ঢাকা ০৯:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাঠ্যবইয়ে ফিরছেন জিয়া-খালেদা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৩৩:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪ ৩৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পাঠ্যবইয়ের অতিরঞ্জিত ইতিহাস ও ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধে যার যেটুকু অবদান তা সঠিকভাবে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরের শাসনামলে পাঠ্যপুস্তক থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল সাবেক রাষ্ট্রপতি মেজর জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নাম। মুক্তিযুদ্ধ-ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখা অনেক বীরও ছিলেন অপাঙক্তেয়। এবার এসব নাম ফিরছে পাঠ্যবইয়ে। তবে খালেদা জিয়ার পাশাপাশি শেখ হাসিনা ও শিরীন শারমিন চৌধুরীসহ আরও কয়েকজন নারীর নামও থাকবে।

প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জন করা হচ্ছে। এসব বইয়ে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে যুক্ত হচ্ছে জিয়াউর রহমানের নাম। আর ‘রাজনীতিতে নারী’ শীর্ষক প্রবন্ধে যুক্ত হচ্ছে খালেদা জিয়ার নাম।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) একটি সূত্র জানিয়েছে, পাঠ্যবই থেকে কিছু প্রসঙ্গ বাদ দেয়া হয়েছে। সময় না থাকায় নতুন কোনো পাঠ যুক্ত করা হয়নি। তবে এরমধ্যে অতিরঞ্জিত ইতিহাস ও মৌলিক কিছু পাঠে পরিমার্জন আনা হয়েছে।

সূত্রমতে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রবন্ধগুলোয় পরিবর্তন আসছে। একাত্তরের ইতিহাসের নায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, তাজউদ্দিন আহমেদ, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর অবদান স্থান পেতে চলেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটির একজন সদস্য সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এক চোখে দেখা ইতিহাস আমরা রাখছি না। মুক্তিযুদ্ধে যার যতটুকু অবদান সেটা তুলে ধরা হবে। কোনো পক্ষের প্রতি আমাদের অনুকম্পা নেই। কারও প্রতি বিদ্বেষও নেই।

এদিকে, বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের গল্প-প্রবন্ধ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনসিটিবি। পাশাপাশি সম্পাদনায় যুক্ত হিসেবে বইয়ে থাকা তার নামও বাদ দেওয়া হবে। অপরদিকে একাদশ শ্রেণির বাংলা বইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘বায়ান্নের দিনগুলো’ বাদ দেয়া হয়েছে।

এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর চেয়ে অনেকের অবদান বেশি ছিল। এ গল্পে তাদের সেই অবদানের কথা বাদ পড়ছে। গল্পটি পড়লে শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে না। সেই বিবেচনায় লেখাটি বাদ দেয়া হয়েছে। সেখানে ভাষা আন্দোলন নিয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি গল্প যুক্ত হতে পারে।

তবে বঙ্গবন্ধুর লেখা গল্পটি বাদ গেলেও ইংরেজি বইয়ে তার ৭ মার্চের ভাষণ থাকছে। তবে তাতে অতিরঞ্জন কমানো হয়েছে। একই সঙ্গে যোগ করা হয়েছে মার্টিন লুথার কিং ও নেলসন মেন্ডেলার বিখ্যাত ভাষণ।

এছাড়া পাঠ্যবইয়ের পরিমার্জন ও সংশোধনে পেছনে থাকা শেখ হাসিনার ছবি এবং তার বাণী বাদ দেওয়া হচ্ছে। নতুন পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে থাকবে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ঘিরে শিক্ষার্থীদের আঁকা বিভিন্ন গ্রাফিতি। এসব পরিমার্জন ও সংশোধনের জন্য একটি সমন্বয় কমিটি করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান।

পাঠ্যবই পরিমার্জন সমন্বয় কমিটিতে যুক্ত থাকা শিক্ষা গবেষক রাখাল রাহা সংবাদমাধ্যমকে জানান, কিছু পাঠ বাদ দেয়া হয়েছে। নতুন করে তেমন কিছু যুক্ত করা হয়নি। আপাতত যেটুকু সম্ভব হয়েছে, করা হয়েছে। তবে ভালো মানের বই পেতে আরও দুই শিক্ষাবর্ষ অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

পাঠ্যবইয়ে ফিরছেন জিয়া-খালেদা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৩৩:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পাঠ্যবইয়ের অতিরঞ্জিত ইতিহাস ও ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধে যার যেটুকু অবদান তা সঠিকভাবে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরের শাসনামলে পাঠ্যপুস্তক থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল সাবেক রাষ্ট্রপতি মেজর জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নাম। মুক্তিযুদ্ধ-ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখা অনেক বীরও ছিলেন অপাঙক্তেয়। এবার এসব নাম ফিরছে পাঠ্যবইয়ে। তবে খালেদা জিয়ার পাশাপাশি শেখ হাসিনা ও শিরীন শারমিন চৌধুরীসহ আরও কয়েকজন নারীর নামও থাকবে।

প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জন করা হচ্ছে। এসব বইয়ে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে যুক্ত হচ্ছে জিয়াউর রহমানের নাম। আর ‘রাজনীতিতে নারী’ শীর্ষক প্রবন্ধে যুক্ত হচ্ছে খালেদা জিয়ার নাম।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) একটি সূত্র জানিয়েছে, পাঠ্যবই থেকে কিছু প্রসঙ্গ বাদ দেয়া হয়েছে। সময় না থাকায় নতুন কোনো পাঠ যুক্ত করা হয়নি। তবে এরমধ্যে অতিরঞ্জিত ইতিহাস ও মৌলিক কিছু পাঠে পরিমার্জন আনা হয়েছে।

সূত্রমতে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রবন্ধগুলোয় পরিবর্তন আসছে। একাত্তরের ইতিহাসের নায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, তাজউদ্দিন আহমেদ, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর অবদান স্থান পেতে চলেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটির একজন সদস্য সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এক চোখে দেখা ইতিহাস আমরা রাখছি না। মুক্তিযুদ্ধে যার যতটুকু অবদান সেটা তুলে ধরা হবে। কোনো পক্ষের প্রতি আমাদের অনুকম্পা নেই। কারও প্রতি বিদ্বেষও নেই।

এদিকে, বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের গল্প-প্রবন্ধ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনসিটিবি। পাশাপাশি সম্পাদনায় যুক্ত হিসেবে বইয়ে থাকা তার নামও বাদ দেওয়া হবে। অপরদিকে একাদশ শ্রেণির বাংলা বইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘বায়ান্নের দিনগুলো’ বাদ দেয়া হয়েছে।

এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর চেয়ে অনেকের অবদান বেশি ছিল। এ গল্পে তাদের সেই অবদানের কথা বাদ পড়ছে। গল্পটি পড়লে শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে না। সেই বিবেচনায় লেখাটি বাদ দেয়া হয়েছে। সেখানে ভাষা আন্দোলন নিয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি গল্প যুক্ত হতে পারে।

তবে বঙ্গবন্ধুর লেখা গল্পটি বাদ গেলেও ইংরেজি বইয়ে তার ৭ মার্চের ভাষণ থাকছে। তবে তাতে অতিরঞ্জন কমানো হয়েছে। একই সঙ্গে যোগ করা হয়েছে মার্টিন লুথার কিং ও নেলসন মেন্ডেলার বিখ্যাত ভাষণ।

এছাড়া পাঠ্যবইয়ের পরিমার্জন ও সংশোধনে পেছনে থাকা শেখ হাসিনার ছবি এবং তার বাণী বাদ দেওয়া হচ্ছে। নতুন পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে থাকবে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ঘিরে শিক্ষার্থীদের আঁকা বিভিন্ন গ্রাফিতি। এসব পরিমার্জন ও সংশোধনের জন্য একটি সমন্বয় কমিটি করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান।

পাঠ্যবই পরিমার্জন সমন্বয় কমিটিতে যুক্ত থাকা শিক্ষা গবেষক রাখাল রাহা সংবাদমাধ্যমকে জানান, কিছু পাঠ বাদ দেয়া হয়েছে। নতুন করে তেমন কিছু যুক্ত করা হয়নি। আপাতত যেটুকু সম্ভব হয়েছে, করা হয়েছে। তবে ভালো মানের বই পেতে আরও দুই শিক্ষাবর্ষ অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান তিনি।