গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে, পাসপোর্ট করছেন বাসায় থেকেই!
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৩১:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪ ২০ বার পড়া হয়েছে
গণ-আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মন্ত্রী ও এমপিদের লাল পাসপোর্ট বাতিল করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কার্যত পাসপোর্ট বাতিল হয়ে যায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও জাতীয় সংসদের পদত্যাগী স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রংপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্বর্ণশ্রমিক মুসলিম উদ্দিন (৩৮) নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলার আসামি শিরীন শারমিন চৌধুরী। গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে থাকা সাবেক এই স্পিকার গত ৩ অক্টোবর তার স্বামী সৈয়দ ইশতিয়াক হোসাইনসহ ঢাকার আগারগাঁওয়ে পাসপোর্ট অফিসে সাধারণ ই-পাসপোর্ট পেতে আবেদন করেন। গত ১০ অক্টোবর তাদের আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের ছবি দেওয়ার তারিখ ছিলো। যা তারা ঘরে বসেই দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অথচ, ই-পাসপোর্টের আবেদনের নিয়মাবলিতে বলা রয়েছে, সবকিছু ঘরে বসে করতে পারলেও নির্ধারিত তারিখে আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ দিতে আবেদনকারীকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে। শুধু অসুস্থ ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিরা পাসপোর্ট অফিসের বিশেষ সেবা মোবাইল টিমের মাধ্যমে ঘরে বসে বা হাসপাতালে থেকে এ সুবিধা নিতে পারবেন। যদিও আবেদন করার পর আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হলেও,সোমবার (৪ নভেম্বর) পর্যন্ত শিরীন দম্পতির পাসপোর্ট প্রস্তুত হয়নি।
তথ্যমতে, মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে পাসপোর্ট করছেন তারা। তা না হলে, হত্যা মামলায় আত্মগোপনে থাকা এ আসামি কীভাবে ঘরে বসে পাসপোর্ট করতে পারেন। তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে?
শিরীন শারমিন চৌধুরীর পাসপোর্টের আবেদন করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের উপপরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক নাগরিক পাসপোর্ট পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের আসলে কিছু করার নেই।
পাসপোর্টের আবেদনে শিরীন শারমিন ও তার স্বামী ইশতিয়াক হোসাইনের স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে রাজধানীর ধানমণ্ডির ১৬ নম্বর সড়কের একটি বাসার ৪-ই ফ্ল্যাট। গত রবিবার সেই বাসায় গিয়ে তাদের পাওয়া যায়নি। কথা হয় বাসাটির রক্ষণাবেক্ষণকারী মো. শাহাবুদ্দীনের সাথে। তিনি বলেন,শিরীন শারমিন ও সৈয়দ ইশতিয়াক হোসাইন এখানে এক দিনও আসতে দেখিনি। তারা এখানে থাকেন না।
আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় বাসায় বসে শিরীন শারমিন চৌধুরী পাসপোর্ট করতে পারেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন অনুবিভাগ) মো. ফিরোজ সরকার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শারীরিকভাবে অক্ষম ও ঘরের বাইরে বের হলে তার প্রাণ যাওয়ার হুমকি রয়েছে এরকম কিছু বিষয় ছাড়া কেউই ঘরে বসে পাসপোর্টের জন্য আঙুলের ছাপ দিতে পারে না।
শিরীন শারমিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া হত্যা মামলার তদন্ত করছে রংপুর মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কোতোয়ালি থানা পুলিশ।