শিশু মুনতাহাকে হত্যা করে গৃহশিক্ষক শামীমা!
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:৩০:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪ ১৭ বার পড়া হয়েছে
কানাইঘাটের বীরদল ভারারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিন। গত ৩ নভেম্বর থেকে সে নিখোঁজ ছিলো। রোববার (১০ নভেম্বর) ভোররাতে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় শনিবার (১০ নভেম্বর) রাতে শামীমা বেগমকে আটক করা হয়। এরপর শামীমার মা আলিফজান বেগম (৫৫), তাদের প্রতিবেশী ইসলাম উদ্দিন (৪০) ও নাজমা বেগমকে (৩৫) আটক করা হয়। মুনতাহা হত্যার ঘটনায় কোনো মামলা না হলেও নিখোঁজের ঘটনায় তার বাবা শামীম আহমদের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় এই চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এদিকে, পুলিশ সূত্র বলছে, প্রায় চার মাস আগে মুনতাহার গৃহশিক্ষক হিসেবে শামীমা পড়ানো শুরু করেন। তবে মুনতাহার পরিবারের সদস্যদের না জানিয়েই তিনি পড়াতে আসতেন না। পরে মুনতাহার পরিবার তাকে পড়াতে মানা করে দেয়। আর তাতে ক্ষুব্ধ হন শামীমা। এরমধ্যে মুনতাহাদের পরিবারে কিছু কাপড় হারানোর ঘটনা ঘটে। সেসব কাপড় শামীমাদের বাড়িতে পাওয়া যায়। চুরির অপবাদ দেওয়া হয় তাকে। এসব থেকে শিশু মুনতাহাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ তথ্য পেয়েছে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) সকালে সিলেটের সহকারী পুলিশ সুপার (কানাইঘাট সার্কেল) অলক কান্তি শর্মা বলেন, গ্রেপ্তার চারজন থানায় রয়েছে। তাদের সিলেটের আদালতে পাঠানো হবে। শামীমা হত্যার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে বিস্তারিত জানা যাবে।
গত ৩ নভেম্বর সকালে নিখোঁজ হয় কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদলের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে ৫ বছরের কণ্যা শিশু মুনতাহা। দিনভর অনেক খোঁজাখুজির পর মুনতাহা ফিরে না আসায় থানায় জিডি করে পরিবার।
নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর, রোববার ভোরে প্রতিবেশী আলিফজান বিবি মরদেহ ডোবা থেকে পুকুরে ফেলার সময় হাতেনাতে আটক করা হয় তাকে। এ ঘটনায় হতবাক এলাকার মানুষ। এ ঘটনার পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী আগুন দিয়েছে ঘাতক পরিবারের বাসায়।
মুনতাহা চাচা কয়সর আহমেদ জানান, মুনতাহার সাবেক গৃহশিক্ষিকা মার্জিয়া পুর্ব শত্রুতার জেরে অপহরণ করে হত্যা করে। পরে, বাড়ির পাশে ডোবায় কাঁদার নিচে পুঁতে রাখে। শনিবার (৯ নভেম্বর) রাত আনুমানিক ৩ টার দিকে মারজিয়ার মা আলিফজান বিবি সেই লাশ সরিয়ে নিতে গেলে জনতার হাতে আটক হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো রফিকুল ইসলাম জানান, মারজিয়ার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৩ নভেম্বর রাতেই মুনতাহাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর ডোবায় ফেলেরাখা হয়। মারজিয়াকে শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় ক্ষোভ থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে মারজিয়া, তার মা আলিফজান বিবিকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নিখোঁজের পর মুনতাহার ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আলোচিত নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি স্বজন ও এলাকাবাসীর।