে সেখানে

বিশেষ প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:১৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ২১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঢাকা মহানগরীতে তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার মেয়াদ শেষ হলেও এখনো অবাধে সড়ক-মহাসড়কে অবাধে চলাচল করছে এই যানটি। আদালতের নির্দেশনার প্রতিবাদে টানা তৃতীয় দিনের মতো শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করে অটোরিকশার চালকরা।

বিক্ষোভ মিছিল থেকে ‘রাস্তা আছে যেখানে, অটো যাবে সেখানে, আদালতের নির্দেশনা মানি না মানবো না’ বলে অটোরিকশা চালকরা স্লোগান দিয়ে রাজপথ উত্তপ্ত করেন। অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবারও রাজধানীর জুরাইনে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঢাকা-পদ্মা সেতু রুটে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেনসহ অন্যান্য যান চলাচল। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।

পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় বিকাল ৩টার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় যায়। এর আগে ব্যাটারিচালিত যানবাহন সড়ক-মহাসড়ক ও ফ্লাইওভারে চলাচল বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে আইনি নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. বাহাউদ্দিন আল ইমরান।

সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকার অভ্যন্তরীণ রুটে যানজট এড়াতে বৃত্তাকার হিসেবে পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচলে গাবতলী থেকে বাবুবাজার বেড়িবাঁধের প্রায় সাড়ে ১১কিলোমিটার সড়কটি রাজধানীর ব্যস্ততম মহাসড়ক হিসেবে পরিচিতি পায়। কিন্তু দীর্ঘ এই পথে মোহাম্মপুরের বছিলা, রায়েরবাজার, আদাবর, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও লালবাগের সীমান্ত ঘেঁষা সড়কটিতে সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট চক্রের নিয়ন্ত্রণে অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ও মিশুকের দৌরাত্ম্য ক্রমেই বাড়ছে। এই সড়কে চলাচলকারী গণপরিবহন, লেগুনাসহ অন্যান্য যাত্রীবাহী বাস ইজিবাইক, মিশুক ও অটোরিকশার দাপটে পুরোটাই অসহায়। এমন দৃশ্য দেখে ট্রাফিক পুলিশও রীতিমতো হতভম্ব।

গত ১৯ নভেম্বর রাজধানী ঢাকার সব সড়ক থেকে অটোরিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পর, তা প্রত্যাখ্যান করে বেড়িবাঁধে টানা তিনদিন ধরে সড়ক অবোরধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেন অটোরিকশা চালকরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবার বেলা ১০টা থেকে রাজধানীর জুরাইন রেলগেট এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে অটোরিকশা চালকরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ১১টার দিকে শত শত বিক্ষোভকারী জুরাইন রেলগেটসহ গণপরিবহন চলাচলের রাস্তাও অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। রেলপথ অবরোধের কারণে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নারায়ণগঞ্জগামী নারায়ণগঞ্জ কমিউটার ট্রেন।

অন্যদিকে অবরোধের কারণে কমলাপুরের শহরতলি স্টেশনে খুলনাগামী নকশিকাঁথা কমিউটার ট্রেনও আটকা পড়ে। মুহুর্তের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় সড়কপথে চলাচলকারী গণপরিবহনসহ অন্যান্য যানবাহন। পরে খবর পেয়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের সড়ক ও রেলপথ ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এরপর শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে জুরাইন রেলগেট, ছাপিয়ে শ্যামপুরের পোস্তাগোলা ও গেন্ডারিয়াসহ আশপাশের এলাকায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে অবরোধকারীরা সড়ক থেকে পিছু হটলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

বিকাল ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকা থেকে ফরিদপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনাগামী অনেক যাত্রী এখন কমলাপুর শহরতলি স্টেশনে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।

কমলাপুর স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন জানান, বেলা ১১টা থেকে জুরাইন এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা রেললাইন খল করে অবরোধ শুরু করে। বেলা পৌনে ১২টার দিকে অবরোধের কারণে জুরাইন রেল স্টেশনে নারায়ণগঞ্জ কমিউটার আটকে যায়। একই কারণে খুলনাগামী নকশিকাঁথা কমিউটার ট্রেনটি কমলাপুরের শহরতলি স্টেশনে আটকে থাকে। এতে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রেল যোগাযোগ ছাড়াও ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের রেল চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

টানা ৪ ঘন্টা সড়ক ও রেলপথ অবরোধের কারণে যানবাহন ও ট্রেনে যাত্রীসহ ওই রুটে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েন। রেললাইন অবরোধ ও হামলার ঘটনায় রেলযাত্রীরা জিআরপি পুলিশকে তারে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। যাত্রীদের নিরাপত্তা ও রেলের ক্ষতি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ রেল চলাচলে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।

শ্যামপুর থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুন নাহার বলেন, অবরোধের কারণে ট্রেন ও যানবাহন চলাচল কয়েকঘন্টা বন্ধ থাকলেও বিকেলে স্বাভাবিক হয়ে আসে। ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।

এর আগে গত ২১ নভেম্বর মহাখালী রেলগেট এলাকায় অটোরিকশা চালকদের অবরোধে ছয় ঘণ্টা বন্ধ ছিল ট্রেন ও সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। এদিন মহাখালীতে বেলা ১১টার দিকে রিকশাচালকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে রিকশাচালকরা রেললাইনের পাথর দিয়ে মহাখালী এসকেএস শপিং মল, রাওয়া ক্লাব ও সিটি ব্যাংকের একটি এটিএম বুথ ভাঙচুর করে।

গত ২০ নভেম্বর যাত্রাবাড়ীর য়াগঞ্জ এলাকায় সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন অটোরিকশা চালকরা। এসময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একইদিন রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুরের বছিলা, লালবাগ-কামরাঙ্গীরচরের বেড়িবাঁধ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে অটোরিকশা চালকরা।

উল্লেখ্য, ঢাকা মহানগর এলাকা থেকে তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে গত ১৯ নভেম্বর নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। প্যাডেলচালিত রিকশা সমিতির করা একটি রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

রাস্তা যেখানে, অটো যাবে সেখানে

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:১৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

ঢাকা মহানগরীতে তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার মেয়াদ শেষ হলেও এখনো অবাধে সড়ক-মহাসড়কে অবাধে চলাচল করছে এই যানটি। আদালতের নির্দেশনার প্রতিবাদে টানা তৃতীয় দিনের মতো শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করে অটোরিকশার চালকরা।

বিক্ষোভ মিছিল থেকে ‘রাস্তা আছে যেখানে, অটো যাবে সেখানে, আদালতের নির্দেশনা মানি না মানবো না’ বলে অটোরিকশা চালকরা স্লোগান দিয়ে রাজপথ উত্তপ্ত করেন। অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবারও রাজধানীর জুরাইনে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঢাকা-পদ্মা সেতু রুটে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেনসহ অন্যান্য যান চলাচল। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।

পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় বিকাল ৩টার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় যায়। এর আগে ব্যাটারিচালিত যানবাহন সড়ক-মহাসড়ক ও ফ্লাইওভারে চলাচল বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে আইনি নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. বাহাউদ্দিন আল ইমরান।

সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকার অভ্যন্তরীণ রুটে যানজট এড়াতে বৃত্তাকার হিসেবে পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচলে গাবতলী থেকে বাবুবাজার বেড়িবাঁধের প্রায় সাড়ে ১১কিলোমিটার সড়কটি রাজধানীর ব্যস্ততম মহাসড়ক হিসেবে পরিচিতি পায়। কিন্তু দীর্ঘ এই পথে মোহাম্মপুরের বছিলা, রায়েরবাজার, আদাবর, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও লালবাগের সীমান্ত ঘেঁষা সড়কটিতে সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট চক্রের নিয়ন্ত্রণে অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ও মিশুকের দৌরাত্ম্য ক্রমেই বাড়ছে। এই সড়কে চলাচলকারী গণপরিবহন, লেগুনাসহ অন্যান্য যাত্রীবাহী বাস ইজিবাইক, মিশুক ও অটোরিকশার দাপটে পুরোটাই অসহায়। এমন দৃশ্য দেখে ট্রাফিক পুলিশও রীতিমতো হতভম্ব।

গত ১৯ নভেম্বর রাজধানী ঢাকার সব সড়ক থেকে অটোরিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পর, তা প্রত্যাখ্যান করে বেড়িবাঁধে টানা তিনদিন ধরে সড়ক অবোরধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেন অটোরিকশা চালকরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবার বেলা ১০টা থেকে রাজধানীর জুরাইন রেলগেট এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে অটোরিকশা চালকরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ১১টার দিকে শত শত বিক্ষোভকারী জুরাইন রেলগেটসহ গণপরিবহন চলাচলের রাস্তাও অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। রেলপথ অবরোধের কারণে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নারায়ণগঞ্জগামী নারায়ণগঞ্জ কমিউটার ট্রেন।

অন্যদিকে অবরোধের কারণে কমলাপুরের শহরতলি স্টেশনে খুলনাগামী নকশিকাঁথা কমিউটার ট্রেনও আটকা পড়ে। মুহুর্তের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় সড়কপথে চলাচলকারী গণপরিবহনসহ অন্যান্য যানবাহন। পরে খবর পেয়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের সড়ক ও রেলপথ ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এরপর শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে জুরাইন রেলগেট, ছাপিয়ে শ্যামপুরের পোস্তাগোলা ও গেন্ডারিয়াসহ আশপাশের এলাকায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে অবরোধকারীরা সড়ক থেকে পিছু হটলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

বিকাল ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকা থেকে ফরিদপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনাগামী অনেক যাত্রী এখন কমলাপুর শহরতলি স্টেশনে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।

কমলাপুর স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন জানান, বেলা ১১টা থেকে জুরাইন এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা রেললাইন খল করে অবরোধ শুরু করে। বেলা পৌনে ১২টার দিকে অবরোধের কারণে জুরাইন রেল স্টেশনে নারায়ণগঞ্জ কমিউটার আটকে যায়। একই কারণে খুলনাগামী নকশিকাঁথা কমিউটার ট্রেনটি কমলাপুরের শহরতলি স্টেশনে আটকে থাকে। এতে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রেল যোগাযোগ ছাড়াও ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের রেল চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

টানা ৪ ঘন্টা সড়ক ও রেলপথ অবরোধের কারণে যানবাহন ও ট্রেনে যাত্রীসহ ওই রুটে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েন। রেললাইন অবরোধ ও হামলার ঘটনায় রেলযাত্রীরা জিআরপি পুলিশকে তারে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। যাত্রীদের নিরাপত্তা ও রেলের ক্ষতি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ রেল চলাচলে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।

শ্যামপুর থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুন নাহার বলেন, অবরোধের কারণে ট্রেন ও যানবাহন চলাচল কয়েকঘন্টা বন্ধ থাকলেও বিকেলে স্বাভাবিক হয়ে আসে। ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।

এর আগে গত ২১ নভেম্বর মহাখালী রেলগেট এলাকায় অটোরিকশা চালকদের অবরোধে ছয় ঘণ্টা বন্ধ ছিল ট্রেন ও সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। এদিন মহাখালীতে বেলা ১১টার দিকে রিকশাচালকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে রিকশাচালকরা রেললাইনের পাথর দিয়ে মহাখালী এসকেএস শপিং মল, রাওয়া ক্লাব ও সিটি ব্যাংকের একটি এটিএম বুথ ভাঙচুর করে।

গত ২০ নভেম্বর যাত্রাবাড়ীর য়াগঞ্জ এলাকায় সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন অটোরিকশা চালকরা। এসময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একইদিন রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুরের বছিলা, লালবাগ-কামরাঙ্গীরচরের বেড়িবাঁধ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে অটোরিকশা চালকরা।

উল্লেখ্য, ঢাকা মহানগর এলাকা থেকে তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে গত ১৯ নভেম্বর নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। প্যাডেলচালিত রিকশা সমিতির করা একটি রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।