ঢাকা ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রুট পারমিট ছাড়াই ঢাকায় চলছে বাস

 নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:১৭:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৪১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজধানী ঢাকায় রুট পারমিট ছাড়াই চলাচল করছে গণপরিবহন। আর এই সংখ্য ১ হাজার ৬৪৬টি। কাগজে-কলমে ১২৮টি সচল রুটে ৭ হাজার ৯১টি বাস চলাচল করছে। এরমধ্যে তিন হাজার ৪২৭টি বাস নিজেদের রুটে চলাচল করে। দুই হাজার ১৮টি অন্য রুটের ও এক হাজার ৬৪৬টি বাস রুট পারমিট ছাড়াই চলাচল করছে। এছাড়া ৭ হাজার ৯১টি বাসের মধ্যে ৯৯২টির ফিটনেস নেই।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রিপোর্টার্স ফর রেল অ্যান্ড রোড সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানায় ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)।

ডিটিসিএ জানায়, ঢাকা শহরে তিন থেকে সাড়ে ৪ হাজারের মতো বাস চললেও কাগজ-কলমে ৭ হাজার ৯১টি বাসের নিবন্ধন রয়েছে। বর্তমানে ঢাকা মহানগরীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ৩৮৮টি রুটের অনুমোদন রয়েছে। এরমধ্যে দুটি রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে।

ডিটিসিএ আরও জানায়, গণ-পরিবহনের সমন্বিত ই-টিকেটিং ব্যবস্থা প্রবর্তন ও ভাড়া আদায়ের লক্ষ্যে ডিটিএসএ স্মার্ট কার্ড প্রচলন করা হয়েছে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) কারিগরি সহযোগিতায় স্বয়ংক্রিয় ভাড়া আদায় ব্যবস্থা প্রচলন ও ভাড়া আদায় পদ্ধতি সমন্বয় করার লক্ষ্যে ডিটিসিএতে ক্লিয়ারিং হাউজ স্থাপন করা হয়েছে।

এদিকে, পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি এম এ বাতেন বলেন, আরটিসি মিটিং হয় না বলেই  অনেক বাসমালিক তাদের নতুন নিয়ে আসা বাসগুলোর রুট পারমিট করাতে পারছে না। দীর্ঘদিন বাসগুলো বসিয়ে রাখতে তারা রাজি নন। তারা সড়কে বাসগুলো নামিয়ে দিয়েছে। তাতে দেখা যায়, একটি রুটে ২০টি বাস হলেই যেখানে যথেষ্ট, সেখানে ৪০-৫০টি বাস নামানো হয়েছে। যা সড়কে যানজটের অন্যতম কারণ।

এসব অবৈধ বাসের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে বিআরটিএ। শুধু ঢাকা নয়, খুলনা মহানগরীতেও চলছে অভিযান। বিআরটিএর এনফোর্সমেন্ট বিভাগের তথ্য বলছে, গত ১২ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকা ও খুলনায় বিআরটিএর এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা রুট পারমিট ভায়োলেশন, হাইড্রোলিক হর্ন বাজানো, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও ফিটনেস না থাকার অপরাধে ১৫৮টি মামলায় ২ লাখ ৫৭ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে। অভিযানে ২২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

এম এ বাতেন বলেন, নগরীর বাস রুট রেশনালাইজেশন প্রক্রিয়াকে এখন ঢেলে সাজাতে হবে। বিআরটিএকে তালিকা দিতে হবে যে নগরীর কোন বাসগুলোর ফিটনেস আর রুট পারমিট আছে। সেগুলো ঢাকায় চলতে পারবে। ২০ বছরের মেয়াদ ফুরানো বাসগুলো ইতোমধ্যে আমরা ঢাকার বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এখন যে বাসগুলোর ফিটনেস আছে সেগুলোকে নিয়ে সরকারি-বেসরকারি কোম্পানি গঠন করে বাস রুট পরিচালনা করতে হবে। যারা বাস দেবে না তারা ঢাকায় গাড়ি চালাতে পারবে না।

ঢাকার গণপরিবহনব্যবস্থাকে শৃঙ্খলায় আনতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি করে দিয়েছিল ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। তাতে বলা হয়েছিল, নগরীর ৪২টি রুটের প্রতিটিতে শুধু একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির বাস চলবে। রাজধানীর ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত ২১ নম্বর রুটে বাস চলাচলের মাধ্যমে বাস রুট রেশনালাইজেশনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

তবে দেখা যায়, ২১ নম্বর রুটে আরও অনেক বেসরকারি কোম্পানির বাস চলাচল করছে। এতে আর্থিক ক্ষতি হওয়ায় দুটি বেসরকারি বাস কোম্পানির মালিক তাদের সব বাস সরিয়ে নেন। অন্যান্য রুটেও একই পরিস্থিতি দেখা যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

রুট পারমিট ছাড়াই ঢাকায় চলছে বাস

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:১৭:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

রাজধানী ঢাকায় রুট পারমিট ছাড়াই চলাচল করছে গণপরিবহন। আর এই সংখ্য ১ হাজার ৬৪৬টি। কাগজে-কলমে ১২৮টি সচল রুটে ৭ হাজার ৯১টি বাস চলাচল করছে। এরমধ্যে তিন হাজার ৪২৭টি বাস নিজেদের রুটে চলাচল করে। দুই হাজার ১৮টি অন্য রুটের ও এক হাজার ৬৪৬টি বাস রুট পারমিট ছাড়াই চলাচল করছে। এছাড়া ৭ হাজার ৯১টি বাসের মধ্যে ৯৯২টির ফিটনেস নেই।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রিপোর্টার্স ফর রেল অ্যান্ড রোড সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানায় ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)।

ডিটিসিএ জানায়, ঢাকা শহরে তিন থেকে সাড়ে ৪ হাজারের মতো বাস চললেও কাগজ-কলমে ৭ হাজার ৯১টি বাসের নিবন্ধন রয়েছে। বর্তমানে ঢাকা মহানগরীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ৩৮৮টি রুটের অনুমোদন রয়েছে। এরমধ্যে দুটি রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে।

ডিটিসিএ আরও জানায়, গণ-পরিবহনের সমন্বিত ই-টিকেটিং ব্যবস্থা প্রবর্তন ও ভাড়া আদায়ের লক্ষ্যে ডিটিএসএ স্মার্ট কার্ড প্রচলন করা হয়েছে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) কারিগরি সহযোগিতায় স্বয়ংক্রিয় ভাড়া আদায় ব্যবস্থা প্রচলন ও ভাড়া আদায় পদ্ধতি সমন্বয় করার লক্ষ্যে ডিটিসিএতে ক্লিয়ারিং হাউজ স্থাপন করা হয়েছে।

এদিকে, পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি এম এ বাতেন বলেন, আরটিসি মিটিং হয় না বলেই  অনেক বাসমালিক তাদের নতুন নিয়ে আসা বাসগুলোর রুট পারমিট করাতে পারছে না। দীর্ঘদিন বাসগুলো বসিয়ে রাখতে তারা রাজি নন। তারা সড়কে বাসগুলো নামিয়ে দিয়েছে। তাতে দেখা যায়, একটি রুটে ২০টি বাস হলেই যেখানে যথেষ্ট, সেখানে ৪০-৫০টি বাস নামানো হয়েছে। যা সড়কে যানজটের অন্যতম কারণ।

এসব অবৈধ বাসের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে বিআরটিএ। শুধু ঢাকা নয়, খুলনা মহানগরীতেও চলছে অভিযান। বিআরটিএর এনফোর্সমেন্ট বিভাগের তথ্য বলছে, গত ১২ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকা ও খুলনায় বিআরটিএর এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা রুট পারমিট ভায়োলেশন, হাইড্রোলিক হর্ন বাজানো, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও ফিটনেস না থাকার অপরাধে ১৫৮টি মামলায় ২ লাখ ৫৭ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে। অভিযানে ২২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

এম এ বাতেন বলেন, নগরীর বাস রুট রেশনালাইজেশন প্রক্রিয়াকে এখন ঢেলে সাজাতে হবে। বিআরটিএকে তালিকা দিতে হবে যে নগরীর কোন বাসগুলোর ফিটনেস আর রুট পারমিট আছে। সেগুলো ঢাকায় চলতে পারবে। ২০ বছরের মেয়াদ ফুরানো বাসগুলো ইতোমধ্যে আমরা ঢাকার বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এখন যে বাসগুলোর ফিটনেস আছে সেগুলোকে নিয়ে সরকারি-বেসরকারি কোম্পানি গঠন করে বাস রুট পরিচালনা করতে হবে। যারা বাস দেবে না তারা ঢাকায় গাড়ি চালাতে পারবে না।

ঢাকার গণপরিবহনব্যবস্থাকে শৃঙ্খলায় আনতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি করে দিয়েছিল ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। তাতে বলা হয়েছিল, নগরীর ৪২টি রুটের প্রতিটিতে শুধু একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির বাস চলবে। রাজধানীর ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত ২১ নম্বর রুটে বাস চলাচলের মাধ্যমে বাস রুট রেশনালাইজেশনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

তবে দেখা যায়, ২১ নম্বর রুটে আরও অনেক বেসরকারি কোম্পানির বাস চলাচল করছে। এতে আর্থিক ক্ষতি হওয়ায় দুটি বেসরকারি বাস কোম্পানির মালিক তাদের সব বাস সরিয়ে নেন। অন্যান্য রুটেও একই পরিস্থিতি দেখা যায়।